ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধায় জনপ্রিয় আটার রুটির বাজার

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ৪ জানুয়ারি ২০২০

গাইবান্ধায় জনপ্রিয় আটার রুটির বাজার

গাইবান্ধা জেলা শহরের পুরনো বাজারের ভেতরে উত্তর পাশে গড়ে উঠেছে আটার রুটির বাজার। এখানে রয়েছে পাশাপাশি ছোট ছোট ঘরে ৭টি রুটির দোকান। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একনাগাড়ে চলতে থাকে এই দোকানগুলো। একটানা প্রায় ২০ ঘণ্টা গ্যাসের চুলায় গরম গরম রুটি ভেজে দেয়া হয় গ্রাহকদের। অপরিচ্ছন্ন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এ সব রুটির বাজার গড়ে উঠলেও প্রতিটি দোকানে প্রতিদিন রুটির প্রচুর বেচাকেনা চলে। এছাড়া এই রুটির ক্রেতাও শুধু দরিদ্র মানুষই নয়, সর্বশ্রেণীর পেশার মানুষরাই এখানে রুটি কিনতে আসে। বিশেষ করে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষরা দোকানের বেঞ্চে বসেই রুটি খেয়ে তাদের ক্ষুধা মেটায়। এছাড়াও উচ্চবিত্তের এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এখান থেকে কিনে নিয়েই বাড়িতে আহারপর্ব সারে। আবার অনেকেই ভোর ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে আর রাত ৯টা থেকে ১২টার পর এখানে এসে দোকানের পাশে দাঁড়িয়েই রুটি খেয়ে আহারপর্ব সারে। সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের পূর্বকোমরনই মিয়াপাড়া গ্রামের রুটি বিক্রেতা শফিকুল ইসলামের কর্মচারী আমির হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তার দোকানে প্রতিদিন ২০ ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি আটার রুটি বিক্রি হয়। একই গ্রামের ইকরামুল ও সিয়াম জানাল, তাদের দোকানে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কেজি আটার রুটি বিক্রি হয়। রুটি বিক্রেতা গোদারহাটের মন্টু মিয়া ও ধানঘড়া গ্রামের সাহারুলও জানালো একই কথা। ৭টি দোকানের বিক্রির গড় হিসাব করলে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ মণ আটার রুটি এখানে বেচাকেনা হয়। রুটি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রতিটি বড় রুটি ১০ টাকা এবং ছোট রুটি ৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়। আবার সরিষার তেলে ভাজা রুটি একই দামে পাওয়া যায়। রুটির সঙ্গে গুড় এবং সরিষার তেলে মাখা পিয়াজ ও কাঁচা মরিচ ফ্রিতে দেয়া হয়। এছাড়াও প্রতিটি রুটির দোকানে রুটির সঙ্গে দেয়া হয় ৫ টাকায় সরিষার তেলে ভাজা ঝাল আলু ছানা, ৫ টাকায় অ্যাংকর ডাল, ৫ টাকায় সবজি এবং ডিমের মামলেট দেয়া হয় ১৫ টাকায়। এই রুটির বাজারের চাহিদা ও সাফল্যে শহরের নতুন বাজার, হকার্স মার্কেট ও কাচারী বাজারেও গড়ে উঠেছে এমন নতুন নতুন রুটির দোকান। এ দোকানগুলোতেও বিক্রি কম নয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট ছোট দোকানে এই রুটি বিক্রি করেই প্রতিটি রুটি বিক্রেতা দরিদ্র অবস্থা থেকে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন এবং হয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। সেইসঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণী পেশা ও জনগোষ্ঠী সস্তায় দৈনিক আহার সম্পন্ন করার ব্যবস্থাও তারা করছেন এই রুটির ব্যবসা করেই। -আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা থেকে
×