ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ করে উত্থান চেষ্টা বর্তমান সময়ের বড় ব্যাধি ॥ পূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৩ জানুয়ারি ২০২০

 হঠাৎ করে উত্থান চেষ্টা বর্তমান সময়ের বড় ব্যাধি ॥  পূর্তমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, হঠাৎ করে উত্থানের চেষ্টা বর্তমান সময়ের বড় ব্যাধি। অনেকেই শর্টকাট উপায়ে এগোতে চায়। কেউ গ্রুপ অব কোম্পানিজের মালিক হতে চায়, কেউ কোটি টাকা আয় করতে চায়, আবার কেউ দ্রুততার সঙ্গে চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী হতে চায়। হঠাৎ বড় হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সম্পদ আহরণে সবাই ব্যস্ত। এ প্রবণতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তন করতে হবে। ঐকান্তিক ইচ্ছা, গভীর মনোনিবেশ, অধ্যাবসায় ও নিরলস প্রচেষ্টা থাকলে সাফল্য আসতে বাধ্য। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদফতর অডিটরিয়ামে জাইকা এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত সুশাসন ও উন্নয়ন শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং সভাপতিত্ব করেন জাইকা এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোজ্জাম্মেল হক খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার ও গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও জাইকা এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাইকা এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ এবং গণপূর্ত অধিদফতরের প্রকৌশলীগণ উপস্থিত ছিলেন। গণপূর্তমন্ত্রী আরও বলেন, চাকরিজীবী সবাই সততা অবলম্বন করছেন তা নয়, আবার সিস্টেম একেবাবে স্বচ্ছ তাও সঠিক নয়। টেন্ডার পদ্ধতি ও ঠিকাদারদের কাজের পদ্ধতির কারণে প্রকৌশলীরা ভয় পেয়ে ফাইলে হাত না দিলে উন্নয়ন আটকে যাবে। তাদের ভয় যুক্তিসঙ্গত। আমরা কাজের সিস্টেমকে এখনও আপডেট করতে পারিনি। কাজেই কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হবেই। তবে দেখা উচিত, এই বিচ্যুতি ইচ্ছাকৃত না প্রয়োজনের তাগিদে। এখন কাজের পদ্ধতি এমন যে, নিয়ম প্রতিপালনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সুযোগ না দিয়ে জোর করলে প্রকৌশলীদের কিছুই করার থাকে না। সিস্টেমের কারণে কাজে ব্যত্যয় ঘটলে সামান্য ত্রুটির জন্য প্রকৌশলীরা যদি হয়রানির শিকার হন, তাহলে তাদের কর্মোদ্যম ও মানসিকতা ভেঙ্গে যাবে। এ কারণে উন্নয়নের মহাসোপানে অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে। অহেতুক, তথ্যহীন সংবাদের ভিত্তিতে গণপূর্ত অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে হয়রানি না হন সে জন্য মন্ত্রী দুদক কমিশনারকে অনুরোধ জানান। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, কেউ অন্যায় ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে তাদের ছাড় দিতে রাজি না। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার যেন না হয়, সেটা দেখতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সকল সহযোগিতা করতে চাই। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। অভিযুক্তরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে। আত্মোপলব্ধি আর আত্মসমালোচনার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শুধু আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য নিজের হাতকে বিস্তার করতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য কিছু করার আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। আসুন সকলে মিলে দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। সুশাসন এবং উন্নয়নের জন্য সকলে মিলে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। তাহলে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বের বুকে আলোকোজ্জ্বল জায়গায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণপূর্ত সচিব শহীদ উল্লাহ খন্দকার বলেন, জনকল্যাণে সুশাসন রাষ্ট্র ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুশাসনের মধ্যে জবাবদিহি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গণপূর্ত অধিদফতর সবার আগে শতভাগ ই-জিপিতে টেন্ডার কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে নিশ্চিত হচ্ছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। এই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। নিজেদের মধ্যে আত্মশুদ্ধি থাকতে হবে।
×