ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী কেনু মিস্ত্রি আর নেই

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২ জানুয়ারি ২০২০

স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী কেনু মিস্ত্রি আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাডেমিক শিক্ষা ছিল না। তবে উদ্ভাবনী ক্ষমতা ছিল বিস্ময়কর। সেই ক্ষমতার গুণে স্বশিক্ষিত বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে সারা জীবন কাজ করে যাওয়া সেই কেনু মিস্ত্রি আর নেই। বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রুকনাকান্দা গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি (ইন্না... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বিজ্ঞান চর্চা ও এ সংক্রান্ত নানা কর্মকা-ে নিজেকে নিয়োজিত রাখা লেখক গবেষক আইয়ুব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা যায়, নিতান্তই নিরক্ষর এই কৃষিবিজ্ঞানীর পুরো নাম মোঃ আবদুল্লাহ আল পাঠান। পেশায় কাঠমিস্ত্রি বলে কেনু মিস্ত্রি নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। কৃষি সরঞ্জামাদির উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন স্বশিক্ষিত বিজ্ঞানী কেনু মিস্ত্রি নিজের আবিষ্কার দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। চল্লিশেরও অধিক সংখ্যক কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করেন তিনি। দেশীয় কাঁচামালে নির্মিত এইসব কৃষিযন্ত্র অত্যন্ত স্বল্পমূল্যের হওয়ায় দরিদ্র কৃষকদের ক্রয়সাধ্য হয়। তার উদ্ভাবিত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে নিড়ানী যন্ত্র, নাম দিয়েছেন সেনি উইডার, ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র, মাটি খননের আগর যন্ত্র, আঁচড় যন্ত্র, ভিন্ন ভিন্ন ফসলের জন্য চার ধরনের নিড়ানী যন্ত্র, সেচ যন্ত্র পাড়াকল, সোন ও জাতকন্দা, হওড়া ইত্যাদিসহ ৪৪টি কৃষি যন্ত্র। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ তাকে দু’বছরের ফেলোশিপ দিয়ে তার সকল সাশ্রয়ী ও কার্যকর যন্ত্রপাতিগুলো বানিয়ে নেয়। সেগুলো বিশ্বিবিদ্যালয়ের জাদুঘরে বর্তমানে সংরক্ষিত রয়েছে। জানা যায়, তার শেষ ইচ্ছা ছিল উদ্ভাবিত সকল কৃষি যন্ত্র দেশের দরিদ্র কৃষকদের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে যাবে এবং সকলে উপকৃত হবে। ইচ্ছা পূরণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল কাজ করলে তার মতো কেনু মিস্ত্রি আরও পাওয়া যাবে বলে মনে করেন আইয়ুব হোসেন।
×