ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে হাতাহাতি

মির্জা ফখরুলের মতে দেশের ৯০ ভাগ লোক এ সরকারকে চায় না

প্রকাশিত: ১১:০১, ২ জানুয়ারি ২০২০

মির্জা ফখরুলের মতে দেশের ৯০ ভাগ লোক এ সরকারকে চায় না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ এ সরকারকে আর চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে ছাত্রদলের সমাবেশে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনার পর দুপুর সোয়া ১২টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেটে ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ নিয়ে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেনি। ফখরুল বলেন, ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না তা প্রমাণ করতেই আমরা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। বর্তমান সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। ১০০ জন মানুষকে জিজ্ঞেস করলে ৯০ জনই বলবে এ সরকার চাই না। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ছাত্রদলের সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শুরুর এক ঘণ্টার মাথায় সংগঠনের পরস্পরবিরোধী গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে দুই দফা হাতাহাতি হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মূল গেটের সামনে ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটার পরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন দৌড়ে সরে যেতে থাকে। তবে ককটেল বিস্ফোরণে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণে কেউ আহত হয়নি। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও চিহ্নিত কিংবা আটক করতে পারেনি পুলিশ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকারের নেতারা লম্বা লম্বা কথা বলেন। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা তো জনগণের সরকার না। কারণ জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। তিনি বলেন, অনেকেই জানতে চায়, আমরা কেন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। ২০১৪ সালে যখন নির্বাচনে যাইনি তখন বলা হয়েছে আমরা ভুল করেছি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে গিয়েছিলাম এটা প্রমাণ করতে যে, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কেন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি যারা জানতে চায় আমি তাদের বলি আসলে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন কিছুতেই সম্ভব নয়, আবারও সেটা প্রমাণের জন্যই আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া শীতের মধ্যে অত্যন্ত কষ্টে আছেন। আমি মঙ্গলবার খবর পেয়েছি, হাসপাতালে তার জন্য একটি রুম হিটার দেয়ার জন্য নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার সেই হিটারটা ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। এটা সত্যিই অমানবিক ও দুঃখজনক। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনাদের ওই পুলিশ বাদ দিয়ে দেখুন মানুষ কী বলে। দেখুন দেয়ালে কি লেখা আছে। সৎ সাহস থাকলে অস্ত্র ও নিরাপত্তা বাহিনী বাদ দিয়ে রাস্তায় নামুন। দেখুন জনগণ কাদের সঙ্গে আছে। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলতে পারি জনগণ আপনাদের সঙ্গে নেই, আপনাদের ভালবাসে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ তখন ভোট দিতে পারেনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে দেখুন, তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ জনই বলবে ভোট দিতে পারেনি। জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তিনি বলেন, গুম-খুনের এই বাংলাদেশ আমরা চাইনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, তাবেদারি করার জন্য নয়, গণতন্ত্রহীনতা দেখার জন্য নয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা দুঃখ-কষ্টে আছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের বহু নেতাকর্মী মামলা-হামলার শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ছাত্রদল-যুবদলের অনেকে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে রিক্সা চালাচ্ছে। রাস্তায় বের হলে তাদের সঙ্গে দেখা হয়। তারা তাদের দুঃখের কথা আমাদের বলেন। সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২০২০ সাল যদি পরিবর্তনের বছর হয়, তাহলে ছাত্রদলকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই সাল যেন হয় খালেদা জিয়ার মুক্তির বছর হয়। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মুক্তির বছর। এই সাল যেন হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার বছর।
×