ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়র পদে ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১ জানুয়ারি ২০২০

মেয়র পদে ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জমার শেষ দিনে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনে নিজেদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দুপুরের পর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীরা একে একে নিজ নিজ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ সময় তারা স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পাশাপাশি জয়ী হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রার্থীদের কাছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়তা কামনা করেন। দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শেষ দিনে মেয়র পদে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের ৭ জন করে মোট ১৪ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য ৪৫৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৯৯ প্রার্থী। অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে কাউন্সিলর পদে ৩৭৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৯ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামীকাল এই মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। দুই সিটিতে সিটিতে নির্বাচনের জন্য মোট প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৩০ জন। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উত্তর সিটির মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে আবারও এই সিটির মেয়র হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বলেন, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। নির্বাচনে হার-জিত রয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের মাঝপথ থেকে সরে না যায়। দুইটার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা উত্তরের বিএনপি প্রার্থী তাবিথ এম আউয়াল। এ সময় তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে কিনা, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্দেহ শুধু আমাদের একার নয়, সাধারণ জনগণের অনেক প্রশ্ন আছে, তারা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা, তারা ভোট গণনা হবে কিনা। এ কথাগুলো ইসির কাছে তুলে ধরেছি। বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন এই সিটির আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যদি ঢাকাবাসী আমাকে জয়ী করেন, সেবা করার সুযোগ দেন, ঢাকাবাসীর মৌলিক নাগরিক সুবিধাগুলো নিশ্চিত করাই আমার প্রধান কাজ হবে। বেলা পৌনে তিনটায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর ঢাকা দক্ষিণের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, নির্বাচনে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। পরিবেশ নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। আরও কিছুদিন পার হলে বলা যাবে। তখন আপনারাও দেখতে পাবেন। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হাজি সাইফুদ্দিন মিলন সাংবাদিকদের বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সাফল্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ইভিএম পৃথিবীর অনেক দেশেই সফলতা পায়নি। এই নির্বাচনেও সফল হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। এদিকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা শেষে এখন বাছাইয়ের অপেক্ষা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হবে তারা ইচ্ছে করলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আপীল করতে পারবেন। এজন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে কমিশনের আপীল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তবে আপীল বোর্ড মনোনয়ন বাতিল করলে শেষ আশ্রয় হিসেবে প্রার্থীরা আদালতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। আদালতই রায়ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। আদালত বাতিল করলে তিনি আর প্রার্থী হতে পারবেন না। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়বেন। ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী মঙ্গলবারই ছিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীসহ অধিকাংশ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র জমার সময় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে মনোনয়নপত্র জমার সময় কেউ যাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারেন সেদিকে কঠোর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়। ফলে প্রার্থীরা গুটি কয়েক সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। আইন অনুযায়ী কোন প্রার্থীর পক্ষে মিছিল বা শোডাউন নিষিদ্ধ হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে প্রার্থীদের অনেক কর্মী সমর্থককে জড়ো হতে দেখা গেছে। এ সময় তারা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে স্লোগানও দেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের পাশে নির্বাচন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবস্থিত উত্তরের কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেমের হাতে মনোনয়নপত্র জমা দেন। নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন উত্তরের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোঃ আতিকুল ইসলাম। তিনি এ বছর উপনির্বাচনে এই সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। দল থেকে আবারও তাকে মনোনয়ন দেয়ায় সোমবার মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। নির্বাচনে হার-জিত আছে। কেউ যেন মাঝপথে নির্বাচন বর্জন না করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে কেউ হারবে, কেউ জিতবে, এটাই বাস্তবতা। আগে বিজিএমইএ নির্বাচন করেছি। কিন্তু মাঝপথে গিয়ে ইলেকশন বর্জন করি নাই। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে বলেন, আমরা কোন শোডাউন করে আসিনি। বাইরে যখন তা দেখেছি, সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া এখানে অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীও এসেছেন। তাদের মধ্যেই আমাকে মনোননয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে। জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জনগণের ভোটেই আমরা জিতব। নৌকার কোন ব্যাক-গিয়ার নাই। এগিয়ে চলবে। আমার বিশ্বাস নির্বাচনে জয়ী হবো। আতিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসলে তাকে ঘিরে ধরেন কয়েকশ’ কর্মী-সমর্থক। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে আচরণবিধি ভঙ্গ করে ৫ জনের বেশি ব্যক্তি নিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। নির্বাচন কমিশনের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আতিকুল বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আমরা পাঁচজনই এসেছি। বাইরে কোন শোভাযাত্রা হয়নি। স্লোগান যখন হয়েছে, তখন বন্ধ করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিভিন্ন কাউন্সিলর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছেন। তাই ভিড় হতে পারে। এদিকে দুইটার দিকে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। সঙ্গে ছিলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। পরে সাংবাদিকদের তাবিথ বলেন, একটা বিতর্কিত নির্বাচন অতীতে হয়েছে। আর বিতর্ক না বাড়িয়ে ইভিএমে নির্বাচন করা যাবে না। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। অনেক অপরিষ্কার জায়গা আছে। যেখানে প্রযুক্তি এবং ক্রয় তথ্য নিয়েও প্রশ্ন আছে। আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে কিনা, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্দেহ শুধু আমাদের একার নয়, সাধারণ জনগণের অনেক প্রশ্ন আছে, তারা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কিনা, তারা ভোট গণনা হবে কিনা। এ কথাগুলো ইসির কাছে তুলে ধরেছি। নির্বাচনে যত সমস্যাই আসুক, সব অতিক্রম করার চেষ্টা করব। শেষ পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব। তার মানে এই নয়, যে ভুলগুলো হতে যাচ্ছে, সেগুলো আগে থেকে মেনে নেব বা জনগণকেও মানতে দেব। নির্বাচন যদিও সুষ্ঠু হবে না। গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। গত নির্বাচনে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেখানে একটা প্রতিবাদ ছিল। নির্বাচনটাকে আমরা বয়কট করেছিলাম, এটা ইলেকশনের দিন। আমরা চেষ্টা করেছিলাম একদম শেষ পর্যন্ত থাকতে। তবে শেষ পর্যন্ত এই ইলেকশনে থাকব এবং শেষটা দেখেই ছাড়ব উল্লেখ করেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় তাবিথের ১০ থেকে ১২ জন সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। আচরণবিধি অনুযায়ী ৫ জনের বেশি কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় যেতে পারেন না। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, অনেক সাংবাদিক ছিলেন। সবাইকে চেনা যায় না। তবে তিনি বিএনপি প্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তাঁর সঙ্গে কতজন আছেন। তিনি বলেছেন, ৫ জন নিয়েই তিনি এসেছেন। বেলা সোয়া ১২টায় দিকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে রাজধানীর গোপীবাগের অবস্থিত ঢাকা দক্ষিণের কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন দক্ষিণের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এ সময় তার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবুল আলম হানিফ, সানজিদা খানম, বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ। এছাড়া তার সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী ছিল বলে জানা গেছে। পরে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তাপস বলেন, আগামী বছর থেকেই ঢাকা দক্ষিণে পরিবর্তনের সূচনা ঘটবে। এ নগরীতে অনেক কাজ বা নাগরিক পরিষেবা বাকি আছে। নির্বাচিত হলে নাগরিকদের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে। ক্রমান্বয়ে নগরের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে একটি বাসযোগ্য শহর গড়ে তোলা হবে। মেয়র সাঈদ খোকনের সমর্থন পাবেন কি না, এ বিষয়ে তাপস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বৃহত্তর সংগঠন। এই সংগঠনের বাইরে আমরা কেউ নই। আমি সবাইকে নিয়েই নির্বাচনের কাজ করব। পাশাপাশি সুশীল সমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করব। আচরণবিধি লঙ্ঘন সম্পর্কে তিনি বলেন নির্দিষ্টসংখ্যক লোক নিয়েই কার্যালয়ে ঢুকেছি। কিন্তু কার্যালয়ের ভেতরে অন্যান্য কাউন্সিল প্রার্থী ছিলেন। তাঁদের জন্যই লোক বেড়েছে। ঢাকাবাসীর পক্ষে সকল সুশীল সমাজ, ঢাকা নিয়ে যারা চিন্তা করেন, নাগরিক সুবিধা নিয়ে যারা চিন্তা করেন, আপামর জনগণ- সবাইকে আহ্বান জানাব এই সুযোগটাই কাজে লাগাবেন। পরীক্ষা করে দেখবেন। সেবক হিসেবে নির্বাচিত হলে প্রত্যেকটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করব। ভোটাররা আমাকে ভালবাসা দিয়ে আলিঙ্গন করে রেখেছেন। সুযোগ পেয়েছি তাদের সেবা করার। তারাসহ ঢাকাবাসীর সেবা করার সুযোগ চেয়েই মেয়র পদে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আশা করি আমার দক্ষতা, যোগ্যতা, পূর্বের অভিজ্ঞতা ও কাজকে বিচার বিশ্লেষণ করেই লোকজন আমাকে সুযোগ দিবেন। বেলা পৌনে তিনটায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন। তার সঙ্গে এসেছিলেন মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস, ঢাকার সাবেক ডেপুটি মেয়র আবদুস সালাম এবং তার ভাই। মনোনয়নপত্র জমা শেষে সাংবাদিকদের এই নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ক্রান্তিকাল চলছে, কোন গণতন্ত্র নেই, ভোটের অধিকার নেই। এজন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সবাইকে নিয়ে আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করব। নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। আরও কিছুদিন পার হলে বলা যাবে। তখন আপনারাও দেখতে পাবেন। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে এটি দ্বিতীয় সুযোগ। গত নির্বাচন কেমন হয়েছে তা সবাই দেখেছে। তারপরও তাদের কাছে কি ধরনের আস্থা থাকতে পারে প্রার্থী হিসেবে এ প্রশ্ন আমি জাতির কাছে রাখতে চাই। যেহেতু আরও একটা সুযোগ এসেছে তাদের ভুল সংশোধনের, আমি চাইব তারা সেটা করবেন। এ সময় তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান। এদিকে ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিল মনোনয়নপত্র জমা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সাফল্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, ইভিএম অনেক দেশেই সফলতা পায়নি। এই নির্বাচনেও সফল হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, একজন রাজনীতিবিদের জন্য সবচেয়ে বড় অপমানজনক ও লজ্জার বিষয় হচ্ছে, মাঠে নামার পর দল থেকে বসিয়ে দেয়া। এটা মৃত্যুর সমান। গত নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে ছিলাম। সকাল ৯টায় আমি যখন নির্বাচনের কেন্দ্রে গিয়ে দেখলাম স্বাভাবিক নির্বাচন হচ্ছে না, তখন আমি বলেছিলাম, নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। কেন্দ্র দখল হয়ে গেছে। জাপার এই মেয়র প্রার্থী আরও বলেন, আমরা মহাজোটের একটি অংশ। বাংলাদেশের রাজনীতির মঞ্চে আমরা তৃতীয় শক্তি। দীর্ঘ ৪০ বছর ঢাকার রাজনীতিতে আমার অবস্থান। গতবার যেভাবে মানুষের সাড়া পেয়েছিলাম, তাতে আশা করেছিলাম আমি বিজয় লাভ করব। কিন্তু সকাল ৯টাতেই নির্বাচন শেষ হয়ে যায়। ভোটাররা বিমুখ হয়েছে, যার কারণে তারা কেন্দ্রে যাননি। মিলনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিএম কামরুল ইসলাম তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মেয়র প্রার্থী ডাঃ আহাম্মদ সাজেদুল হক (রুবেল)। মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। আরও উপস্থিত ছিলেন লুনা নূর, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, নিমাই গাঙ্গুলী, আলী কায়সার মামুন, রাসেল ইসলাম সুজন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর ডাঃ আহাম্মদ সাজেদুল হক (রুবেল) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ক্ষমতাসীনরা যাতে জাতীয় নির্বাচনের মতো ভোট ডাকাতি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার লড়াই গড়ে তোলার জন্য আমরা এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আমরা গরিববান্ধব-পরিবেশবান্ধব স্মার্ট ঢাকা সিটি গড়ে তোলার সংগ্রামকে বেগবান করতে চাই।
×