ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে পাশে চায় আইসিবি

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১ জানুয়ারি ২০২০

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে পাশে চায় আইসিবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পুঁজিবাজারের প্রতিষ্ঠান আইসিবি। বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতিতে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, সাধারণ বীমার মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক-বীমাগুলোকে পাশে চাইছে আইসিবি। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে, তাদের মতো রাষ্ট্রের বড় বড় ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজার থেকে সময় সময় শেয়ার কিনে দরপতন ঠেকাতে পারে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রস্তাবে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাজারে মার্কেট মেকারের অনুপস্থিতি ও বর্তমানে বাজার মূলধন বিশাল হওয়ায় এককভাবে আইসিবির পক্ষে বাজারকে স্থিতিশীল রাখা বাস্তবসম্মত নয়। আইসিবির পাশাপাশি অন্যান্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যেমন- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, বিডিবিএল, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এবং জীবন বীমা কর্পোরেশনও সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার কিনে বাজারকে গতিশীল করতে পারে। গত ৯ ডিসেম্বর আইসিবির প্ল্যানিং এ্যান্ড রিসার্চ ডিভিশন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ‘পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার স্বার্থে আইসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি ও স্বল্প সুদে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন সংক্রান্ত এই প্রস্তাবটি পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, সময় সময় শেয়ার কিনে বাজারের দরপতন ঠেকাতে কাজ করছে আইসিবি। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে গঠিত তহবিল থেকে এসব শেয়ার কেনা হচ্ছে। আবার ধারাবাহিকভাবে বাজারের দরপতনের কারণে আইসিবি যে শেয়ার কিনেছে চাইলেও তা বিক্রি করতে পারছে না। উপরন্তু কেনা শেয়ারের দামও কমে যাচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানের মূলধনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক-বীমাগুলোও যদি পুঁজিবাজারে শেয়ার কিনে তবে বাজার গতিশীল হতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি ও সিইও প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, পুঁজিবাজার সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকগুলো শেয়ার কিনে থাকে। এ ধরনের নজির রয়েছে। আমি যখন এমডি ছিলাম তখনও শেয়ার কিনেছি। তবে শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থাটি সাময়িকভাবে কাজ করলেও এটি দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর নয় বলে মনে করেন দেশের বৃহত্তম ব্যাংকের সাবেক এই প্রধান নির্বাহী। তিনি বলেন, অনেক সময় পুঁজিবাজারকে তুলতে সরকারের মৌখিক নির্দেশনায় আমরা শেয়ার কিনেছি। এগুলো এখনও হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমা শিথিল করে এই সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে বাজারকে স্থিতিশীল করতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং আইসিবিকে আরও গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশেষ করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান যেগুলোতে সরকারী শেয়ার রয়েছে সেগুলোকে পুঁজিবাজারে আনলে বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরে আসতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, সরকারের শেয়ার রয়েছে এমন লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে সময় সময় সভাও হয়েছে, অগ্রগতি খুব সামান্যই। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের ২৫টি কোম্পানির তালিকা করে সেগুলোকে বেশ কয়েকবার সময়সীমা বেঁধে দিলেও তাদের পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হয়নি।
×