ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা সিটি নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১ জানুয়ারি ২০২০

ঢাকা সিটি নির্বাচন

নির্বাচন মানেই উৎসব। সচেতন নাগরিক হিসেবে ভোটাধিকার প্রয়োগে ভিন্ন ধরনের আনন্দ ও গৌরব বোধ করেন মানুষ। যথাসময়ে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেÑ এটা ঢাকাবাসীর জন্য আনন্দ সংবাদ। ভোট মানে রাজনৈতিক উত্তাপ, চায়ের কাপে ঝড়। এবার প্রার্থী মনোনয়নের আগে থেকেই শুরু হয়েছে উত্তাপ। ঢাকায় প্রচ- শীতের মধ্যেও এই ভিন্নধর্মী উত্তাপ-উত্তেজনা এবং চায়ের কাপে ঝড় তোলা চলছে নিত্য। মঙ্গলবার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার ছিল শেষ দিন। এবার দুই সিটিতে নির্বাচনের জন্য ২ হাজারের বেশি প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে সাত জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৫৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৬৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। অপর দিকে ঢাকা দক্ষিণে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে চারজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৯৫ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৮০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এবার ভোটযুদ্ধ জমবে বলেই নগরবাসীর বিশ্বাস। কেননা এবার বড় সব দলই ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার জন্য নিঃসন্দেহে সুসংবাদ। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দল দেখে প্রার্থীদের প্রতি আচরণ করা যাবে না। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হচ্ছে। এটিও নতুন ও কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়। ইভিএমের ওপরে কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন। নির্বাচনেও ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটছেÑ এটি আশার কথা অবশ্যই। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে, এটা স্বস্তির বিষয়। যে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব থেকে কার্যকর রক্ষাকবচ। সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন অবাধ, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে- এটিই নগরবাসীর প্রত্যাশা। সিইসি জানিয়েছেন, এবারের সিটি নির্বাচনে সব কেন্দ্র ও বুথে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ ও বিজিবি। সেনাবাহিনী থাকবে না। তবে ইভিএম পরিচালনায় কারিগরি সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে দু’জন সেনা সদস্য থাকবেন। ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন। নির্বাচন নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। কমিশন বলেছে, রাতে যাতে ভোটচুরি না হয়, সে জন্য ভোটের সময়ে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, বিশেষ করে ইভিএম ব্যবহারের কথা ভেবে। সম্প্রতি কয়েকটি নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, এর আগে এত বড় পরিসরের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়নি। একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তারা সফল হবেন বলেই আশা করছেন। আমাদেরও প্রত্যাশা, ইভিএম-এর সফল ব্যবহার হোক, নির্বাচন সব দিক থেকে সুন্দর ও সুষ্ঠু হোক। সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন এ প্রথা মেনেই তফসিল ঘোষণা করেছে। আমরা আশা করি, অংশগ্রহণকারী সব দল-মতের প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠু নির্বাচনসংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন। নগরবাসীও নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করে বেছে নেবেন তাদের কাক্সিক্ষত মেয়র ও কাউন্সিলরদের।
×