ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভিএআরের আশীর্বাদে জয় লিভারপুলের

প্রকাশিত: ১২:০৩, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

ভিএআরের আশীর্বাদে জয় লিভারপুলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জয় দিয়ে ২০১৯ সাল শেষ করেছে ইংলিশ ফুটবলের তিন পরাশক্তি লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসি। রবিবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে বছরের নিজ নিজ ম্যাচে জয় পেয়েছে দলগুলো। তবে জয় পেতে ভিএআর প্রযুক্তির আশীর্বাদ পেয়েছে লিভারপুল ও সিটি। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে এগিয়ে যেয়েও শেষদিকে পাঁচ মিনিটের ঝড়ে চেলসির কাছে ২-১ গোলে হেরেছে স্বাগতিক আর্সেনাল। ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে ওলভারহ্যাম্পটনের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। অবশ্য বছর শেষে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১৩ পয়েন্টের লিড ধরে রাখার জন্য জার্গেন ক্লপের দলকে ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হয়েছে। এই নিয়ে লীগে ঘরের মাঠে টানা ৫০ ম্যাচ অপরাজিত থাকল লিভারপুল। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি ২-০ গোলে হারিয়েছে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে। সিটির হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে গোল দুটি করেন সার্জিও এ্যাগুয়েরো ও কেভিন ডি ব্রুইন। বর্তমানে ১৯ ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার দৌড়ে সবার উপরে আছে লিভারপুল। আর ২০টি করে ম্যাচ শেষে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে লিচেস্টার সিটি দুইয়ে, ৪১ পয়েন্ট নিয়ে সিটি তিনে ও ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি আছে চারে। অব্যাহত ব্যর্থতার মাঝে থাক আর্সেনাল মাত্র ২৪ পয়েন্ট নিয়ে ২০ দলের মধ্যে আছে ১২তম স্থানে। তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ হলেও ওলভারহ্যাম্পটনকে হারাতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে লিভারপুলকে। অনেকটা ভাগ্যের সহায়তায় জিতেছে তারা। বিতর্কিত ম্যাচটিতে ৪২ মিনিটে লিভারপুলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন সেনেগালের স্ট্রাইকার সাডিও মানে। গোলটি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। প্রথমে এ্যাডাম লালানার হ্যান্ডবলের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভিএআর প্রযুতিতে রফারি এ্যান্থনী টেইলর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গোল দেন। এই গোলের পরপরই পেড্রো নিয়েটোর লো শটে এ্যালিসন বেকার পরাস্ত হলে সমতায় ফেরার সুযোগ আসে ওলভারহ্যাম্পটনের। কিন্তু এবারও ভিএআর আশীর্বাদ হয়ে আসে দ্য রেডসদের জন্য। প্রযুক্তির কল্যাণে নিজেদের বাতিল হওয়া গোল পায় দলটি। আবার নিজেরা গোল হজম করলে সেই গোলটি অপসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচ শেষে লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, এভাবে এত ম্যাচ একবারে জেতা যদি সহজ হতো তবে অনেক দলই সেটা করে দেখাত। কাজটা মোটেই সহজ নয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার ওপর আস্থা রাখতে হয়। অনেক দিনই আমাদের সামনে কঠিন সময় এসেছে। কিন্তু ছেলেরা শেষ পর্যন্ত তা করে দেখিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই আমি তাদের নিয়ে গর্বিত। অন্যদিকে ওলভারহ্যাম্পন অধিনায়ক কনর কোয়াডি বলেন, আমরা সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যের শিকার। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অনেকেই হয়ত এটাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলবে। কিন্তু আমার পুরো দল এটাকে সঠিক বলতে নারাজ। আমার কাছে এই প্রযুক্তির কোন অর্থ নেই। সিটি-শেফিল্ড ম্যাচেও ভিএআর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ম্যাচে ঘরের মাঠে সিটিজেনরা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। বিরতির ঠিক আগে অফসাইডের কারণে শেফিল্ডের একটি গোল বাতিল করা হয়। ভিএআর প্রযুক্তিতে গোলটি বাতিল করা হয়। ফরাসী স্ট্রাইকার লিস মৌসেটের এই গোলের পর আরেকটি সুযোগও হাতছাড়া হয়। গোলরক্ষক ক্লডিও ব্রাভোকে একা পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি মৌসেট। বিরতির পর ডি ব্রুইনের বাড়ানো বলে এ্যাগুয়েরো গোল করে সিটিকে এগিয়ে দেন। ৮২ মিনিটে পেপ গার্ডিওলার দলের জয় নিশ্চিত করেন ডি ব্রুইনে গোল করে। এমিরেটস স্টেডিয়ামে চেলসি-আর্সেনাল ম্যাচ ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। ম্যাচের ১৩ মিনিটে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংয়ের গোলে অক্টোবরের পর প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল আর্সেনাল। মৌসুমে এটি ছিল গানার্সদের অন্যতম সেরা শুরু। তিনজন ভিন্ন কোচের অধীনে আরও একবার রক্ষণভাগের দুর্বলতার কারণে সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি গানার্সরা। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ম্যাসন মাউন্টের ফ্রিকিক থেকে বদলি খেলোয়াড় জর্জিনহো গোলরক্ষক বার্নাড লেনোকে পরাস্ত করে চেলসিকে সমতায় ফেরান। আর ৮৭ মিনিটে কাউন্টার এ্যাটাকে উইলিয়ানের ক্রস থেকে টামি আব্রাহাম চেলসির জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচ শেষে চেলসি কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড বলেন, ৩০ মিনিট পর্যন্ত আমরা কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম, নার্ভাসও ছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধটা কৌশল ছাড়া আর কিছুই ছিল না। গতি আর লক্ষ্য দিয়েই আমরা ম্যাচ শেষ করেছি।
×