ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের দারিদ্র্য বিমোচন করাই আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ১০:০৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

 দেশের দারিদ্র্য বিমোচন করাই আমাদের  সামনে বড় চ্যালেঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের জন্য দারিদ্র্য বিমোচন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেও তা ধরে রাখা, আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে দারিদ্র্য সীমার বাইরে নিয়ে আসাই এখন সরকারের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সরকারের সক্ষমতা এবং ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন-চীনের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ চীন সিল্করোড ফোরামের উদ্যোগে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। মূল্য বক্তব্য উপস্থাপন করেন চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ। দারিদ্র্য নিয়ে চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন যাবত শাসিত ও শোষিত অবস্থায় ছিল। তবে আমাদের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ। মোটা দাগে এ কথা ঠিক, দারিদ্র্য বিমোচন করাই আমাদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণবাদে বিশ্বাস করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি উন্নয়নের সুফল গ্রামেও পৌঁছে দিচ্ছেন। আমাদের এখন প্রতি পাঁচজনে একজন দরিদ্র। চেষ্টা করছি, আগামী পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে গরিব মানুষের সংখ্যা কমিয়ে প্রতি দশজনে একজনে নামিয়ে আনতে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ২০ শতাংশ মানুষ গরিব। আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে আমরা দারিদ্র্য ১০ শতাংশে নিয়ে আসতে চাই। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, তাদের দুপুরে টিফিনের ব্যবস্থা করেছি। এগুলো অর্থনীতিতে ভাল প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, গ্রাম ও শহরের বৈষম্য চিরায়ত। গ্রামের উন্নয়নের দিকে সরকারের নজর আছে। এজন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। চীন থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চীনকে নকল করে নয়, বরং তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারি। চীন তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে অর্থনীতির মেরুদন্ড গড়েছে। আমার মনে হয়, আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সেদিকে নিচ্ছি। তাদের থেকে শিখে বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন করছি। এজন্য কিছুটা হলেও আমাদের দারিদ্র্য কমেছে, সবাইকে এ কথা স্বীকার করতেই হবে। চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আপনারা যদি চীনের উন্নয়নের দিকে তাকান তাহলে চারটি দিক দেখতে পাবেন। প্রথমত, লিডারশিপ বা নেতৃত্ব। কমিউনিস্ট পার্টি চীনের (সিপিসি) নেতৃত্বে আজ আমরা এ অবস্থানে এসেছি। দ্বিতীয়ত, জনগণের প্রতি সরকারের গুরুত্ব। জনগণ একটি জাতির মেরুদন্ড। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা আমাদের সর্বোচ্চ এজেন্ডা, যা আমরা করে আসছি। তৃতীয়ত, প্রশাসনে দুর্নীতি বা স্বচ্ছতার অভাব। চতুর্থত দিক হচ্ছে, একে অপরের প্রতি সহযোগিতা। আমরা নিজেরা নিজেদের প্রতি যেমন সহায়ক তেমনি বহির্বিশ্বের প্রতিও আমরা আমাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। আশা করি এ বন্ধন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। কলামিস্ট সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, কনফুসিয়াসের সময় থেকেই চীন বিশ্বের কাছে বিশাল বিস্ময়। তবে চীন কখনও বসে থাকেনি। নিজেদের শাসন ব্যবস্থাকে বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা জ্ঞানী জাতি। তাদের জ্ঞান পৃথিবী গ্রহণ করেছে। তাদের কাছ থেকে আমরা কিভাবে শিখতে পারি সেটি ভাবতে হবে। সিপিবি মহাসচিব ও বাংলাদেশ চীন সিল্করোড ফোরামের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, বিএনপি নেতা ড. মঈন খানসহ অন্যরা।
×