শীতে প্রকৃতি ভিন্ন রূপ ধারণ করে। শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের ত্বক এবং চুলে পড়ে। যার ফলাফল শুষ্ক ত্বক, রুক্ষ চুল, ফাটা ঠোঁট ইত্যাদি। এইসব সমস্যা অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। তাই চলুন জেনে নিই কিছু টিপস।
ত্বকের যত্ন
শীতে আপনার পরম বন্ধু হলো ময়েশ্চারাইজার। প্রতিদিন গোসলের পরে এবং রাতে ঘুমানোর আগে একটি ভাল ময়েশ্চারাইজার লাগান। তবে বডি ময়েশ্চারাইজার শুধু শরীরেই ব্যবহার করুন। মুখের জন্য ব্যবহার করুন আলাদা ফেস ময়েশ্চারাইজার। কারণ আমাদের ফেস এবং বডির ত্বক এক নয়। শীতকালে অয়েল বেইজ ময়েশ্চারাইজার ভাল কাজে দেয়।
শীতকালে মুখ ও শরীরে মরা চামড়া অনেক বেশি উঠতে দেখা যায়। এর থেকে মুক্তি পেতে স্ক্রাবিং করে নিতে পারেন। বাজারে অনেক ধরনের স্ক্রাবার পাওয়া যায়। সপ্তাহে ২-৩ দিন স্ক্রাবিং করে নিন। বাসায় ও বানিয়ে নিতে পারেন স্ক্রাবার। এ জন্য, চালের গুঁড়া, এক চিমটি হলুদ, কাঁচা দুধ, মধু মিশিয়ে বানিয়ে নিন স্ক্রাবার।
গোসলের সময় পানিতে মিশিয়ে নিতে পারেন এসেনশিয়াল অয়েল। এতে আপনার ত্বকে একটি ময়েশ্চারাইজারের স্তর তৈরি হয়।
শীতকালে রোদ কম থাকলেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। কারণ শীতের এই হালকা রোদও আপনার স্কিনের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারবে। তাই বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাবেন।
রাতে মোজা পরে ঘুমাতে যাবেন। এতে কিছুটা হলেও পা ফাটা থেকে মুক্তি মিলবে। শীতে পা ফেটে গেলে ভেসলিন, অলিভ অয়েল মিক্স করে পায়ে লাগান।
চুলের যত্ন
শীতকালে যে সমস্যায় সবাই বেশি ভোগে, তা হলো খুশকি। অনেকেরই অন্যান্য সিজনে খুশকি দেখা না গেলেও শীতে ঠিকই দেখা যায়। এজন্য শীত শুরু হওয়ার আগে থেকেই অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা শুরু করে দিতে হবে। এছাড়া খুশকির জন্য হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য, মেথি পাউডার, টক দই, মধু, লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
সপ্তাহে ২ দিন চুলে তেল ম্যাসাজ করুন। এ ক্ষেত্রে নারিকেল তেল, জলপাই তেল, বাদাম তেল একসঙ্গে মিশিয়ে একটু গরম করে নিন। এরপর মাথার ত্বকে এবং পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। তেল চুলে ময়েশ্চার ধরে রাখে।
শীতে ঘন ঘন চুল শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়।
শীতে গোসলে আমরা গরম পানি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মাথার ত্বকে সরাসরি গরম পানি ব্যবহার করা যাবে না। এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। তাই মাথার ত্বকে হালকা গরম পানি ব্যবহার করবেন।
চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রাইয়ার ব্যবহার কম করাই ভাল। চুল নরমাল ভাবেই শুকাতে দিন।
ঠোঁটের যত্ন
শীতকালে ঠোঁটের যত্নের কথা ভুললে চলবে না। শীতে ঠোঁট ফাটা একটি বড় সমস্যা। তাই শীত শুরুর আগে থেকেই প্রতি রাতে লিপবাম লাগিয়ে ঘুমান। এছাড়া একটি লিপবাম সমসময় সঙ্গে রাখবেন। যখনই প্রয়োজন হবে তখনই যাতে ব্যবহার করতে পারেন।
ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করার জন্য সপ্তাহে ২-৩ বার লিপ স্ক্রাব করে নিবেন। এজন্য চিনি, মধু, লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে ঠোঁটে স্ক্রাব করে নিন।
এছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে ঘি ঘষে নিতে পারেন। এতে ঠোঁট নরম হবে এবং ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তি মিলবে।
এসব ছাড়াও শীতকালে প্রচুর শাকসবজি ও পানি পান করতে হবে।
ছবি : নাঈম ইসলাম
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: