ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে হবে ॥ গণপূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:১৮, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে হবে ॥ গণপূর্তমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে না পারলে সভ্যতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই জাতিকে এ অবক্ষয় থেকে ফিরিয়ে আনতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে সরকারী তিতুমীর কলেজের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোকিত ৫০ বছর শিরোনামে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরকারী তিতুমীর কলেজের পঞ্চাশ বছর উদ্যাপন উৎসবের আহ্বায়ক ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বীরপ্রতীক, প্রাক্তন ভিপি মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য, কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আশরাফ হোসেন, উপাধ্যক্ষ ড. আবেদা সুলতানা প্রমুখ। পূর্তমন্ত্রী বলেন, বৈষয়িক উন্নয়ন বাংলাদেশে অনেক হয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এসেছে অনেকটাই। কিন্তু নৈতিকতা ও মূল্যবোধের মুক্তির কাক্সিক্ষত জায়গায় আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে না পারলে সভ্যতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এ অবক্ষয় রুখতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, শিক্ষার্থীদের সততা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং দেশপ্রেমের শিক্ষা দিতে হবে। এ চারটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটাতে পারলে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা জাতির ভবিষ্যত রচনায় স্বপ্ন দেখতে পারি। এ স্বপ্ন দেখতে না পারলে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগ এবং আমাদের মহান নেতৃবৃন্দের আত্মোৎসর্গ অর্থহীন হয়ে যাবে। সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে একটি খারাপ সংস্কৃতি চালু হয়েছে। তা হলো রাজনীতিতে এলেই বিত্ত-বৈভব, বাড়ি-গাড়ি, কয়েকটি কোম্পানির মালিক, শত শত কোটি টাকার মালিক হতে হবে। পদ-পদবী পেতেই হবে। এটা রাজনীতির মূল সংস্কৃতি নয়। নিজেকে উৎসর্গ করার নাম রাজনীতি। পরার্থে নিজেকে নিবেদন করার নাম রাজনীতি। রেজাউল করিম বলেন, একসময় বলা হতো বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্র্যের রোল মডেল। অথচ আজ বিশ্ব নেতৃত্ব বলেন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই রোল মডেলের বাংলাদেশকে পরিপূর্ণতা দিতে হলে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, ইমারত নির্মাণের মতো বৈষয়িক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। অবৈধ অর্থ উপার্জনকারীদের সম্পর্কে ঘৃণার উদ্রেক করতে হবে। মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিংকে যারা প্রশ্রয় দেন, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। অন্যায়ভাবে সম্পত্তি আরোহন করা, যেনতেন উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া, যে কোন মূল্যে সরকারী সম্পত্তি লুণ্ঠন করাÑ এসব প্রবণতা রুখতে আমাদের মানসিকভাবে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন। তিনি বলেন, জনগণের জন্য সরকার। সরকারের জন্য জনগণ নয়। শেখ হাসিনা সরকার এ ধারণায় বিশ্বাস করেন। শিক্ষা বিস্তারে যদি ভূমিকা রাখতে না পারি তাহলে মন্ত্রিত্ব অর্থহীন হয়ে যাবে। যে জাতি প্রকৃতপক্ষে শিক্ষিত নয়, যে জাতি নৈতিকতার মানদ-ে উচ্চ জায়গায় পৌঁছাতে পারে না, তাকে বিশ্বে মূল্যায়ন করে বলা হয় এ রাষ্ট্র, এ সমাজ অনেক দূর এগোতে পারেনি। একটি শিক্ষিত সমাজই দিতে পারে একটি ভাল রাষ্ট্র। একটি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্র দিতে পারে ভবিষ্যতের অপার সম্ভাবনার হাতছানি। সে স্বর্ণালি জায়গায় আমরা সকলকে নিয়ে পৌঁছাতে চাই। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।
×