ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হামলাতে নেই তবুও মামলার আসামী হলেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী!

প্রকাশিত: ০৩:০৪, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

হামলাতে নেই তবুও মামলার আসামী হলেন সাদ বিন কাদের চৌধুরী!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) হামলার ঘটনায় কিছু জানতেন না ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী। তিনি অবস্থান করছিলেন হলে। তবুও ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূরের মামলার আসামী হলেন তিনি। এ ঘটনায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গত ২২ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন ও ছাত্রলীগের একটি অংশ ডাকসু কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভিপি নূরসহ অন্যদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় ভিপি নুরুল হক নূরসহ অন্ত্যন্ত ২৫জন আহত হন। এর পরের দিন শাহবাগ থানায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ ৩৭জনকে আসামী করে শাহবাগ থানায় মামলা করে নুরুল হক নূর। তার পক্ষ হয়ে মামলাটি দায়ের করেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার নাম কিভাবে এসেছে তা জানিনা। যেহেতু আমি মামলা করিনি। এ বিষয়ে নুরুল হক নূরকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল ধরেননি। তবে মামলার পরের দিন (২৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে হামলায় কে কে জড়িত সে বিষয়ে তিনি অন্য আসামীদের নাম বললেও সাদ বিন কাদেরের নাম বলেননি। মামলার বিষয়ে সাদ বিন কাদের চৌধুরী বলেন, “মারামারি শেষ হয় ১টা ২০ মিনিট থেকে দেড়টার মধ্যে। আর (হলের সিসি টিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে) আমি হল থেকে বের হই ১টা ৫৩ এর দিকে। আমার হল (জহুরুল হক) থেকে ডাকসুতে আসতে সময় লাগে ৫-১০ মিনিট। মারামারি শেষ হয় দেড়টায় তারপর আমি হল থেকে বের হলাম তাহলে আমার নামটা কিভাবে আসে এটা আমার বোধগম্য নয় আমি রীতিমত অবাক। তিনি আরও বলেন, “একই সময়ে একই মানুষ দুই জায়গায় অবস্থান করার ক্ষমতা আল্লাহ কোন মানুষকে দেননি এমনকি কোন মহামানবেও না। একই সাথে হলে ও ডাকসুর অবস্থান করা কি আমার পক্ষে সম্ভব?” তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে নূরুল হক নূরের কাছে জানতে চান কি উদ্দেশ্যে ও কেন তার বিরুদ্ধে মামলা করা হল। জহুরুল হক হলের এব প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী বলেন, ঝামেলা শেষ হওয়ার পর হলে যাচ্ছিলাম। তখন সাদ বিন কাদের চৌধুরী ভাই হল থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পরে যখন মামলাতে তার নাম দেখলাম তখন খুব খারাপ লেগেছিল। হয়ত অনেকেই এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রাথমিক তালিকায় সাদ বিন কাদেরের নাম ছিল না। তবে পরে তার নাম কিভাবে এসেছে সেটা বলতে পারছি না। তবে এ মামলায় কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি শাস্তির পাবে না বলে আশ্বাস দেন মামলাকারীরা। ডাকসুতে সভা: এদিকে, ভিপি নুরুল হক নূরের উপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডাকসু নেতারা। কিন্তু হামলায় ডাকসুকে জড়ানোয় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তারা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ডাকসু কার্যালয়ে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সভা করেন ডাকসুর প্রতিনিধিরা। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল রবিবার সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। সভা শেষে ডাকসুর কয়েকজন প্রতিনিধি জানান, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের একটি অংশ ছিল। কিন্তু ডাকসুর নাম জড়ানো হয়েছে। ডাকসুর কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে ডাকসুর অবস্থান পরিষ্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।
×