ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কনকনে শীত উপেক্ষা করে দুরন্ত শিশুরা খেলায় মগ্ন

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

 কনকনে শীত উপেক্ষা করে দুরন্ত শিশুরা খেলায় মগ্ন

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ কনকনে শীত। শীতে কাঁপছে গ্রাম-নগর আর শহর বন্দরের মানুষ। সূর্যের দেখা নেই দুপুরেও। কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশে উঁকিঝুঁকিও মারছে না সূর্য। দুপুরটা সকালের ন্যায় কুয়াচ্ছন্ন হওয়ায় ঘুমকাতুরেরা পিপাসুরা যেন বিছানা ছাড়তে চাইছে না। দুরন্ত শিশুরা পাঠশালা বন্ধ থাকায় মেতেছে খেলায়। অলিগলিতে রিক্সার নষ্ট চাকা ঘুরিয়ে আনন্দে মেতে উঠছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শুক্রবার কাকডাকা ভোরে প্রকৃতিঘন পরিবেশ সিআরবির সাতরাস্তার মোড়সহ শিরিষতলা যেন শিশুদের ডাকেই জেগে উঠেছে। একবার রাস্তা বেয়ে পাহাড়ের চূড়ায়, আবার সেই পথেই নিচে নেমে এসে রিক্সার চাকায় গাড়ি চালানোর আনন্দ উপভোগ করতে দেখা গেছে। পরিবেশটা যেন তাদের অনুকূলে প্রকৃতি গড়ে দিয়েছে। এদিকে কর্মজীবীরাও কর্মক্ষেত্রে না গিয়ে পারছে না শীতকে উপেক্ষা করে। কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের প্রকোপ। সূর্যের দেখা নেই শুধু সাত সকালেই নয়, দুপুর ঘনিয়ে বিকেল এলেও সূর্য যেন নিজেকে দেখাতে চায় না। কালো শাড়ির আঁচলে যেন সূর্য মুখ লুকিয়ে রেখেছে। পরিবেশটা সূর্য না থাকায় ঠান্ডায় জমে উঠেছে। কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ যেন সকলের গা ছুঁয়ে ঠান্ডার প্রকোপ বুঝিয়ে দিচ্ছে। অনেকেই বলছেন, কারও পৌষ মাস আর কারও সর্বনাশ। ধনী ও মধ্যবিত্তরা কনকনে ঠান্ডা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সোয়েটার, চাদর আর জ্যাকেট মুড়িয়ে নিচ্ছে। কিন্তু হতদরিদ্র দিনমজুর আর দিনে আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো ফুটপাথেই রাত, দিন কাটাচ্ছে। নগরীর স্টেশন রোড, জিইসি মোড়, প্রবর্তক মোড়, একে খান মোড়, অলংকারসহ যেসব এলাকায় রাস্তার ধারে প্রশস্ত ফুটপাথ রয়েছে সেখানে দিন কাটাচ্ছে হতদরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। যাদের পরিচয় ফুটপাথই। ঠিকানাও তাই। কারণ অর্থাভাবে আর অভাব অনটনের জের টানতে এই ফুটপাথকেই যেন জড়িয়ে ধরতে বাধ্য করেছে পৃথিবী। চেষ্টা করেও আশার আলো দেখছে না এ শ্রেণী-পেশার মানুষগুলো। তবে এর পেছনে অিন্য কারণও রয়েছে, যা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। শীতের ভোরে ফজরের আজান শোনা যাচ্ছে সোয়া ৫টার পর থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে। কোথাও পৌনে ৬টায়। আবার কোথাও বা ৬টায় মসজিদের উদ্দেশ্যে মুসল্লিরা দিনের শুরুর নামাজ আদায় করতে ছুটে যাচ্ছেন। এরপর থেকে শুরু কর্মজীবীদের দৌড়ঝাঁপ। যারা দূরবর্তী স্থানে চাকরি করেন তারা বেরিয়ে পড়েন শীতের কনকনে আবহাওয়ায় নিজেকে মোটা কাপড়ে মুড়িয়ে। কিন্তু দিনমজুর আর হতদরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা গলায় আর কানে মাফলার পেঁচিয়ে শীত থেকে নিজেকে আড়াল করে ছুটছে আয়ের আশায়। তবে বিত্তশালীরা এ শীতের মাঝেও মোটা কাপড়ে নিজেকে মুড়িয়ে এসির হাওয়া খেয়ে গাড়িতে ছুটছেন সকাল ৯টারও পর। শ্রেণী-পেশা ভেদে আয়ের উদ্দেশ্যে সবাই ছুটছে। এদিকে ডিসেম্বরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় এক মাস ছুটির ফাঁদে পাঠশালা পড়ুয়ারা নিজেদের ব্যস্ত রাখে নানা খেলার মধ্য দিয়ে। তবে শিশুদের অবস্থা একটু ভিন্ন। শিশুরা শুধু বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার দেরি। পরদিন সকালের সূর্যটা যেন খেলার আনন্দে মোহিত করে তাদের জন্যই উদয় হয়েছে।
×