ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

 যশোরে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ গত কয়েকদিনে যশোর জেলায় শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার দাপট কমলেও কমেনি শীতের তীব্রতা। শীতের তীব্রতার সঙ্গে জেলায় বাড়ছে বিভিন্ন রোগ বালাই। এ সময় ঠান্ডাজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বয়স্করা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞরা জানান, শীতের কারণে সর্দিজ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট বা এ্যাজমা, এ্যালার্জি, চোখ ওঠা, কোল্ড ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগ থেকে মোট ৩ হাজার ৮শ’ ৫৬ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে বহির্বিভাগ থেকে ৩ হাজার ২শ’ ৭৫ জন এবং অন্তঃবিভাগ থেকে ৫শ’ ৮১ রোগী ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়েছে। ভর্তি রোগীর মধ্যে সংক্রামক ওয়ার্ডে থেকে ১শ’ ৩৪ জন এবং শিশু ওয়ার্ডে থেকে ৪শ’ ৪৭ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতাল সূত্র মতে, গত বুধবার সংক্রামক ওয়ার্ডে পাঁচ শয্যার বিপরীতে ২৩ জন ও শিশু ওয়ার্ডে ২৪ শয্যার বিপরীতে ৩৯ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত নতুন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে ১১ জন। বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিয়েছে ১শ’ ১৮ জন। চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদা গ্রামের মতিয়া বেগম জানান, দু’দিন আগে শ্বশুর আলী রায়হান (৫৯) ডায়রিয়া হলে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন একটু ভাল। বেড না পেয়ে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। এই ঠান্ডার মধ্যে মেঝেতে থাকতে অসুবিধা হচ্ছে। খুব কষ্টে আছি। শঙ্করপুর টার্মিনাল এলাকার আলী আহসান জানান, তার এক বছর বয়সী ছেলে আহনাফ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এই ঠান্ডায় শিশু ওয়ার্ডের মধ্যে থাকতে অসুবিধা হচ্ছে। কেননা এই ওয়ার্ডের সকল বেডে ভর্তি শিশুরা রয়েছে। নতুন রোগীদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আরিফ আহমেদ জানান, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমনিতেই মানুষের শরীরের তাপ উৎপাদন ক্ষমতা কমতে থাকে। তীব্র শীতে বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে রোগীর শরীর ধীরে ধীরে ঠা-া হয়ে আসে। শরীরে তাপ উৎপাদন কম হওয়ায় হাত-পা কুঁকড়ে যায়। এমনকি শরীর অবশ হয়ে আসতে থাকে। এছাড়া হাঁপানি, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ অন্যান্য রোগ তো আছেই। এসব রোগ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই শীত এড়িয়ে চলতে হবে। হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানান, শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার মূলে রয়েছে পিতা-মাতার অবহেলা। কোন শিশু অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসা না করিয়ে অবহেলা করা হচ্ছে। যে কারণে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে শিশুদের ক্ষেত্রে। যেহেতু এসব রোগে বয়স্ক ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে; তাই তাদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। রুম গরম রাখতে রুম হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
×