ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে মরতে চান বৃদ্ধ সুবল

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

  মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে মরতে চান  বৃদ্ধ সুবল

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার সর্বমহলে পরিচিত নাম মীর মোনায়েম সালেহীন সুবল (৮৫)। ছিলেন উপজেলা সদরের ৪নং সালটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। প্রাণবন্ত মানুষটি এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ, অসুস্থ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তার চাওয়া, নিজের নামটি যেন মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় উঠে। যুদ্ধের সময় তিনি ভারতীয় রেডক্রসে প্রশিক্ষণ নিয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে অসুস্থদের সেবা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে সেখানে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। এ তথ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও সবসময় স্বীকার করে এসেছেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও সালেহীন সুবলের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মীর মোনায়েম সালেহীন সুবল বলেন, তার নিজের বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা গ্রামে। ১৯৭১ সালে তিনি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাদদেশে বালাট থানার অধীনে ওয়ারেংকা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। সেখানে একসময় শত শত শরণার্থীর মাঝে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তিনি তখন ভারতীয় রেডক্রসে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর শরণার্থীদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গোপনে খবরও পৌঁছে দিতেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মৈলাম শরণার্থী শিবিরে তিনি বিজয় দিবস পালন করেন। সে অনুষ্ঠানে সালেহীন সুবল সভাপতিত্ব করেন। সেই বিজয়ের অনুষ্ঠানে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন। সালেহীন সুবল বলেন, দীর্ঘ সময় ধরেই মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম উঠানোর জন্য সরকারের সংশিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। বিএনপি আমলে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। চার বছর আগে তিনি আবার আবেদন করেন। কিন্তু সেটি আর পরে যাচাই-বাছাই হয়নি। যাচাই-বাছাই হলে গফরগাঁওয়ের বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধাই তার পক্ষে কথা বলতেন। সালেহীন সুবল বলেন, রাষ্ট্রপতি তার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার বিষয়ে অবহিত আছেন। কাজেই তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি আবেদন করেছেন। কিন্তু পরে০ বিষয়টি আর এগোয়নি। বর্তমানে তিনি খুবই অসুস্থ হয়ে গফরগাঁও উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। যদি কেউ সাহায্য করতে চান। তাহলে তার পারসোনাল বিকাশ মোবাইল নং ০১৭১১ ৫১৭৮৮৪। জীবনের শেষ বেলায় তিনি চান তার নামটি যেন মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় উঠে। এদিকে গফরগাঁওয়ের মুক্তিযোদ্ধারাও সুবলের দাবির বিষয়ে একমত। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মফিজ আহমেদ বলেন, মীর মোনায়েম সালেহীন সুবল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইন্ডিয়ার ক্যাম্পে ছিলেন। এ ক্যাম্পে ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসেমও ছিলেন। সুবল অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না করলেও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শরণার্থীদের সহায়তা করেছেন। -বিজ্ঞপ্তি
×