ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসন মেলা

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯

আবাসন মেলা

যথারীতি রাজধানীর আবাসন মেলা এবারও একান্ত নিজস্ব নীড়সন্ধানী নাগরিকদের পদচারণায় মুখর। তবে এবার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান। সেটি হলো সাধারণ ফ্ল্যাটের চেয়ে শিশুদের খেলার জায়গাসহ সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, প্রার্থনাকক্ষ, পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা, এটিএম বুথ ও ফার্মেসি আছে- এমন সব সুযোগ-সুবিধাসংবলিত কনডোমিনিয়াম প্রকল্পের দিকে মধ্যবিত্তের আগ্রহ বাড়ছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন সেদিকে ঝুঁকছে। নতুন নতুন প্রকল্প নিচ্ছে তারা। নাগরিক অধিকারের পাঁচ মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। সময়ের মিছিলে এই ব্যাপক কর্মদ্যোতন ব্যক্তিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কোম্পানি এবং স্বল্পসুদে ঋণদান সংস্থার আওতায় চলে এসেছে। সঙ্গত কারণে বর্তমানে গৃহায়ন ব্যবস্থায় স্বল্প আয়ের মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা অধিক অর্থ ব্যয়ে বাসস্থান তৈরিতে হিমশিম খায় তাদের জন্য এমন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রকল্প সচ্ছল জীবনযাত্রার এক নবতর সংযোজন। ফলে বাসস্থান তৈরির এই জনবান্ধব প্রকল্প আজ অনেক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁইকে তাদের হাতের নাগালে পৌঁছেও দিচ্ছে। এমন বৃহৎ কর্ম আয়োজনকে সামনে রেখে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে আবাসন প্রকল্প প্রতিষ্ঠান রিহ্যাবের ৫ দিনব্যাপী এক মহতী মেলা। আজ মেলার শেষদিন চলতি বছরের মতো শেষ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না ক্রেতারা, এটি অনুমান করা যায়। আবাসন প্রতিষ্ঠান এবং ঋণদান সংস্থাগুলো কোন ধরনের অপকৌশল যাতে গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিতে না পারে সে ব্যাপারে প্রকল্পের ব্যবসায়ী এবং ঋণদাতারা সজাগ ও সতর্ক ছিলেন। সাধারণ মানুষ যারা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে কোন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছে বাসস্থান নির্মাণের সমস্ত শর্ত পালন সাপেক্ষে অর্থলগ্নি করে সেখানে তারা কোন অনিয়ম কিংবা বিশৃঙ্খলার শিকার হলে তা চিহ্নিত করা সঙ্গত। শুধু তাই নয়, আবাসন উদ্যোক্তাদের বিধিসম্মত উপায়ে পরিবেশ সুরক্ষায় ভবন তৈরিতে মনোযোগ দেয়া জরুরী। বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতা পরিবেশবান্ধব আবহ তৈরিতে যে পরিমাণ সঙ্কটের আবর্তে পড়ছে বহুতল ভবন নির্মাণ তেমন আশঙ্কাকে যেন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অতিক্রম করতে পারে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের সে ব্যাপারেও নজরদারির প্রয়োজন আছে। শুধু ফ্ল্যাট ও প্লটের বুকিং সুবিধাই নয়, একটি বাড়ি তৈরি করতে গেলে যা যা লাগে তার প্রায় সবই এ আবাসন মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। বাথরুম ফিটিংস, ফ্লোর টাইলস কিংবা বিল্ডিংয়ে ওঠানামার লিফট সবই একই ছাদের নিচে। এক জায়গায় সব কিছুর ব্যবস্থা রাখায় ক্রেতাদেরও সুবিধা হয়েছে। রিহ্যাব শীতকালীন মেলায় এসে প্লট ও ফ্ল্যাট কেনার সুবিধাসহ এক ছাদের নিচে গৃহঋণসহ নির্মাণসামগ্রীর সমাহার থাকায় অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এবারের মেলায় সরাসরি ফ্ল্যাট ও প্লট বুকিং দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া মেলায় বুকিং দিলে নগদ ছাড়সহ রয়েছে আকর্ষণীয় সুবিধা। এ ছাড়া কিস্তিতে ফ্ল্যাট ও প্লট বুকিং দেয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে। এর বাইরে ৩০টি নির্মাণসামগ্রী উৎপাদক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে মেলায়। বৈদ্যুতিক সামদ্রী, গৃহ সাজানোর সরঞ্জামাদি, টাইলস ও সিরামিকস পাওয়া যাচ্ছে ওই সব স্টলে। মেলায় আবাসন খাতে ঋণ সরবরাহকারী ১৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। গৃহঋণের পরিমাণ ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেয়া হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের স্টলে। কোন কোন ব্যাংক সাড়ে ১০ শতাংশ সুদে ঋণের ব্যবস্থা রেখেছে। রিহাব মেলার মতো আবাসন মেলা নিজের মতো করে নীড়সন্ধানী মানুষের জন্য বেশ উপকারী যে হয়ে উঠেছে, সে কথা বলাইবাহুল্য।
×