ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করল দেশবাসী

প্রকাশিত: ১১:২১, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করল দেশবাসী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অধীর আগ্রহ আর উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করল দেশবাসী। সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ থেকে এই গ্রহণ প্রত্যক্ষ করা হয়। চাঁদের ছায়া সূর্যের ওপর পড়ে চারদিকে গোল রিংয়ের মতো দেখায় বলে বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন বলয় গ্রাস সূর্যগ্রহণ। তবে বাংলাদেশের আকাশ থেকে এই গ্রহণ আংশিকভাবে প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হয়েছে। সূর্যগ্রহণের সময় আকাশ অনেকটা মেঘমুক্ত থাকায় তা ভালভাবেই প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প তৈরি করা হয় বিজ্ঞান সংগঠনের পক্ষ থেকে। এসব পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পে মূলত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিড় জমায়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিজ্ঞান জাদুঘরে তৈরা করা হয় পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পের জন্য মূলত তারা এই ক্যাম্পের আয়োজন করে। টেলিস্কোপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী বলেন, সূর্য পৃথিবীর সব শক্তির আঁধার। সূর্যগ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝামাঝি চলে আসে চাঁদ। যে কারণে সূর্য ঢেকে যায়। এটি একটি বিরল ঘটনা। সূর্যগ্রহণ দেখতে আসা শিক্ষার্থীরা বলেন, সূর্যগ্রহণ সৌরজগতের একটা প্রাকৃতিক ঘটনা। সূর্যগ্রহণ দেখার মাধ্যমে আমরা সূর্য সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে। সাড়ে আটটা থেকে শুরু হয়ে তা ১টা পর্যন্ত চলে। বিজ্ঞানীরা এই বলয় গ্রাস সূর্যগ্রহণের নাম দিয়েছেন দিয়েছেন ‘রিং অব ফায়ার’। চাঁদ সূর্যের সামনে এসে ধীরে ধীরে ঢেকে ফেলছে সূর্যকে। গ্রহণের সময় সূর্যকে রক্তাক্ত আংটির মতো দেখাবে। এদিকে বেসরকারী সংগঠন বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চও সূর্যগ্রহণ দেখার আয়োজন করে। সেখানেও শিক্ষার্থীরা এই জাগতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য ভিড় করে। ঢাকার বাইরে এটি পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্প তৈরি করা হয়। টেলিস্কোপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এটি পর্যবেক্ষণ করে। বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হয় সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে। এ সময় থেকে চাঁদ সূর্যের সামনে এসে ধীরে ধীরে ঢেকে ফেলতে শুরু করে। সর্বোচ্চ গ্রহণ হবে ১১টা ১৮ মিনিটে। বাংলাদেশে গ্রহণ শেষ হয় বেলা ১টায়। তবে সকালে আকাশ অনেক মেঘমুক্ত থাকায় ভালভাবেই তা প্রত্যক্ষ করতে পারে দেশবাসী। বাংলাদেশ এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এফ আর সরকার বলেন, সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের ছায়া পড়ে সূর্যের চারদিকে গোল রিংয়ের মতো দেখায় বলে বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছে বলয়গ্রাস সূর্য গ্রহণ। তিনি বলেন, বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ সাধারণ শুরু হবে সৌদি আরবের রিয়াদের কাছাকাছি থেকে। এরপর তা যুক্তরাজ্য, ভারত শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পোলেনেশিয়ার, গুয়াম দ্বীপে গিয়ে এটি শেষ হয়। তিনি বলেন, এটি এই বছরের শেষ সূর্য গ্রহণ। বিজ্ঞানীরা বলেন, বলয় গ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় সাধারণত চাঁদের কৌণিক ব্যস সূর্যের চেয়ে ছোট হয়ে থাকে। এ কারণে গ্রহণের সময় সূর্যের চারদিকে লাল রংয়ের রিং এর মতো দেখা যায়। চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন সূর্য কিছু সময়ের জন্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়। সাধারণত অমাবশ্যার পরে নতুন চাঁদ ওঠার সময় এ ঘটনা ঘটে। পৃথিবীতে প্রতিবছর অন্তত দুই থেকে পাঁচটি সূর্যগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়।
×