ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিববর্ষের আগাম আয়োজন ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের গান’

প্রকাশিত: ১১:২০, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

মুজিববর্ষের আগাম আয়োজন ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের গান’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী বছরের ১৭ মার্চ পূর্ণ হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ। এ উপলক্ষে সরকারী-বেসরকারীভাবে নেয়া হয়েছে বছরব্যাপী নানামুখী কর্মসূচী। শিল্প-সাহিত্যের আলোয় উদ্যাপিত হবে জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ। তবে সেই কাক্সিক্ষত দিনটি আসার আগেই শুরু হয়ে গেছে মুজিববর্ষ উদ্যাপনের আগাম আনুষ্ঠানিকতা। সেই স্রোতধারায় বৃহস্পতিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী সঙ্গীতানুষ্ঠান। একাত্তরের প্রেরণাদায়ী সুরের আশ্রয়ে সাজানো সঙ্গীতাসরটির শিরোনাম ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের গান’। একক ও দলীয় পরিবেশনার সমন্বিত সঙ্গীতানুষ্ঠানটির আয়োজক বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। বৃৃহস্পতিবার শীতল বিকেলে এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও বিশিষ্ট গণসংগীত শিল্পী মাহমুদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তপন মাহমুদ। উদ্বোধনী আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কাঠামোটা অর্থনৈতিক হলেও ভিত্তি হচ্ছে সংস্কৃতি। আর এই সংস্কৃতির গুরুত্বকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। একটি মানবিক রাষ্ট্র গড়তে সংস্কৃতির বিকল্প নেই-এটাও তিনি অনুধাবন করেছিলেন। সংস্কৃতিচর্চাকে ছড়িয়ে দিতে তার প্রচেষ্টাতেই গড়ে উঠেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত শিল্পকলা একাডেমি, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ (এফডিসি) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির যোগসূত্র ধরেই রাষ্ট্রের চার মূলনীতিতে যুক্ত হয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ। পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর পাল্টে যায় সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চরিত্র। তাই মুজিববর্ষের আয়োজন আনুষ্ঠানিকতায় দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে। আপন শিল্প-সাহিত্যের আলোয় তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনকে মেলে ধরতে হবে। তা না করে শুধু বিদেশী শিল্পীদের দিয়ে অনুষ্ঠান করলে মূল উদ্দেশ্যটি অর্জিত হবে না। সুরতীর্থের শিল্পীদের সম্মেলক পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় প্রথম দিনের সঙ্গীতাসর। অনেক কণ্ঠস্বর এক সুরে জাতির জনকের বন্দনায় গেয়ে ওঠে- শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রণী ...। দলটির গাওয়া দ্বিতীয় গানের শিরোনাম ছিল- আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী ...। গান দুটি পরিবেশন করে জাহানারা নিশি ফাউন্ডেশন। সুরতীর্থের শিল্পীরা গেয়ে শোনায় ‘তোমার প্রেমে ধন্য করো’ ও ‘এখন আর দেরী নয়’। নিবেদনের শিল্পীরা পরিবেশন করে ‘কেউ পারেনি সারা বাংলা’ ও ‘যশোর খুলনা বগুড়া পাবনা’ শীর্ষক সঙ্গীত। ‘গেরিলা আমলা গেরিলা’ ও ‘মুজিব তোমায় ভুলি নাই’ শিরোনামের গান শোনায় নির্ঝরিনীর শিল্পীদল। মরমী লোকগীতি শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘আউল বাউল ফকিরের দেশ’, ও ‘টাক ডুম টাক ডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’। মহীরুহের শিল্পীরা শোনায় ‘লাখো শহীদের রক্তে আজি’ ও ‘ধন্য বাঙালি ধন্য’। গানের মাঝে নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টসের শিল্পীবৃন্দ। সপ্তরেখা শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশন করে ‘মধুমতী নদীর তীরে’ ও ‘আকাশের বুক থেকে’। গীতি শতদল পরিবেশন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট। একক কণ্ঠে গান শোনান প্রদীপ সরকার, ঐশ্বর্য বসাক, আঞ্জুমান ফেরদৌসি কাকলি, সুমনা দাস, মুক্তাদির, শ্যামল চৌধুরী, আব্দুল ওয়াদুদ, রফিকুল আলম, অপর্না খান, তাসলিমা বেগম, অনিমেষ মুকুট মণি, সঞ্জয় কবিরাজ, আহমেদ শাকিল, সুমা রানী রায়, সৃজন রায় সৃজ্যোতি রায়। আজ শুক্রবার দ্বিতীয় অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা তিনটায়। চলবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। একক দলীয় সঙ্গীতের সঙ্গে থাকবে নৃত্য পরিবেশনা।
×