ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের মাঠ থেকে হঠাৎ পালিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করবেন না

প্রকাশিত: ১১:১৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

নির্বাচনের মাঠ থেকে হঠাৎ পালিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করবেন না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিএনপিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের মাঠ থেকে হঠাৎ পালিয়ে গিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চক্রান্ত করবেন না। আমরা চাই, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হোক। সুষ্ঠু নির্বাচনের ফল যাই হোক ১৪ দল মেনে নেবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে আমরা উৎসবমুখর ভোট চাই। যাতে এ নির্বাচন নিয়ে অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি না হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে ১৪ দল। বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জয়-পরাজয় যাই হোক গণতন্ত্রের বিজয় হতে হবে। ব্যক্তির বিজয় বড় কথা নয়। ঢাকাকে উৎসবের নগরী করবে নির্বাচন কমিশন। তাতে আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন দেব। তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। মতের পার্থক্য থাকবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের নামে সংগঠন করে হামলা করবেন, তা কোনভাবেই হতে পারে না। ঘটনায় যেই জড়িত হোক, তাকে যাতে কোন ছাড় দেয়া না হয়, সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সব পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করছি। ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরপর নবমবার দলের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ায় ১৪ দল তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। জাতির পিতার পরে সবচেয়ে বেশি জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে তিনি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছেন। ১৪ দল শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাকে মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একজন এমপিকে এভাবে হুমকি দেবে? এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে জনগণের কাছে উপস্থাপন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, ডাকসুর ভিপির ওপর হামলা অমানবিক কাজ। তবে আমাদের স্বস্তির বিষয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এটি দেখছেন। তবে এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যে বক্তব্য, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ডাকসুকে সচল রাখতে হবে। তিনি বলেন, এনআরসি (নাগরিক পঞ্জি) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। আবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ভিন্ন কথা। এটা অবশ্যই সত্য, বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়ে কেউ নাগরিকত্ব নিচ্ছে না। এটার কোন প্রয়োজনও নেই বাংলাদেশীদের। এখানে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব রাখার সুযোগ নেই। ভারত আমাদের বন্ধু। তবে নীতির বাইরে গিয়ে কোন কিছু করা যাবে না। সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ডাকসু ভিপির ওপর হামলা চালিয়ে তার প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রতিক্রিয়াশীল চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ যাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ডাকসুর ভিপির ওপর হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এ ষড়যন্ত্রে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভা-ারী, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেন, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ অসীত বরণ রায়, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা নাদের চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
×