ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাসিনো সম্রাট খালেদের সহযোগী মোহাম্মদ আলী কারাগারে

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

ক্যাসিনো সম্রাট খালেদের সহযোগী মোহাম্মদ আলী কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও কারাবন্দি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহাম্মদ উল্লাহ খান ওরফে মোহাম্মদ আলীকে (৪২) গ্রেফতার করেছে সিআইডি। পরে তাকে আদালতে নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল জানান, গত ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে খালেদের সহযোগী মোহাম্মদ আলীকে আটক করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড। পরদিন তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়। মোস্তফা কামাল জানান, গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ উল্লাহকে বুধবার আদালতে তোলা হয়। সেখানে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় খালেদের টেন্ডারবাজিসহ যাবতীয় অপরাধ সম্পর্কে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনো অভিযানে আটক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসাবে কাজ করে আসছিলে মোহাম্মদ উল্লাহ খান। খালেদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আয়ের হিসাব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতেন তিনি। তিনি খালেদের মালিকানাধীন ভূঁইয়া এ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপার লিমিটেডের জিএম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সরকারের ক্যাসিনো অভিযান শুরু হলে গা ঢাকা দেয় মোহাম্মদ উল্লাহ। চলমান ক্যাসিনো অভিযানের পুলিশি তল্লাশিতে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবে অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশান থেকে ক্লাবের সভাপতি খালেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র (এর মধ্যে একটি অবৈধ), গুলি এবং ইয়াবা জব্দ করা হয়। ক্যাসিনো থেকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে আটক এবং ২৪ লাখ নগদ টাকা, বিদেশি মদ, ক্যাসিনো বোর্ড জব্দ করার পর খালেদকে গ্রেফতার করে। এর পরদিন দুপুরে তাকে গুলশান থানায় নেয় র‌্যাব। একই দিন র‌্যাব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেন। আর মতিঝিলি থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন র‌্যাবের ওয়ারেন্ট অফিসার চাইলা প্রু মার্মা। গ্রেফতারের দু’দিন পর গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে খালেদকে বহিষ্কার করা হয়। সূত্রগুলো জানায়, শাহজাহানপুরের রেলওয়ে কলোনিতে বেড়ে ওঠা খালেদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, অবৈধ ‘আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে’ এই যুবলীগ নেতা ও তার বাহিনী রাজধানীর মতিঝিল, আরামবাগ. ফকিরাপুল, শাহজাহানপুর, মুগদা, কমলাপুর, রামপুরা, সবুজবাগসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সাধারণ মানুষ তার ভয়ে আতঙ্কিত ছিল। এদিকে এদিন দুপুরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় খালেদ মাহমুদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল মামুন। পুলিশি জিজ্ঞাসবাদে খালেদ জানিয়েছেন, অবৈধ আয়ের টাকা নিজের এবং স্ত্রীর নামে ছয়টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টে তিনি গচ্ছিত রেখেছেন। সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে তার তিনটি ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট আছে। দেশি-বিদেশি ব্যাংকের এসব হিসাবে প্রায় ৩১ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন তিনি।
×