ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্ষোভকারীদের গুলি ছোড়ার ভিডিও দিল উত্তর প্রদেশের পুলিশ

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

বিক্ষোভকারীদের গুলি ছোড়ার ভিডিও দিল উত্তর প্রদেশের পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক ॥ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী উত্তাল বিক্ষোভের মধ্যে ভারতের মীরাটে দুই ব্যক্তির পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। শুক্রবার সিএএবিরোধী বিক্ষোভ থেকেই এ গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ভিডিওর একটিতে নীল জ্যাকেট ও মুখোশ পরিহিত এক ব্যক্তিকে বন্দুক হাতে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। উত্তর প্রদেশের পুলিশ বলছে, ১৯-২১ ডিসেম্বর রাজ্যজুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে এমনই সহিংসতা প্রতিবাদকারীদের মোকাবেলা করতে হয়েছে তাদের। বাধ্য হয়ে নিতে হয়েছে পাল্টা ব্যবস্থা। উত্তরাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সহিংসতায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে; নিহতদের মধ্যে ৬ জনই মীরাটের বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। নিহতদের বেশিরভাগের শরীরে গুলির চিহ্ন থাকলেও পুলিশ বলছে বিজনৌর ছাড়া তারা আর কোথাও তাজা গুলি ছোড়েনি; বিক্ষোভকারীদের থামাতে কেবল প্লাস্টিকের ছররা গুলি ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে। বিজনৌরে সংঘর্ষে ২০ বছর বয়সী এক যুবক নিহত হয়। উত্তর প্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। “২১ জেলায় ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় ২৮৮ পুলিশ আহত হয়েছে, এদের মধ্যে ৬২ জনের জখম আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত,” কয়েকদিন আগের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন তিনি। বিক্ষোভ-সহিংসতার স্থানগুলো থেকে পুলিশ নিষিদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্রের ৫০০টি কার্তুজ উদ্ধার করেছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সিএএবিরোধী বিক্ষোভে সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। “উত্তর প্রদেশে যারা সহিংসতা চালিয়েছে, তাদেরকে অনুরোধ করছি, আপনারা বাসায় বসে নিজেকেই প্রশ্ন করুন, ঠিক কি ভুল কাজ করেছেন। তারা (বিক্ষোভকারী) বাস এবং সরকারি সম্পদ ধ্বংস করেছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরও অধিকার আছে,” লখনৌতে অটল বিহারি বাজপেয়ী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বলেন এ বিজেপি শীর্ষ নেতা। মোদী উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভ দমনে ‘চমৎকার কাজ’ করায় রাজ্যটির পুলিশের প্রশংসাও করেছেন। ভারতের নতুন এ নাগরিকত্ব আইনে প্রথমবারের মতো ধর্মকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার বলছে, প্রতিবেশী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ তিন দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে ভারত চলে আসা অমুসলিমদের সুরক্ষা দিতে এ আইন ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে আইনটির সমালোচকরা বলছেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কোণঠাসা করা এবং বিজেপির ‘হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা’ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই এ আইন হয়েছে। এটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের মূলনীতিরও লংঘন, বলছেন তারা।
×