যে যাই বলুন না কেন শীতকালই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচাইতে আরামদায়ক ঋতু। ফালগুন-চৈত্র এই দুই মাস বসন্তকাল হলেও চৈত্র মাসের ভ্যাপসা গরম মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। বসন্তকালে ফুল ফোটে, পাখি গান গায় এই কথা সত্য হলেও শীতের মিষ্টি আমেজ এ দেশের মানুষের মন জুড়িয়ে দেয়। শীতকালের মতো খাওয়া-দাওয়া আর চলাফেরার সুযোগ অন্য ঋতুতে পাওয়া যায় না।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে শীত ও গরমের তারতম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে দুনিয়ার সব জায়গায়। প্রতি বছরেই আবহাওয়া নিয়ে বিশ্বের নেতৃবৃন্দ বৈঠক করেন কিন্তু আবহাওয়া আর জলবায়ু দূষণের হাত থেকে তারা এই ধরণীকে রক্ষা করতে পারছেন না। ফলে পৃথিবীর মানুষ আজ বায়ূ দূষণের কবলে পড়ে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের শিকার হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আবহাওয়া আর বায়ূ দূষণ দিনে দিনে আরও অবনতির দিকে ধাবিত হবে।
আমাদের দেশে শীতকাল বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষেই গ্রামগঞ্জে এই উৎসব পালন করে বেশি। শহরের লোকেরা মঞ্চে নাটক উপভোগ করে। তবে গ্রামের মানুষ এখন আর আগের মতো সারা রাত এ সব অনুষ্ঠান পালন করে না। তাহলেও আবহমান বাংলার ঐতিহ্য একেবারেই বিলীন হয়ে যায় নি।
শীতে টাটকা শাক-সবজি, ফল-মূল আর রবি শস্য দেশের মানুষের খাবারের জন্য বিধাতার এক আশীর্বাদ। শীতে বিদেশী পাখিরা অতিথি হয়ে এ দেশে আসে আর দেশের জলাশয়গুলো অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে। এ দৃশ্য সত্যি খুব আনন্দদায়ক। তবে শীত সব সময় আশীর্বাদ হয়েই আসে না। শীত শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আর গরিব মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে আসে। ফুটপাথে, পার্কে আর রাস্তায় যে সব গরিব মানুষ ঘুমায়- একটা কম্বলের জন্য তাদের কতই না আকুতি। একটি শীত বস্ত্র কিংবা একটি কম্বল পেলে তাদের দুঃখ-কষ্টের অনেক লাঘব হয়- অথচ দেশের ধনী মানুষেরা এদিকে কোন নজর দেন না। ধনীদের সামান্য অর্থে এই গরিব মানুষগুলোর অনেক উপকার হয়, অথচ গরিবের সাহায্যে এগিয়ে আসতে খুব কম লোককে দেখা যায়।
আমাদের উচিত শীতের দিনে দেশের এই অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানো। আমরা যে যে অবস্থানে আছি-আমাদের উচিত সকলেই সমবেতভাবে এই গরিব অসহায় লোকদের সাহায্যে এগিয়ে আসা।
কলাবাগান, ঢাকা থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: