ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা

চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরীয় নেতাদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

প্রকাশিত: ১০:৫২, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরীয় নেতাদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মঙ্গলবার চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চেংদু শহরে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন থেকে ত্রাণ সহায়তা চেয়ে এসেছে। পিয়ংইয়ং বলেছে, আগামী বছর ত্রাণ সরবরাহ না দিলে দেশটি আরও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। খবর এপির। বৈঠকে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুন জায়ে ইন উপস্থিত ছিলেন। এতে উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, পরিবেশ এবং ওই অঞ্চলের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের বিষয়টি স্থান পায়। ১৯৯৭ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে শুরু হওয়া এই ধরনের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ব্যর্থ হয়েছিল। এই তিন দেশ বিশ্বের প্রায় ২৪ শতাংশ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। গত বছর দেশ তিনটি ৭২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বাণিজ্য করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রান্সপ্যাসিফিক পার্টনারশিপ চুক্তি বাতিল করে দিলেও চীন অপর ১৬ দেশের সঙ্গে ঠিকই বেজিংয়ের বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রেখে ব্যবসা চালিয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ১৬ জাতির রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তিতে অংশ না নেয়ায় চীন সুবিধা পেয়েছে। তারা একচেটিয়া বাজার ধরে রেখেছে। তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের চুক্তি সচল থাকবে কিনা- তা এখনও স্পষ্ট নয়। উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি বলেছে, ভবিষ্যতে পিয়ংইয়ং প্রসঙ্গে ওয়াশিংটন কী পদক্ষেপ নেয়- তা দেখার পর আমরা দেশটির জন্য ক্রিস্টমাস উপহার পাঠাব। এই ক্রিস্টমাস উপহার বলতে পিয়ংইয়ং নতুন দফা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ইঙ্গিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের ছুড়তে পারে যেটি যুক্তরাষ্ট্র অথবা দেশটির মিত্র দেশের মাটি স্পর্শ করতে সক্ষম হতে পারে। বেজিং পিয়ংইয়ংয়ের অন্যতম বিনিয়োগকারী, কূটনৈতিক সমর্থনকারী এবং সহায়তাকারী দেশ হলেও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনকে চীনা কর্র্তৃপক্ষ পরমাণু কর্মসূচী থেকে বিরত রাখতে পারেনি। ওয়াশিংটন বার বার বলে আসছে, পিয়ংইয়ং তাদের পরমাণু কর্মসূচী স্থগিত করলেই ওয়াশিংটন দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। বেজিংও কয়েক দফা এই চেষ্টা করেছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে মতপার্থক্য দেখা দেয়। পাশাপাশি চীন ও জাপান তাদের দীর্ঘ ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব নিয়ে সরব হয়। অপরদিকে দক্ষিণ কোরিয়া দীর্ঘদিন জাপানের উপনিবেশিক হয়ে থাকলেও দেশ দুটি বর্তমানে ভাল ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে কাজ করছে। একই সঙ্গে মঙ্গলবারের বৈঠকে টোকিও-সিউল অনেক বিষয়ে একমত পোষণ করে।
×