ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তাদের নির্দেশ সিইসির

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তাদের নির্দেশ সিইসির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, দুই সিটির নির্বাচন ইসির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। দল দেখে প্রার্থীদের প্রতি আচরণ করা যাবে না। কার কি রাজনৈতিক পরিচয় তা না দেখে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব পালনে সাহসী ও কঠোর হতে হবে। বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনকালে সিইসি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, প্রার্থীর কার কি রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড- যারা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে আছেন, তাদের একেবারেই দেখার বিষয় নয়। প্রত্যেককে সমান গুরুত্ব দিতে হবে, প্রত্যেকের সঙ্গে সমান আচরণ করতে হবে। ভোটাররা যেন তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে নির্বাচনে সেই অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে বিভিন্ন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ‘সুফল’ পাওয়া গেছে। এ কারণেই নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবস্থা ধরে রেখেছে। তবে যন্ত্রে ভোটগ্রহণ নিয়ে এখনও অনেকের আপত্তি আছে। কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অনেকে ইভিএমে নির্বাচন করেছেন। ইভিএমে নির্বাচন পরিচালনায় কোন অসুবিধা নাই। এর মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ সফলভাবে করা যায়। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে কয়েকটি আসনসহ বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা সুফল পেয়েছি, তাই ধরে রেখেছি। যদি সবাই বলেন, ইভিএম দিয়ে ভালভাবে নির্বাচন করা যায় না, তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব না। অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হলেও নির্বাচন প্রক্রিয়ার কারণে ইসি অনেকটাই অসহায়। সেজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন। কেন নির্বাচন নিরপেক্ষ, শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হয় না? এ প্রশ্নের উত্তর আত্মজিজ্ঞাসার কারণেই আমাকে খুঁজতে হয়েছে। নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন আইনত স্বাধীন, কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দী। এজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন ইভিএম নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে। ইভিএম প্রশ্নবিদ্ধ হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন চায় ইসি। অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। অপর নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ মসৃণ করতে প্রতি কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর দুজন করে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়া হবে। কর্মকর্তাদের উপর নির্ভর করে কমিশনের ভাবমূর্তি। প্রার্থীরা যেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড পায় সেভাবে কাজ করতে হবে। নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ইসি। নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম। আস্থার জায়গাটা দৃঢ় করতে চায়। এটি সক্ষমতার পরীক্ষা। নির্বাচন যেন প্রশ্নের উর্ধে থাকে, যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএম নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনাগ্রহের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
×