ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত স্বাগত

আমরা চাই সিটি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

আমরা চাই সিটি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সুষ্ঠু হবে। এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করতে চান। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে যেই জয় পাক, কিছু আসে যায় না। হেরে গেলেও সরকারের ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়বে না। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিএনপিকে স্বাগতও জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সিডিউল ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্বাচনে বিভিন্ন দল অংশগ্রহণ করছে, বিএনপিও এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক, প্রতিযোগিতামূলক হোক- এটাই আমরা চাই। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতিতে এই নির্বাচন করছে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাব। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সম্পর্কের দেয়াল উঁচু না করে সেতুবন্ধন তৈরি করার পরামর্শও দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক জীবনে, সামাজিক জীবনে এবং পারিবারিক জীবনে আরও অনেক সেতু দরকার। আমাদের ওয়াল হচ্ছে, ব্রিজ তৈরি হচ্ছে না। আমি সকলের কাছে অনুরোধ করব, আসুন পোলারাইজড ডিভাইসিং পলিটিক্স থেকে ফিরে আসি। আর ওয়াল নয়, আমাদের সেতু নির্মাণ করা দরকার। সম্পর্কের সেতুগুলোতে ফাটল ধরে গেছে, এই চির ধরা সেতুগুলোকে সঠিকভাবে নির্মাণ করা দরকার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, আমি বলছি পারস্পরিক সম্পর্কের সেতু। আমাদের রাজনীতিকরা বেপরোয়া চালক হয়ে গেছে, আমাদের কথাবার্তাও বেপরোয়া চালকের মতো হয়ে গেছে। আমাদের অনেকের মুখে মুখে ফরমালিনের মতো বিষ। এই অবস্থা থাকলে ওয়ালই উঠবে, ওয়াল আরও উঁচুতে উঠবে, সম্পর্কের সেতু নির্মাণ হবে না। কাজেই আমাদের এই জায়গা থেকে বের হয়ে নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের সেতু নির্মাণ করতে হবে। ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। ওই সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনুষ্ঠানে নিজের সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমি আসলে আমার দ্বিতীয় জীবনে প্রবেশ করেছি। আমি অনেকটা অলৌকিকভাবে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে এসেছি। গত বছরের মার্চ মাসে আমার জীবনের ওপর যা হয়ে গিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য এমন ছিল যে, আমি আর নেই। সেদিন আপনারা দোয়া করেছেন। শেখ হাসিনা মমতাময়ী মায়ের মতো তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন (ডুপডা)-এর আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফেরদৌস হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোঃ মাহবুবুর রহমানসহ এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। ইভিএম নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে নিজস্ব সংবাদদাতা কুমিল্লা থেকে জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, লেটেস্ট টেকনোলজিতে ইভিএমের ব্যবহারে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তাই ইভিএম দিয়েই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে, বিএনপির এ অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ অতীতে যেসকল নির্বাচনের যেসব কেন্দ্রে ইভিএম এ ভোট গ্রহণ হয়েছে, ওই সকল কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হয়েছে এবং বেশিরভাগ কেন্দ্রে বিরোধী দল বিএনপিই জিতেছে। এ নিয়ে বিএনপির ভয়ের কোন কারণ নেই। বুধবার দুপুরে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে কুমিল্লা সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে, কিন্তু গণতন্ত্র নেই বিএনপি’র ভেতরে। তাদের ঘরে এবং দলেই গণতন্ত্র নেই। তারা (বিএনপি) কিভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে? বিএনপি এখন অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এক বছর আগে বিএনপির সম্মেলন হয়েছে। আওয়ামী লীগ আবারও সম্মেলন শেষে করেছে। আমি দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিএনপি ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি কনফারেন্সও করতে পারেনি। তারা ৫০১ জনের জাম্বো জেট মার্কা একটি কমিটি করেছে। তাহলে বিএনপির কাছে কি গণতন্ত্র আশা করা যায়? মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে আন্দোলনে এবং নির্বাচনে। সেখানে সরকারের কোন দোষ নেই। কারণ জনগণ বিএনপি এবং তার নেতাকর্মীদের ডাকে সাড়া দেয় না। এসময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো.ঃ আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুরসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
×