ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফের শীতের দাপট ॥ হঠাৎ কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

ফের শীতের দাপট ॥ হঠাৎ কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা

শাহীন রহমান ॥ আবারও জেঁকে বসেছে শীত। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, হঠাৎ করেই দেশে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। তারা জানায়, আজ ও আগামীকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় তাপমাত্রা আরও কমে যেতে পারে। এর সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ যোগ হয়ে শীত তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এতে শীতের মাত্রা আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, দেশে দুদিন বৃষ্টি হলে শৈত্যপ্রবাহ স্তিমিত হয়ে পড়তে পারে। এরপরে আবার শৈত্যপ্রবাহ বেড়ে শীত তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। এদিকে প্রচ- শীতে উত্তরের জনজীবন আবারও কাহিল হয়ে পড়েছে। বুধবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ওই এলাকার ওপর দিয়ে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলেই শৈত্যপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করে। এদিকে শীতের সঙ্গে ঘনকুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ঘনকুয়াশার কারণে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ ছিল। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, কুয়াশার দাপট আরও কয়েক দিন থাকবে। এর সঙ্গে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশ হঠাৎ করে জেঁকে বসে শীত। শুরু হয় উত্তরের ঠা-া বাতাস আর ঘনকুয়াশা। তীব্র শীতে জনজীবন কাহিল হয়ে পড়ে। দুদিন ধরে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ যেন গায়েই লাগছে না। এই অবস্থায় বুধবার থেকে আবারও শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শীত তীব্র আকার ধারণ করেছে। খোদ রাজধানীতে শীতবস্ত্র জড়িয়ে শীত নিবারণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। উত্তরে মানুষের জন্য এবারের শীত আরও কঠিন হয়ে ধরা দিয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আজ রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরে দেশের তাপমাত্রা আবারও কমে যেতে পারে। জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, বৃষ্টিপাত হলে শৈত্যপ্রবাহ কিছুটা স্তিমিত হয়ে আসবে। ফলে আগামী দুদিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, বৃষ্টির পর শীতের গতি প্রকৃতি আরও ভালভাবে অনুধাবন করা যাবে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে কিছু জলীয় বাষ্প উপকূলের দিকে আসছে। উপকূলে আসার পর পুবালি বাতাসের সঙ্গে পশ্চিমা বাতাসের মিশ্রণে দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ১০ থেকে ২০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। তবে এর আগে আকাশে মেঘ থাকলে কুয়াশা পড়তে পারে। নদী অববাহিকায় কুয়াশার ঘনত্ব তুলনামূলক বেশি থাকবে। তিনি জানান, আপাতত দুদিন কুয়াশা পড়লেও শীতের তীব্রতা খুব একটা বাড়বে না। কাল থেকে বৃষ্টি হলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও রাতের বেলা তাপমাত্রা বাড়বে। তবে শীত অনুভূত হবে। বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এই সময় আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত থাকতে পারে ঘনকুয়াশা। এদিকে শীত জেঁকে বসার পর মাঝখানে একদিন সহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মঙ্গলবার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শীতের তীব্রতা আবারও বেড়ে গেছে। ঘনকুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে সারাদেশেই জাঁকিয়ে শীত পড়ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাতের তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা পড়ছে। বুধবারও রাজধানীতে সারাদিন মোটামুটি রোদের দেখা ছিল। কিন্তু শীতের কমতি ছিল না। কনকনে শীতে সারাদিনই কাঁপুনি দিয়ে গেছে বেশ। সন্ধ্যার পর তো আর কথাই নেই। জাঁকিয়ে নেমে পড়ছে শীত। সারাদিন শহরে সাধারণ লোকজনকে রোদে একটু উষ্ণ করে নেয়ার চেষ্টা দেখা গেছে। কিন্তু কাজ হয়নি তাতে। কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কাছে রোদের যেন হার মানতে হচ্ছে। ফলে ভরদুপুরে রোদের মধ্যে গরম কাপড় লাগাতে হয়েছে সবাইকে। সন্ধ্যার পর সোয়েটার চাদর, মাপলার কানটুপি ছাড়া বাইরে বের হতে পারছে না কেই। এদিকে শীতজনিত কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় আর ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে শীতের তিনটি প্যারামিটার একসঙ্গে যোগ হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা এত বেশি অনুভূত হচ্ছে। প্রথমত শীতের প্রথম থেকে ছিল ঘনকুয়াশা। ঘনকুয়াশার কারণে পর্যাপ্ত দিনের আলো পৌঁছাতে পারছে না। এর সঙ্গে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে যোগ হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। মাঝখানে দুদিন শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও বুধবার থেকে আবারও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। শীতের সব প্যারামিটার একসঙ্গে যোগ হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে তারা উল্লেখ করেন। আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন শীত শুধু শৈত্যপ্রবাহের ওপর নির্ভর করে না। শীতের আরও প্যারামিটার রয়েছে। যার ওপর নির্ভর করে শীতের তীব্রতা। এবার শীতের প্রথম থেকেই ঘন রয়েছে। ঘনকুয়াশা বেশি থাকলে রাত ও দিনের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে তা কাছাকাছি চলে আসে। তাদের মতে এবারে বেশি শীত অনুভূত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো রাত দিনের তাপমাত্রার ব্যবধান অনেক কমে আসা। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে দিনের বেলায় পর্যাপ্ত আলো না থাকা। উপরের বায়ুরও (জেড বায়ু) বা শৈত্যপ্রবাহের প্রকোপ বাড়লে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে বৃষ্টিপাত হলেও শীত পড়ে। এবার শীতের ঋতুর শুরুতেই শীত জেঁকে বসে। এখন পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে। উত্তরাঞ্চলের শীত পরিস্থিতি ক্রমই জটিল হয়ে পড়ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছে বর্তমানে দিনের তাপমাত্রা কমেই নেমে আসছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান আরও কমছে। ফলে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার সঙ্গে যোগ হচ্ছে ঘনকুয়াশা। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন শীতকালের গড় তাপমাত্রা সাধারণত ১৮.৭২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাপমাত্রা এ পর্যায়ে থাকলেই শীত অনুভূত হয়। কিন্তু দিনের তাপমাত্রার এর চেয়ে আর কমে গেলে ক্রমেই শীত বেশি অনুভূত হতে থাকে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর নিচে নামলে সেটাকে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রীর নিচে নামলে সেটাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৪ এর নিচে নেমে গেলে তা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায়। পঞ্চগড় তাপমাপকের পারদ নেমে আসছে। বুধবার সকালে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ৬ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। যা এবছর শীত শুরুর পর দেশের মধ্যে ছিল সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। উত্তরের হিমেল বাতাসের প্রভাবে আবারও তাপমাত্রা কমে আসছে। ফলে, জেঁকে বসেছে শীত। বুধবার কিছু সময়ের জন্য সূর্যের মুখ দেখা মিললেও তাতে কাক্সিক্ষত উত্তাপ ছিল না। কনকনে ঠা-া বাতাসে পঞ্চগড়ের জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। বিশেষ করে নদী থেকে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। এসব শ্রমিক ও নি¤œ আয়ের মানুষের প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় সকালে ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সূত্রমতে, বাতাস কম হলে কুয়াশার পরিমাণ বাড়ে এতে তাপমাত্রাও বেশি থাকে। বাতাস থাকলে কুয়াশার পরিমাণ কমে যায়। এতে রাত যত গভীর হয় ততই বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। এ জন্য প্রতিবছরই পঞ্চগড়ে অন্যান্য জেলার চেয়ে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে এবং আগেভাগেই শীত নামে। এছাড়াও উত্তরের হিমেল বাতাস ঠা-াকে আরও বাড়িয়ে দেয়। শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। পঞ্চগড়ের কোন সরকারী হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় শিশু রোগীদের নিয়ে অভিভাবকরা ছুটছেন ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুরে। সরকারীভাবে এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার শীতবস্ত্র বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। রাজশাহী তাপমাত্রার পারদ নিচে নামল আবারও। হিমেল হাওয়া কেটের গেলেও বুধবার সকাল ৭টায় রাজশাহীর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি গত এক সপ্তাহের সর্বনি¤œ এবং চলতি মৌসুমেরও সর্বনি¤œ তাপমাত্রা বলছে আবহাওয়া কার্যালয়। এদিকে জেলার তাপমাত্রা যখন আবারও এক অঙ্কের ঘরে তখন আবহাওয়া যে কতটা শীতল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় এক সপ্তাহ থেকে শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে পদ্মাপাড়ের এই শহর। তাপমাত্রা কেবল নামছেই। আর মাঝেমধ্যে সামান্য বাড়লেও শীতের কোন হেরফের হচ্ছে না। সকাল গড়িয়ে দুপুর পার হয়ে গেলেও দেখা মিলছে না সূর্যের। দিনের বেলায় সূর্যের বিলম্বিত দর্শন রাতে শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়েছেন দিনমজুর, ভিক্ষুক, রিক্সাচালকসহ নি¤œ আয়ের মানুষ। তাই শীত থেকে বাঁচতে এসব মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে এখন রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকান। বুধবার সকালে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের ফুটপাতে উল্লেখ সংখ্যক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ফুটপাতের দোকানিদের হাঁকডাকই জানান দিচ্ছিল যে শীত তাড়ানোর জন্য সেখানে গরম কাপড় কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বরাবরের মতন সাধারণ দোকানিদের বিরুদ্ধে ক্রেতাদের সেই একই অভিযোগ ‘দাম বেশি’। নীলফামারী তিস্তা নদীর অববাহিকা ডিমলা উপজেলার মানুষজন শীতে কাঁপছে। সেখানে তাপমাত্রা এক অংকে নেমে এসেছে। তবে মাঝে কয়েকদিন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর উপরেই ছিল। তাপমাত্রা আরও নামতে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার নীলফামারীর দুটি আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে তিস্তা নদী বিধৌত ডিমলা উপজেলায় সর্বনি¤œ ৭.৫ ও সৈয়দপুর উপজেলায় সর্বনি¤œ ৮.৮ ডিগ্রী সে. ছিল। এতে গত দুইদিনের চেয়ে তাপমাত্রার সর্বনি¤েœর পারদ অনেক নেমেছে। তাপমাত্রার পারদ এক অংকের ঘরে নেমে আসায় জেলার ডিমলা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মানুষ তিস্তা নদীর ঠা-ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে। তার উপরে উত্তুরী হিম বাতাস সব থেকে বেশি কাবু করেছে। ডিমলার প্রভাব এসেছে পড়েছে জেলার অন্যান্য এলাকায়। শীতে কাবু জেলা শহরবাসীও। ডিমলা উপজেলার দশ ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়ন পূর্বছাতনাই খগাখড়িবাড়ি-টেপাখড়িবাড়ি-খালিশাচাঁপানী ও ঝুনাগাছচাঁপানী তিস্তা নদী ঘেঁষে রয়েছে। এই ৫ ইউনিয়নের তিস্তার চরসহ মোট হতদরিদ্র পরিবারের সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৮৭। তীব্র শীতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে এখানকার সাধারণ মানুষ।
×