ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা কাল

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা কাল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করেছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিম-লীর সদস্যরা। কেন্দ্রীয় কমিটিতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা থাকবেন কি না, সে ব্যাপারে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত সেটিও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সবকিছু চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। দলের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আগামী ৩ নবেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতিম-লীর সভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত সকল সভাপতিম-লীর সদস্যের কাছে কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণে লিখিত মতামত চান। পরে সভাপতিম-লীর সদস্যরা প্রত্যেকে লিখিত আকারে তাদের প্রস্তাবিত নামগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেন। একই সঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সর্বময় ক্ষমতা দলীয় প্রধানের কাছে অর্পণ করেন। আজ বুধবার প্রস্তাবিত নামগুলো যাচাই-বাছাই শেষে শূন্যপদগুলো পূরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে গণভবন গেটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আগামীকাল ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আগামী ৩ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। ঢাকা থেকে সড়কপথে বাসযোগে যাওয়া হবে টুঙ্গিপাড়ায়। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখানেই নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় মাধ্যমে নতুন কমিটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। বাকি পদগুলোতে নতুন মুখ ছাড়াও পুরনোরা থাকবেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। নতুন কমিটির পদ হারানো মন্ত্রীরা ৩৯ জনের তালিকায় জায়গা পাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের ওপর সব কিছু নির্ভর করছে। এছাড়া সভাপতিম-লীর প্রথম সভায় ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বৈঠকে দু’টি এজেন্ডা ছিল ১০ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন এবং দলের কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করা। বৈঠকে সভাপতিম-লীর সদস্যদের মতামত নেয়া হয়েছে। সবাই লিখিত আকারে যার যার পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, এগুলো দেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারব। শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য ছাত্রনেতাদের কাউকে বিবেচনা করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলনের আগেও আপনারা অনেকের নাম দিয়েছেন। আসলে এক ধরনের স্পেকুলেশন থাকেই, স্পেকুলেটিভ রিপোর্টও হতে পারে। আপাতত বিষয়টি স্পেকুলেশনের মধ্যেই থাকুক। একটু সারপ্রাইজ থাকুক। তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে. বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্যপদগুলো পূরণে পুরো দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করা হলেও বাদপড়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। সরকার থেকে দলকে আলাদা করতে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এমনকি বর্তমানে মন্ত্রিসভায় থাকা কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও দলের কেন্দ্রীয় পদ প্রাপ্তির কারণে তাদেরও জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভার রদবদলের সময় মন্ত্রিসভা থেকে তাদের বাদ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সভাপতিম-লীর দুজন সদস্য এমন সম্ভাবনার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা দেখার জন্য আগামী ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষার কথাও জানান। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদে বেশ কিছু নতুন মুখ আসছে বলেও বৈঠক সূত্র জানায়। গত ২১ ডিসেম্বর দলের ২১তম কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ৪২টি পদে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই দিন নবমবারের মতো দলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে, দ্বিতীয় মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৮১ পদের মধ্যে ৯টি সম্পাদকীয় ও দুটি উপসম্পাদকীয় এবং ২৮ সদস্য পদসহ মোট ৩৯টি পদ এখনও খালি। মঙ্গলবারের সভাপতিম-লীর বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, সাহারা খাতুন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এ্যাডভোকেট পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মান্নান খান, আব্দুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান। এছাড়া পদাধিকার বলে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
×