ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইনজুরিতে অনিশ্চিত দীপার টোকিও অলিম্পিক

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ইনজুরিতে অনিশ্চিত দীপার টোকিও অলিম্পিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীপা কর্মকারের টোকিও অলিম্পিকে খেলার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে গেল। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের আগে তাকে অনুশীলনে নামতে নিষেধ করে দিলেন ডাক্তাররা। গত অক্টোবরে জার্মানিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে চোটের জন্য নামতে পারেননি ২০১৬ রিও অলিম্পিকের চতুর্থ স্থান পেয়ে সাড়া ফেলে দেয়া জিমন্যাস্ট। টোকিও অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য যেখানে পদক পাওয়া ছিল জরুরী। স্টুটগার্টে নামতে না পারলেও দীপা আশায় ছিলেন নতুন বছরে যে তিনটি বিশ্বকাপ আছে তাতে পদক জিতে টোকিও’র ছাড়পত্র জোগাড়ের শেষ চেষ্টা করবেন। কিন্তু শুক্রবার ফের ধাক্কা খেলেন বিশ্বেশ্বর নন্দীর ছাত্রী। মুম্বইয়ের ডাক্তার ও ফিজিওরা তাকে এখন অনুশীলনে নামার অনুমতিই দিলেন না। উল্টো চোট সারানোর জন্য আরও পঞ্চাশ দিন রিহ্যাব করার পরামর্শ দিলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা জিমন্যাস্টকে। দীপার কোচ বললেন, দীপা ফ্লোরে নামার জন্য জোরাজুরি করলেও ডাক্তাররা যতদিন পর্যন্ত ছাড়পত্র না দেবেন ততদিন ওকে নামানোর প্রশ্নই নেই। আমাকে ওর জিমন্যাস্ট পরবর্তী জীবনের কথাও ভাবতে হচ্ছে। এমন কোন ঝুঁকি নিতে চাই না যাতে ও সারাজীবনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডাক্তাররা আরও ৫০ দিন রিহ্যাব করতে বলেছেন। বিশ্বেশ্বর বাবুর কথাতেই স্পষ্ট, ফেব্রুয়ারির শেষে হয়তো অনুশীলনে পুরোপুরি নামতে পারবেন না আগরতলার মেয়ে। এরপর হাতে থাকবে দুটি বিশ্বকাপ। যা পরিস্থিতি তাতে টোকিওতে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য ওই দুটি বিশ্বকাপ থেকে স্বর্ণ অথবা রৌপ্য পেতেই হবে দীপাকে। যা শুধু কঠিন নয়, অসম্ভবও মনে করছেন জিমন্যাস্টিক্স মহল। তাদের বক্তব্য, দীপার ‘ব্র্যান্ড’ ছিল ‘প্রোদুনোভা’ ভল্ট। সেটা করেই রিওতে বেশি পয়েন্ট তুলেছিলেন তিনি। দীপার যা চোট তাতে ‘প্রোদুনোভা’ করা আর সম্ভব নয়। তা হলে বিশ্বকাপে পদক পাবে কী করে? বিশ্বেশ্বর বাবু নিজেও সেই যুক্তি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বলে দিলেন, ফেব্রুয়ারির শেষে অনুশীলন শুরু করলেও নিজের জায়গায় ফিরতে আরও দু’মাস লাগবে। আর দীপা নামলেই একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়। সবাই ধরে নেয় পদক পাবেই। ফলে যতক্ষণ না ও পুরো সুস্থ হবে, ততদিন কোন প্রতিযোগিতায় নামাব না। তাহলে কি টোকিও’র আশা ছেড়ে দিলেন? বিশ্বেশ্বর বললেন, ২০২০ অলিম্পিকে যোগ্যতা পাওয়ার জন্য যে যোগ্যতামান রাখা হয়েছে তা পাওয়া এখন কঠিন। তবু দীপা যা জেদি মেয়ে ও একটা শেষ চেষ্টা করবেই। যদি না হয় সেক্ষেত্রে ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের জন্য তৈরি হবে। রিও অলিম্পিকে ভারতীয় মেয়ে জিমন্যাস্টিক্স ইতিহাসে নিজেকে সেরার আসনে নিয়ে যাওয়ার পরে চোট পেয়ে প্রায় দু’বছর কোন প্রতিযোগিতায় নামতে পারেননি দীপা। ২০১৮ তুরস্কে অটিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে সোনা জিতেছিলেন তিনি। জার্মানি বিশ্বকাপেও ব্রোঞ্জ জেতেন। তারপর বাকুতে বিশ্বকাপে গিয়ে ফের চোট পান। দোহাতে নামতেই পারেননি। নামতে পারেননি এশিয়ান গেমসেও। গত মার্চ থেকে আর কোন প্রতিযোগিতায় নামেননি দীপা। কবে ফিরবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। ডাক্তারদের কথায় হতাশ হলেও কোচের পাশে দাঁড়িয়ে দীপা বললেন, কোচ এবং ডাক্তাররা যা বলবেন তা তো মানতে হবেই। তবে আমি সুস্থ হয়ে ফিরবই। আন্তর্জাতিক পদক জেতার জন্য অনুশীলন করে যাব। ফিরে আমাকে পদক জিততে হবেই।
×