ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মালানের সেঞ্চুরি ম্লান করে জয় রাজশাহীর

প্রকাশিত: ১১:০২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

মালানের সেঞ্চুরি ম্লান করে জয় রাজশাহীর

মিথুন আশরাফ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিবিপিএল টি২০) দ্বিতীয় পর্বের শেষ ম্যাচে এসে আরেক সেঞ্চুরিয়ানের দেখা মিলেছে। এবার কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান সেঞ্চুরি হাঁকান। ৫৪ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় করা তার অপরাজিত ১০০ রানের টর্নেডো ইনিংসে রাজশাহী রয়্যালসের বিরুদ্ধে ১৭০ রান করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। রাজশাহী রয়্যালসের সামনে জিততে ১৭১ রানের টার্গেট দাঁড় হয়। এই রান অতিক্রম করতে গিয়ে আফিফ হোসেন ধ্রুবর ৭৬ রানের সঙ্গে রবি বোপারার অপরাজিত ৪০ ও আন্দ্রে রাসেলের অপরাজিত ২১ রানে ৭ উইকেটে জিতল রাজশাহী রয়্যালস। কুমিল্লার মালান সেঞ্চুরি করলেও জিতল রাজশাহী রয়্যালসই। পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানেও উঠে যায় রাজশাহী রয়্যালস। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী রয়্যালস। আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৭০ রান করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। মালান ব্যাটিং ঝড় তুলেন। যেখানে বাকি সব ব্যাটসম্যান ব্যর্থ, সেখানেই একাই ১০০ রানের ইনিংস উপহার দেন মালান। এক এক করে ৮ উইকেট পড়লেও মালান একাই দলকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান। একজন ব্যাটসম্যানও যেখানে ২০ রানের উপরে করতে পারেননি। মালান ছাড়া আর তিনজনই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেন। সেখানে মালান একাই তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছে যান। মালানকে ঠেকানোর সব চেষ্টা করেও পারেননি রাজশাহী রয়্যালস বোলাররা। শুরু থেকেই একটু করে বিরতি দিয়ে উইকেট পড়তে থাকে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের। দলের ২৬ রানে ওপেনার ভানুকা রাজাপাকশে (১০) আউট হন। এরপর দলের ৫২ রানে সাব্বির রহমান রুম্মন (৫), ১০২ রানে সৌম্য সরকার (২০), ১২৬ রানে দাসুন শানাকা (১১), একই সময়ে ইয়াসির আলী, ১৪৭ রানে মাহিদুল ইসলাম অংকন (৪), ১৫৯ রানে রবিউল ইসলাম রবি (৫), একই সময় সুমন খানও আউট হন। কিন্তু এক মালানকে ঠেকানো যায়নি। সতীর্থরা এক এক করে সাজঘরে ফিরলেও মালান উইকেটে অটুট থাকেন। আর ব্যাটিং ঝড় তুলেন। ৩৩ বলেই ৫০ রান নিজের স্কোরবোর্ডে জমা করে ফেলেন মালান। এবার লীগে সিলেট থান্ডারের ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার শনিবার সেঞ্চুরি করেন। ৫৩ বলে সেঞ্চুরি করার পর ৫৭ বলে ১০৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। এবার প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হন। মালান দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হওয়ার পথে থাকেন। তা করেনও। মালানকে ঠেকাতে নয় বোলার কাজে লাগান রাজশাহী রয়্যালসের অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস ও ফরহাদ রেজা ছাড়া একাদশের সবাই বোলিং করেন। কিন্তু এক ওপেনার মালানকেই ঠেকানো যায়নি। রাসেল, মোহাম্মদ ইরফান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শোয়েব মালিক, অলক কাপালী, আবু জায়েদ রাহি; কাউকেই ছাড় দেননি মালান। সবার বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। রাহির করা ১৭তম ওভারের প্রথম দুই বলে তো দুই ছক্কা হাঁকান মালান। শেষপর্যন্ত ৫৪ বলে সেঞ্চুরিও হাকিয়ে বসেন। ইনিংস শেষ হওয়ার এক বল আগে ১৯.৫ ওভারে গিয়ে এক রান নিয়ে সেঞ্চুরি করেন মালান। অপরাজিত থেকে মুজিব উর রহমানকে (২*) সঙ্গে নিয়ে দলকে ১৭০ রানে পৌঁছান। যেখানে দল ১৭০ রান করে, সেখানে মালান একাই অপরাজিত ১০০ রান করেন। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি২০তে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি (১০৩*) করেছিলেন মালান। এবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলে করলেন। টি২০তে এর আগে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। পঞ্চম সেঞ্চুরিটি করে ফেললেন মঙ্গলবার। চট্টগ্রাম পর্বেই দুটি সেঞ্চুরির দেখা মিলে গেল। এবার বিপিএলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩০০ রান করার সঙ্গে ফ্লেচারের পর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ানও হন মালান। তবে মালানের সেঞ্চুরিও ফিকে হয়ে পড়ে। দল না জিতলে কী আর সেঞ্চুরি দিয়ে কোন লাভ হয়। রাজশাহীর ইনিংসে দলের ৬০ রানে লিটন কুমার দাস (২৭), ৭০ রানে শোয়েব মালিক (১) আউট হওয়ার পর আফিফ ও বোপারা মিলে ৬২ রানের জুটি গড়েন। দলের ১৩২ রানে আফিফ আউটের পর আর কোন উইকেট হারায়নি রাজশাহী। বোপারা ও রাসেল মিলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৩ উইকেটে ১৭.৫ ওভারে ১৭১ রান করে জিতে যায় রাজশাহী। এই জয় পেয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানেও উঠে যায় রাজশাহী। স্কোর ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ইনিংস ১৭০/৮; ২০ ওভার; মালান ১০০*, সৌম্য ২০; ইরফান ২/২৩। রাজশাহী রয়্যালস ইনিংস ১৭১/৩; ১৭.৫ ওভার; আফিফ ৭৬, বোপারা ৪০*, লিটন ২৭, রাসেল ২১*; আল আমিন ২/৪৯। ফল ॥ রাজশাহী রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ ডেভিড মালান (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।
×