ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামায়াত ও তাদের সহযোগী এনজিও মদদ দিচ্ছে সন্ত্রাসে

প্রকাশিত: ১১:০২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

জামায়াত ও তাদের সহযোগী এনজিও মদদ দিচ্ছে সন্ত্রাসে

শংকর কুমার দে ॥ আর্তমানবতার আড়ালে ত্রাণ সাহায্যের অজুহাতে প্রকারান্তরে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে, জঙ্গী হামলায় লিপ্তদের অর্থ দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী ও তার সহযোগী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (এনজিও)। বাংলাদেশ ও ভারতে এই ধরনের কর্মকা-ে মদদদানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাউন্টার টেররিজম সম্পর্কিত সমন্বয়কারী সংস্থার কর্মকর্তারা। জামায়াতে ইসলামীর উৎপাতে ভারত ও বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাউন্টার টেররিজম সম্পর্কিত সমন্বয়কারী সংস্থার কর্মকর্তা রাষ্ট্রদূত নাথান সেলসকে ও সেলসকের তিন কংগ্রেসম্যান। গত ১ নবেম্বর যুক্ত স্বাক্ষরে প্রদত্ত পত্রে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে এই ধরনের তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাক্ষরকারী তিন কংগ্রেসম্যান হচ্ছেন জিম ব্যাংকস, চাক ফ্লিশম্যান এবং র‌্যান্ডি ওয়েবার। গত ১০ ডিসেম্বর কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষরিত এই পত্রটি পেয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থা। জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসে মদদদানের বিষয়টিতে কংগ্রেসম্যানদের উদ্বেগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাউন্টার টেররিজম সম্পর্কিত সমন্বয়কারী রাষ্ট্রদূত নাথান সেলসকে ও তিন কংগ্রেসম্যানের যুক্ত স্বাক্ষরে প্রদত্ত এক পত্রে জামায়াতে ইসলামীর উৎপাতে ভারত ও বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। গত ১ নবেম্বর কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাংকস, চাক ফ্লিশম্যান এবং র‌্যান্ডি ওয়েবার স্বাক্ষরিত পত্রটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রদত্ত পত্রে আবুল আলা মওদুদি কর্তৃক ১৯৪১ সালে ভারতবর্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণহত্যার মতো নৃশংসতা এবং উগ্রপন্থি-জঙ্গীবাদে লিপ্ত রয়েছে বলে যুক্তি-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে। এই পত্রে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিষিদ্ধ সংগঠনে অর্থ প্রদানকারী যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ইকনা (ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা)’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জামায়াতের পারপাস সার্ভ করছে ইকনা, যারা এইচএইচআরডি (হেল্পিং হ্যান্ডস ফর রিলিফ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট)র সহযোগী সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, মানবতার কল্যাণে কাজের আড়ালে প্রকারান্তরে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে, জঙ্গী হামলায় লিপ্তদের অর্থ দিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী পত্রে বিস্ময়ের সঙ্গে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুঃখজনক হলেও সত্য যে আন্তর্জাতিক ত্রাণ-সহায়তার নামে এরা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত ভারতে জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশের ইসলামী ছাত্রশিবির, পাকিস্তান-ভারত-কাশ্মীরে হিযবুল মুজাহেদীনকে অর্থ দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতির আলোকে কাশ্মীরসহ ভারত ও বাংলাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি অটুট রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার প্রতিপালনের লক্ষ্যে ইকনা, এইচএইচআরডি, জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের ওপর গভীর নজরদারি ও বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদে মদদদানের জন্যে এসব সংগঠনের অর্থ সহায়তা নিয়েও তদন্ত হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রুপ-লস্কর-ই-তাইয়্যেবা ও হিযবুল মুজাহেদীনের মতো সংস্থা ইকনা ও এইচএইচআরডি কী পরিমাণের অর্থ দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে-সে হদিসও উদঘাটিত হওয়া জরুরী। এজন্য কাউন্টারটেররিজম অফিসকে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগের উদাত্ত আহ্বানও জানিয়েছেন কংগ্রেসমেনরা।
×