ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন

নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীসহ সবাইকে নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পন্ন হবে। মনোনয়পত্র দাখিল থেকে শুরু করে নির্বাচনী প্রচার এবং ভোটের আগে পরে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি দেখভালের জন্য মঙ্গলবার থেকেই মাঠে নেমেছেন ১৭২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে মনোনয়নপত্র দাখিল বাছাই এবং প্রত্যাহার শেষে প্রতীক বরাদ্দ না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবে না। যারা ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণার জন্য পোস্টার ব্যানার সাটিয়েছেন তাদের নিজ দায়িত্বে আজকের মধ্যে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানান আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনও প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ কোনও ধরনের আগাম প্রচার চালাতে পারেন না। নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই তারা প্রচার চালাতে পারেন। কমিশন থেকে জারি করা পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে কোন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় অন্য কোন প্রার্থী বা কোন রাজনৈতিক দল বা অন্য কোন ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। মনোনয়পত্র জমার সময় কোন প্রার্থীর পক্ষে কোন ধরনের মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না। এগুলো করা হলে আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে। নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে বিলবোর্ডের ব্যবহার করা যাবে না। গত রবিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তফসিলের পর মঙ্গলবার থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। কোন আগ্রহী মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থী ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, মঙ্গলবার থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ণপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। ডিএনসিসি’র রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ইসির যুগ্ম-সচিব আবুল কাসেম ও ডিএসসিসি’র রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে মোঃ আবদুল বাতেনের কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র কিনতে হবে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ১০ জানুয়ারি। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল কর্তৃপক্ষের কাছে আপীল করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপীল কর্তৃপক্ষ হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী সিটি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কে হবেন তা রাজনৈতিক দল থেকে ঠিক করে কমিশনকে জানাতে হবে। তবে প্রার্থী ঠিক করার আগে দলের প্রার্থী মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কে হবেন তার নাম পদবী এবং নমুনা স্বাক্ষর কমিশনের জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আগামী শনিবারের মধ্যে দলের প্রার্থী মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম পদবী এবং নমুনা স্বাক্ষর ইসিতে জমা দেয়ার জন্য উপসচিব মোঃ আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্র জারি করে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী বা তাদের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র থাকবে যে, ওই প্রার্থীকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। প্রত্যয়ন পত্রটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে কোন দল থেকে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে সংশ্লিষ্ট দলের সকল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থী মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নাম, পদবী, নমুনা স্বাক্ষর একটি চিঠি তফসিল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পাঠাতে হবে। যে চিঠির অনুলিপি দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। মোঃ আতিয়ার রহমান জানান, মেয়র পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হয় বলে, কেবল এই পদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ক্ষেত্রেই দলগুলোকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ২২ ডিসেম্বর তফসিল দিয়েছে। তাই ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম জানানোর সময় শেষ হবে ২৮ ডিসেম্বর। এদিকে কমিশন থেকে জারি করা পরিপত্রে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী যোগ্যতা অযোগ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ঢাকার দুই সিটিতে প্রার্থী হতে হলে বর্তমান মেয়রদের পদত্যাগ করে প্রার্থী হতে হবে। অবশ্যই মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই পদত্যাগ করতে হবে। কাউন্সিলররা নিজেদের পদে থেকেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। বিশেষ পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, সম্ভাব্য কোন প্রার্থী ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূনতম দুই বছর কারাদ-ে দ-িত হলে সাজাভোগ শেষে পাঁচবছর সময় পর্যন্ত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কেউ দ-াদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করলে তা গ্রহণযোগ্য হলেও সাজা স্থগিত বা মওকুফ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন না।
×