ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কাউকেই ছাড় নয়;###;প্রভাবশালীদের প্রতিষ্ঠানও গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে;###;ব্যাপক জনসমর্থন

বুড়িগঙ্গার পর তুরাগ ॥ ঢাকার নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

বুড়িগঙ্গার পর তুরাগ ॥ ঢাকার নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার নদী দখলমুক্ত করতে কাউকেই ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। দখল উচ্ছেদে বুড়িগঙ্গার পর এবার তুরাগ নদে চলছে অভিযান। তুরাগে টানা পাঁচ দিনের উচ্ছেদ অভিযানে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া গেছে। গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে প্রভাবশালী হামিম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। ঢাকার অভিযানের ঢেউ লেগেছে রংপুরে। অন্যদিকে আপীল বিভাগ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণি পয়েন্ট থেকে কলাতলীতে পর্যন্ত নির্মাণ করা সকল স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। উচ্ছেদ আর দখল এই হচ্ছে গত কয়েক বছরের অভিযানের চিত্র। সরকার আর প্রশাসনের নাকের ডগায় এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ভূমিদস্যু বছরের পর বছরজুড়ে নদী গিলে খাচ্ছে। কোথায় অভিযান চালানো হলে আবার কিছুদিনের মধ্যেই পুরনো দখলদাররা উচ্ছেদকৃত জায়গা দখল করে নেয়। সরকার বদলের সঙ্গে শুধু দখলকারীর নাম বদল হয়। রাজনৈতিক প্রভাব আর ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না। তবে এবার সেই চিত্র বদলে গেছে। অবৈধ দখলদার যেই হোক না কেন তাকে কোন ছাড় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে উচ্ছেদের পর উদ্ধার করা জমি দখলমুক্ত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ঢাকা নদীবন্দরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ হাসনাত জনকণ্ঠকে বলেন, কে প্রভাবশালী কার কি পরিচয় আমাদের কাছে এসব বিবেচ্য বিষয় নয়। আমাদের সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি। উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে সেই অনুযায়ী নদীর জমি নদীকে ফিরিয়ে দিচ্ছি। একই সঙ্গে যারা নদীর পরিবেশ দূষণ করছে তাদেরকেও ছাড় দেয়া হচ্ছে না। দখলদারদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন এবং সহযোগিতা পাচ্ছি। সরকারের কোন পর্যায় থেকেই উচ্ছেদ অভিযানের প্রতি কোন চাপ নেই। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন নদী দখলের এই চিত্র শুধু ঢাকার নয়। সারাদেশের নদীগুলোকেই গিলে খেয়েছে ভূমিদস্যুরা। সরকারী বেহাত হওয়া এসব সম্পত্তি উদ্ধার করা গেলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে এসব জমি কাজে লাগানো যেত। কিন্তু ঢাকার বাইরে জাতীয় নদীকমিশন জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য সুপারিশ করে। যদিও জেলা প্রশাসন এসব বিষয়ে একেবারেই উদাসীন। জেলা প্রশাসকরা ঝামেলা এড়াতে সরকারী এসব সম্পত্তি উদ্ধারের চেষ্টা তো করেনই না। বরং কে এই জমি ভোগদখল করছে তারও কোন খোঁজ রাখেন না। সরকারী নতুন অধিগ্রহণ নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্পের জন্য তিন গুণ বেশি জমির দর দিতে হয়। কিন্তু সারাদেশের এসব সরকারী জমি উদ্ধার করা সম্ভব হলে শিল্পপার্ক, বিদ্যুত কেন্দ্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেত। এতে সরকারকে অতিরিক্ত ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করতে হতো না। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ সম্প্রতি বলেছেন, উচ্ছেদ অভিযান চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে। প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের নদ-নদী দখলমুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কোন প্রভাবশালীর রক্তচক্ষু উচ্ছেদ অভিযানে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। বুড়িগঙ্গায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময় কেরানীগঞ্জে একজন প্রতিমন্ত্রীর বাগান বাড়িও ভেঙে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এছাড়া অবৈধভাবে নদীর তীরে গড়ে ওঠা সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ এবং জরিমানা করা হয়। টঙ্গী থেকে আমাদের প্রতিনিধি নূরুল ইসলাম জানান, আশুলিয়া থেকে শুরু করে বাদাম, কামারপাড়া, টঙ্গী বাজার ব্রিজ, রাজাবাড়ি, পাগাড় এবং শীতলক্ষ্যা নদীর মোহনা পর্যন্ত তুরাগের দুই তীরে চলছে এমন নদী দখলের মহাউৎসব থামিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযান। তুরাগ নদ রক্ষা কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক জনকণ্ঠকে জানান, এখনই জোরালোভাবে তুরাগ নদ দখল দস্যুতা থামাতে হবে। নয়তো শহর বন্দরের ইতিহাস ঐতিহ্য মুছে যাবে। এদিকে মঙ্গলবার দিনব্যাপী রাজধানীর তুরাগ ও আশুলিয়া দিয়ে বয়ে যাওয়া তুরাগ তীরের দু’পাশে অবৈধভাবে দোকানপাট, বালুর গদি, সিএনজি পাম্প ও তিনটি শিল্পকারখানার অংশবিশেষ গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাবিবুর রহমান হাকিম। তুরাগ নদীর দু’পাশে দখল করে গড়ে ওঠা টিনশেড ঘর, বহুতল ভবনসহ ১৩১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় উচ্ছেদকৃত বালুর গদি নিলাম দিয়ে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়। এছাড়াও, চারটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৩ লাখ টাকা নগদ আদায় করা হয়। ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ৬ জনকে আটক করা হয়। যদিও বরাবরের মতোই যাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে তারা বলছেন, কোন নোটিস পাননি তারা। এদিকে, বিআইডব্লিউটিএ বলছে, নদী দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদে কোন নোটিসের প্রয়োজন নেই। নদী ও খাল উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএর এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। উচ্ছেদ অভিযান চলে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রথমে সাভারের আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কাঁচা-পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পরে, তুরাগের বালুর গদি উচ্ছেদ করে বালুর গদিসহ নিলাম দিয়ে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়। অভিযানের শেষ সময়ের দিকে টঙ্গীর তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের একাংশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এ সময় অবমুক্তকৃত তুরাগের ৩ একর ভূমি উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটিএ। হামিম গ্রুপের একটি ওয়াশিং প্লান্ট ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এদিকে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জনা গেছে, তুরাগে ময়লার ভাগাড়, ভরাট, অযতœ-অবহেলা, আর যথেচ্ছ ব্যবহার তথা নানাবিধ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে তুরাগ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। নদী তীরে ভূমি আগ্রাসন, শিল্পবর্জ্য ও বালু ব্যবসা কেড়ে নিচ্ছে তুরাগের প্রাণ। রাজউকের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রভাবও পড়েছে নদীটির ওপর। এতে কোথাও কোথাও ভূমিদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তুরাগ নদ গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার প্রবহমান বংশী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নে এসে দুটি ধারায় বিভাজিত হয়েছে। এর মূল শাখাটি আমিনবাজার হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়েছে। অন্যদিকে তুরাগের আরেকটি শাখা বিরুলিয়া-আশুলিয়া হয়ে পূর্ব দিকে রাজধানীর তুরাগ, উত্তরা ও উত্তরখান থানা এবং গাজীপুরের টঙ্গী শহর ঘেঁষে বালু নদীর সঙ্গে গিয়ে মিশেছে। নদীটির টঙ্গী অংশের এই শাখা তুরাগ নদ হিসেবে পরিচিত হলেও একসময় কথিত সোনাভানের শহরের টঙ্গী কহর দরিয়া নামেও এর পরিচিতি ছিল। কোন রকমে বয়ে যাচ্ছে মৃতপ্রায় তুরাগ। অন্যদিকে গাজীপুরের কড্ডা ব্রিজ এলাকার কাশিমপুর হয়ে তুরাগের যে মূলধারাটি বিরুলিয়া এলাকায় মিশেছে তার অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন। এসব স্থানে নদীগর্ভ কিছুটা চওড়া হলেও পর্যাপ্ত পানি নেই। যেন বিষ প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তুরাগতীরের অন্তত চারটি জায়গায় রয়েছে ইটভাটার দৌরাত্ম্য। এসব ইটভাটা কোথাও দখল করেছে নদীর জমি, আবার কোথাও কেটে নিচ্ছে নদীপারের মাটি। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, তুরাগ নদের পানি প্রবাহের দৈর্ঘ্য ৭১ কিলোমিটার ও গড় প্রস্থ ৮২ মিটার। এই নদীর গভীরতা ১৩.৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন ১ হাজার ২১ বর্গ কিমি। সারা বছরই এর প্রবাহ থাকে। যদিও জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত পানিপ্রবাহ কম থাকে। তখন মিরপুরে পরিমাপ ১২৪ ঘনমিটার/সেকেন্ড এবং গভীরতা হয় ৪.৫ মিটার। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে আগস্টে এই প্রবাহ বেড়ে ১১৩৬ ঘনমিটার/ সেকেন্ডে দাঁড়ায়। তুরাগ নদের নিম্নাংশে জোয়ার-ভাটার প্রভাব রয়েছে। পাউবো কর্তৃক তুরাগ নদের প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ২৫। এটি ঢাকা শহরের সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া ৪টি নদীর মধ্যে ১টি। আপীল বিভাগের আদেশ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণি পয়েন্ট থেকে কলাতলীতে যে সব স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে তা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। রায়ে আপীল বিভাগ বলেছেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমুদ্র তীরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সরকারকে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন করে কাউকে যাতে সমুদ্র তীরে লিজ না দেয়া হয় সে বিষয়ে সরকারকে নজর রাখতে হবে। এই স্থাপনাগুলো ১৯৯৯ সালের পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণি পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত লিজ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগের সাত সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেয়। এ সংক্রান্ত আপীল বিভাগের রায়টি সোমবার সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। রায়ের বিষয়ে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এ রায় একটি মাইলফলক, অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করা হবে। এ রায় মানা না হলে, সরকার আদালত অবমাননার মামলা করবে। সুপ্রীমকোর্টের এই রায়ের ফলে সৈকতের জিলেনজা মৌজায় গড়ে ওঠা ২০টিরও বেশি থ্রি-স্টার ও ৫ স্টার মানের হোটেল এবং ছোট বড় অনেক মোটেল ভেঙ্গে ফেলতে হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। যার সৌন্দর্যে মুগ্ধ দেশী-বিদেশী পর্যটক। এই সমুদ্র সৈকতের ঝিলংজা মৌজায় গড়ে উঠেছে প্রায় ২০টি থ্রি স্টার ও ফাইভ স্টার মানের হোটেল। রয়েছে আরও অসংখ্য ছোটবড় হোটেল মোটেল। ১৯৯৯ সালে সৈকতের লাবণি-কলাতলী পর্যন্ত এলাকা প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। সেই গেজেট অমান্য করে লিজ দেয়ায় এ নিয়ে হাইকোর্টে করা পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর হাইকোটের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপীলের রায়ের রিভিউয়ে এই রায় দেয়া হয়। ১৯৯৯ সালের পর নেয়া হোটেল সাইমন, সি গালসহ বড় বড় কিছু হোটেলের লিজ বাতিল করেছেন আপীল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালত রায়ে গুঁড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে এসব স্থাপনা। এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কক্সবাজার ঝিলংজা মৌজার সমুদ্র সৈকতে লাবণি পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত এলাকায় হোটেল মোটেলসহ অবৈধ সব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। এ রায়ে আদালত বলেছে, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমুদ্র তীরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সরকারকে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। রংপুরে উচ্ছেদ অভিযান রংপুরে নদী ও খাল দখলমুক্ত এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত সোমবার দুপুর থেকে নগরীর পার্কের মোড় এলাকার খোকসা ঘাঘট নদীর আশপাশে এ অভিযান চালানো হয়। রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সকল জেলাতে নদী ও খাল দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। রংপুরেও নদী-খাল উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। তিনি বলেন, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকায় নদী ও খাল দখলে রাখা ১৬টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করেছি। সবই উচ্ছেদ করা হবে। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে রংপুরের শ্যামা সুন্দরী খাল ও তিস্তা নদী দখলমুক্ত করা হবে। নদী-খাল উদ্ধারে অবৈধ দখলদারদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। তুরাগ নদ ঘেঁষে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সাভার থেকে সংবাদদাতা জানান, রাজধানীকে ঘিরে থাকা নদ-নদীগুলোর দু’পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ৫ম দিনে তুরাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন বিআইডব্লিউটিএ। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তুরাগ নদ ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা একেএম আরিফ উদ্দিন। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ’র অন্যান্য কর্মকর্তা, র‌্যাব, পুলিশ ও নৌ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন জানান, তুরাগ নদ ও এর তীর ঘেঁষে ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা টিনশেড ঘর, বহুতল ভবনসহ প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযানে হামিম গ্রুপের টেক্সটাইল মিল ও আনন্দ গ্রুপ নামে দুইটি প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তবে উচ্ছেদ অভিযানের এক পর্যায়ে সীমানা জটিলতার কারণে আনন্দ গ্রুপের একটি বিলাসবহুল ভবন ভাঙ্গা নিয়ে অভিযান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। রাজউক, বিআইডব্লিউটিএ কারও অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও ভবনটি ভাঙ্গা যায়নি। তবে পরবর্তীতে ওই ভবনটিও ভাঙ্গা হবে বলেও জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর ওই কর্মকর্তা।
×