ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল নির্ধারণ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল নির্ধারণ হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ খাতভিত্তিক উৎপাদন বাড়াতে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে রফতানির শীর্ষ তিন পণ্য তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার এবং চামড়ার উৎপাদন বাড়াতে সর্বোচ্চ জোর দিচ্ছে সরকার। গত কয়েক মাস ধরে পোশাক রফতানি নেতিবাচক ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রবৃদ্ধি কমে গেছে এ খাতের। এছাড়া চামড়া রফতানিও আশাব্যঞ্জক নয়। এ অবস্থায় ক্রেতা আকর্ষণে এই তিনখাতে গুণগতমান সমৃদ্ধ পণ্য উৎপাদন করার কৌশল নেয়া হচ্ছে। রফতানির ৮০ শতাংশ অর্জিত হয় পোশাকখাত থেকে। ফলে পোশাকখাতের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে নতুন সঙ্কটের মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা। মঙ্গলবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে সভাকক্ষে জাতীয় উৎপাদনশীলতা পরিষদের (এনপিসি) সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। দেশের শিল্প ও সেবাসহ বিভিন্নখাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে কর্ম-কৌশল নির্ধারণের জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়। ওই সময় শিল্পমন্ত্রী জানান, উৎপাদন বাড়াতে হবে। এজন্য জাতীয় উৎপাদনশীলতা মাস্টার প্লান বাস্তবায়ন হওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরী। তিনি বলেন, শিল্পের পাশাপাশি সেবাখাতের উৎপাদনও বাড়াতে চায় সরকার। ওই সভায় শিল্পসচিব মোঃ আবদুল হালিম, শিল্প, বাণিজ্য, পাট ও বস্ত্র, কৃষি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও তথ্য যোগাযোগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, বিদ্যুত বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা, বেপজা, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই, বিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, নাসিব, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি, বাংলাদেশ জুট মিলস্ এ্যাসোসিয়েশন, এনপিও, বাংলাদেশ এমপ্লায়ার্স ফেডারেশনের প্রতিনিধিসহ কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন খাত ও সাব-সেক্টরে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শীঘ্রই পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ, নিটওয়্যার খাতের সংগঠন বিকেএমইএ এবং লেদার গুডস্ এ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) এর সঙ্গে এনপিও’র সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। এর ফলে দেশের তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ও চামড়া শিল্পখাতে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এদিকে, অর্থনীতির প্রাণ কৃষিখাতে উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। মাছ. মাংস, ধান ও শাক-সবজির মতো নিত্যপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম সারিতে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এ কারণে গ্রাম পর্যায়ে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে উৎপাদনশীলতা বিষয়ক ধারণার প্রসারে একটি যুগোপযোগী প্রামাণ্য অনুষ্ঠান নির্মাণ ও তা বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত প্রচার করা হবে। উৎপাদনশীলতা বিষয়ক এ অনুষ্ঠানে শিল্প, কল-কারখানা, কৃষি খামারসহ সকল সেক্টরে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কৌশল এবং এর সুবিধা তুলে ধরার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এটি যাতে দূর শিক্ষণের ভূমিকা পালন করতে পারে, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি নির্মাণের তাগিদ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সভায় শিক্ষা কারিকুলামে উৎপাদনশীলতা বিষয়ক কনটেন্ট অন্তর্ভুক্তি, নারী উদ্যোক্তা সংগঠনের সঙ্গে এনপিও’র সংঝোতা স্মারক সই, জাতীয় উৎপাদনশীলতা মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন, এনপিও’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একই সঙ্গে খাতভিত্তিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোপূর্বে গঠিত কমিটিগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনে কমিটি পুনর্গঠনের তাগিদ দেয়া হয়।
×