ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশসহ ২০টি দেশের ৪৫০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। আসছে বছরের প্রথম দিন থেকেই বসবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৫ তম আসর। নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু করতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এলক্ষে দিন-রাত চলছে বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি বলছে, মেলার প্রস্তুতির ৮৫-৯০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ঠিক সময়েই শেষ হবে পুরো কাজ। এবার বাংলাদেশসহ ২০টি দেশের ৪৫০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ সালের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি পর্দা উঠবে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বর্তমান সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর আগের দিন ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে মেলার পুরো আয়োজন সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে এবারের বাণিজ্য মেলাকে দৃষ্টি নন্দন করতে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে বর্তমান সরকারের চলমান মেঘা প্রকল্প সন্নিবেশ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মূল গেট নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থাপত্য অধিদফতরের নক্সায় গণপূর্ত বিভাগ এ কাজটি করছে। এরইমধ্যে ফুড স্টল, সংরক্ষিত সাধারণ স্টল, ফরেন প্যাভিলিয়ান, মিনি প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার স্টল লটরির মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইপিবি’র সূত্র জানায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তরাঁ ও স্টলের সংখ্যা ৪৫০টি। গত বছর স্টল সংখ্যা ছিল ৫৫০টি। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়ন ৫৫টি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘মেলার প্রস্তুতি চলছে। বাকি কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য সম্মতি দিয়েছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিএফটিআই) উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীকে সামনে রেখে মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নটি নতুন আঙ্গিকে নতুন ডিজাইনে নির্মাণ করা হচ্ছে।’ স্থাপত্য অধিদফতরের নক্সায় গণপূর্ত বিভাগ এটি নির্মাণ করছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া এবারের মেলার প্রধান ফটক তৈরি করা হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে। এ ফটকে সিরামিকসের কাজ করছিলেন মোঃ জুয়েল। তিনি বলেন, ‘স্মৃতিসৌধের আদলে ফটক হচ্ছে। বেশকিছু দিন ধরে এর কাজ চলছে। আজকে থেকে এখানে সিরামিকসের কাজ শুরু করেছি। এ কাজ করতে প্রায় এক সপ্তাহ লাগতে পারে।’ ইপিবি’র পরিচালক এবং মেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, এবারের মেলায় ভিন্ন আঙ্গিক আনার চেষ্টা করা হয়েছে। মেলার প্রধান ফটকেও আসবে পরিবর্তন। এছাড়া মেলার ভেতরে দর্শনার্থীদের জন্য খোলামেলা জায়গা রাখা হবে। মেলায় আসা মানুষেরা যেন পরিবার ও পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারেন। আর মেলার দুই প্রান্তে সুন্দরবনের আদলে ইকো পার্ক করা হবে। থাকবে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি), এর মাধ্যমে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন সহজেই খুঁজে বের করতে পারবেন। মেলা চলাকালে কোন সাপ্তাহিক ছুটি থাকছে না। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে পূর্ণ বয়স্ক ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৮টি প্যাভিলিয়ন ও ৬টি মিনি প্যাভিলিয়ন রিজার্ভ রাখা হয়েছে। আবদুর রউফ বলেন, ‘অতীতের মতো এবারের মেলায়ও স্বাগতিক বাংলাদেশসহ চীন, ব্রিটেন, ভারত,পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, রাশিয়া, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পণ্য বিক্রি ও প্রদর্শনের জন্য অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মেলায় দুটি মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক, একটি মেডিক্যাল সেন্টার ও ব্যাংকের পর্যাপ্ত এটিএম বুথ থাকবে। পলিমার পণ্য, কসমেটিকস, হারবাল, প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী, ফার্নিচার, রেডিমেড গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহার সামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পণ্যের স্টলও থাকবে। এবছরও বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করবেন। থাকবে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা। একইসঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে মেলা প্রাঙ্গণে টহল দেবেন।
×