ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এনামুল হক

জেরুজালেমের মাটির নিচে প্রাচীন পথ

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

জেরুজালেমের মাটির নিচে প্রাচীন পথ

আধুনিক জেরুজালেমের ১৬ ফুট মাটির নিচে দুই হাজার বছরের পুরনো একটি পাকা রাস্তা আবিষ্কৃত হয়েছে। পাথরের তৈরি এই রাস্তাটি সম্ভবত তীর্থযাত্রীরা ব্যবহার করত। জেরুজালেম শহরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ৬ হাজার বছরেরও প্রাচীন ইতিহাস। শহরটি বর্তমানে ইসরাইলে অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে পবিত্র স্থানগুলোর একটি বলে একে গণ্য করা হয়। জেরুজালেমের নাম ইসলাম, ইহুদী ও খ্রীস্টান ধর্মের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে ও গভীরভাবে জড়িত। প্রাচীনকাল থেকে জেরুজালেমকে নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ কম হয়নি। এর ইতিহাস ৩ হাজার বছরের উপাসনা, দখলদারী, ধ্বংসলীলা ও পুনর্নির্মাণের ইতিহাস। এটি নানা নামে পরিচিত। হাইরো সোলাইমা, ইসারুসাইইম, সিটি অব ডেভিড, এওলিয়া ক্যাপিটোলিনা, আল বুদস প্রভৃতি। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জেরুজালেমকে তার রাজধানী ঘোষণা করে। আর পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যত রাজধানী বলে দাবি করে ফিলিস্তিনীরা। ১৯৬৭ সালের ৬ দিনের যুদ্ধের সময় ইসরাইল পশ্চিম তীর এবং ওল্ড সিটিসহ পূর্ব জেরুজালেমকে জর্দানের কাছ থেকে দখল করে নেয়। জেরুজালেমের ইতিহাসের মুসলমান অধ্যায়গুলো মুসলিম জাতীয়তাবাদীদের কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আবার ইহুদী অধ্যায়গুলো ইসরাইলী জাতীয়তাবাদীদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ বছরেরও আগে ব্রোঞ্জ যুগে জেরুজালেম ছিল ক্যালানাইট ও জেবুসাইট সম্প্রদায়ের বসতি। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ৫৩৮ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত লৌহযুগে সেখানে ছিল ইহুদী, আর্মেনীয় ও ব্যাবিলনীয়দের বাস। ৫৩৮ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৬৩ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত এটি ছিল পারসিক, হেলেনীয় ও হাসামানীয়দের দখলে। ৬৩ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৩২৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এখানে হেবোডীয় ও রোমানরা রাজত্ব করে। ৩২৪ থেকে ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জেরুজালেম ছিল বাইজেনটাইন শাসনাধীনে। ৬৩৮ থেকে ১০৯৯ সাল পর্যন্ত ছিল ইসলামের প্রথম যুগের শাসকদের যথা উমাইয়া আব্বাসী ও ফাতেমীদের, ১০৯৯ থেকে ১১৮৭ পর্যন্ত ক্রুসেডার তথা খ্রীস্টানদের দখলে। ১১৮৭ থেকে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত ছিল আইয়ুবী ও মামলুকদের শাসন, ১৫১৭ থেকে ১৯১৭ পর্যন্ত অটোমান শাসন, ১৯১৭ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত ছিল ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীন, ১৯৪৮ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত জর্দানের নিয়ন্ত্রণে এবং ১৯৬৭ থেকে আজ অবধি ইসরাইলী দখলে। জেরুজালেমের পুরনো নগরী চারটি কোয়ার্টার বা মহল্লায় ভাগ করাÑ আর্মেনীয়, খ্রিস্টীয়, ইহুদী ও মুসলিম। জেরুজালেমের বিভিন্ন স্থানে খনন কাজ হয়েছে। আলোচ্য খনন কাজটি হয়েছে মুসলিম কোয়ার্টারে। এই খনন কাজের মধ্য দিয়ে মাটির তল থেকে সত্য বেরিয়ে আসবে বলে প্রতœতাত্ত্বি¡কদের ধারণা। কিন্তু কোন সত্য ও কাদের পক্ষের সত্য-সেই প্রশ্ন জেরুজালেমকে তাড়া করে ফিরেছে। জেরুজালেম নগরী তিনটি বড় একেশ্বরবাদী ধর্মমতের কাছে অতি মুখ্য। পৃথিবীতে এমন স্থান খুব কমই আছে, যেখানে প্রতœতাত্ত্বি¡ক কাজের জন্য কোঁদাল চালানোমাত্র দক্ষযজ্ঞ এমনকি আঞ্চলিক যুদ্ধও বেঁধে যেতে পারে। যাহোক, বর্তমান খনন কাজ চালানো হয় আরব এলাকায়। খনন কাজ চালাতে গিয়ে টানেল বা সুড়ঙ্গ করা হয়। সুড়ঙ্গের মাটির দেয়ালের গায়ে আছে টানা সাদা চিহ্ন, যা প্রতœতাত্ত্বিকদের মতে রোমান শাসনামলের শেষদিকে মানুষ কোথায় বসবাস করত তারই ইঙ্গিত বহন করে। দেয়ালের মেঝের কাছে কিছু ওপরে করা ভবনের নিদর্শন আছে, যা কিনা ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমানদের হাতে জেরুজালেম ধ্বংসের স্বাক্ষর বহন করে। নতুন খনন করে প্রাপ্ত ২ হাজার বছরের পুরনো পাথর বাঁধানো রাস্তাটি দিয়ে এক সময় হাজার হাজার তীর্থযাত্রী আসা-যাওয়া করত। এই প্রাচীন সড়কের ১৬ ফুট ওপরে আজ ২০ হাজার আরবের বাস। এখানে আছে সিটি অব ডেভিড পার্ক। এটা বহুল জনপ্রিয় এক পর্যটনকেন্দ্র, আবার একই সঙ্গে প্রাচীন ও আধুনিক রাজনীতির উত্তপ্ত মিলনকেন্দ্র। প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদরা মাটির নিচে এতদিন চাপা পড়ে থাকা ও নতুন উন্মোচিত এই প্রাচীন সড়কটিকে হাঁটা-চলার পথ বলে অভিহিত করেছেন। আবার কেউ বলেছেন তীর্থযাত্রীর পথ। এই পথ বা সড়ক নির্মাণের কাজ রোমানরা ২০ খ্রিস্টাব্দে শুরু করে এবং প্রায় ৩০ খ্রিস্টাব্দে রোমান গবর্নর পন্টিয়াস পাইলেটের আমলে শেষ হয়। ওই স্থান থেকে পাওয়া প্রায় এক শ’টি মুদ্রার ওপর সম্প্রতি পরিচালিত গবেষণা থেকে ওই সময় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, পন্টিয়াস পাইলেটের নির্দেশেই যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারা হয়েছিল। তবে রোমানদের কঠোর পরিশ্রমে গড়া সমস্ত কাজই ৪০ বছর পর ৭০ খ্রিস্টাব্দে তাদেরই হাতে জেরুজালেম ধ্বংসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে চাপা পড়ে গিয়েছিল। ধ্বংসাবশেষ ও ধুলাবালির নিচে চাপা পড়ে থাকা পাথর বিছানো এই হাঁটা পথকে অনেকে তীর্থযাত্রীর পথও বলে থাকে, যা এখন সুন্দরভাবে সংরক্ষিত। প্রতœতাত্ত্বি¡ক আরে লেভির মতে, রোমান শাসনাধীন জেরুজালেমের প্রথমদিকের এই পথটা ছিল টাইরোপিয়ান উপত্যকার প্রাকৃতিক টপোগ্রাফির প্রতিচ্ছবি। এর উৎপত্তি বা যাত্রা শুরু হয়েছিল সিলোয়াম বা সিলওসানের জলাধার থেকে। এটাই ছিল প্রাচীন এই নগরীর অন্যতম সর্ববৃহৎ জলাধার, যা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের কাজে ব্যবহার হতো। এই জলাধার বা স্নানাগার থেকে পরিশুদ্ধ হয়ে লোকে টেম্পল মাউন্টে যেত। ঐতিহ্যগতভাবে টেম্পল মাউন্টই হলো সেই স্থান, যেখানে যিশু একজন অন্ধকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পথটা চলে গেছে উত্তর দিকে, পৌঁছেছে আজকের ওয়েস্টার্ন ওয়ালের পাশের প্লাজায়, যাকে বলা হয় রবিনসন আর্ক। সবশুদ্ধ রাস্তাটা প্রায় দুই হাজার ফুট লম্বা ও প্রায় ২০ ফুট চওড়া। রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে ছিল দোকানপাট, যেগুলো সম্ভবত ছিল দোতলা সমান উঁচু। তার আগে তীর্থযাত্রী ও রোমানরা যখন এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেত, তখন ওটা ছিল মুক্তাঙ্গন। এই পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়া হতো টেম্পল মাউন্টের দিকে। আজ ভূগর্ভের এই হাঁটা পথটা একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে ধারণ করে রাখা হয়েছে। সাপোর্ট বিম ও অন্যান্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার দ্বারা একে এমনভাবে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে এখন সুড়ঙ্গের ওপরে যেসব ঘরবাড়ি রয়েছে, সেগুলো লোকজনসমেত যেন ধসে না পড়ে। ভূ-গর্ভস্থ এই রাস্তাটি এখনও পর্যন্ত সাধারণের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি এবং কয়েক বছরের মধ্যে করাও হবে না। কারণ খনন কাজ এখনও চলছে। জেরুজালেমে প্রতœতাত্ত্বিক খনন কাজ এটাই প্রথম নয়। আগেও হয়েছে। ১৯৯৬ সালে ইসরাইল সরকার ওল্ড সিটির মুসলমান অধ্যুষিত এলাকার পশ্চিম প্রাচীর বরাবর খনন কাজ শুরু করলে সহিংস বিক্ষোভ হয় এবং তাতে ওই এলাকার প্রায় ১২০ জন মারা যায়। ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস অভিযোগ করেছেন যে, জেরুজালেমে এ ধরনের খনন কাজ ১৪০০ বছরের মুসলিম ঐতিহ্যকে ধামাচাপা দেয়ার উদ্যোগের অংশ। এখানে প্রতœতত্ত্ব¡কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। বস্তুত রাজনীতি, ধর্ম ও প্রতœতত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে এখানে পরস্পরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। ৩২৭ খ্রিস্টাব্দে বাইজেনটাইনের স¤্রাজ্ঞীর নির্দেশে এই এলাকায় একটি রোমান মন্দির ধ্বংস করা হয়। সেখানকার মাটি খুঁড়ে তিনটি ক্রুশ এলোমেলো অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি কাষ্ঠদ-ে যিশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল বলে কনস্ট্যানটাইন দি গ্রেটের এই বর্ষীয়ান মাতা ঘোষণা করেন। অচিরেই ওই স্থানটির ওপর একটি গির্জা নির্মিত হয়। প্রায় ১৫০০ বছর পর এক ফরাসী প-িত ও রাজনীতিক নগরীর প্রথম প্রতœতাত্ত্বিক খনন কাজ করেন, যেটাকে কেন্দ্র করে আরেক উন্মাদনা সৃষ্টি হয়। ১৮৬৩ সালে তিনি কয়েকটি গম্বুজের একটি কমপ্লেক্স খনন করে বের করেন। এতে স্থানীয় ইহুদীরা ক্ষেপে গিয়ে রাতের আঁধারে খনন এলাকাটি মাটি দিয়ে ঢেকে ফেলে। জেরুজালেমের ওল্ড সিটিতে আছে ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদ বা বায়তুল মোকাররম। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর ১৭ মাস পর্যন্ত মহানবী মুহম্মদ (দ) আল-আকসা মসজিদের দিকে কেবলামুখী হতেন। পরে তার ওপর ওহি নাজেল হলে তিনি মক্কার কাবা শরীফের দিকে কেবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় শুরু করেন। একবার তিনি মক্কা থেকে বোরাকে আল-আকসায় আসেন এবং সেখানে নামাজ আদায় করে মিরাজ শরীফে যান। আল-আকসার আধুনিক কাঠামোর নির্মাণ কাজ ৭১৫ সালে সম্পন্ন হয় এবং পরে তা পুনর্নির্মিত হয়। জেরুজালেমের অন্যান্য স্থাপনার মধ্যে রয়েছে টাওয়ার অব ডেভিড সিটাডেল। হাসেমোনীয় ইহুদী ও হেরোড দি গ্রেটের নির্মিত পূর্বেকার টাওয়ারগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে মামলুক ও অটোমানদের দুর্গ। আড়াই হাজার বছর ধরে নগরীর প্রতিরক্ষায় এই স্থানটি ভূমিকা রেখেছিল। নগরীকে রক্ষায় যেসব গড় বা দুর্গ প্রাচীর নির্মিত হয়েছিল সহ¯্র বছরের মধ্যে যেগুলো ধ্বংস ও পুনর্নির্মাণ দুটোই হয়েছে। আইয়ুবী মুসলমানরা ১২১৯ সালে এই দুর্গ প্রাচীরগুলো ধ্বংস করে দেয়, যাতে করে জেরুজালেম আবার ক্রুসেডারদের হস্তগত হলে নগরীর পুনর্দখল করা সহজ হয়। অটোমান যুগের কেল্লাগুলো এখন ওল্ড সিটির ২২৪ একর জায়গা জুড়ে ঘেরা। নগরীর খ্রীস্টান মহল্লায় দাঁড়িয়ে আছে চার্চ অব দি হলি সেপুলখার। রোমান অধ্যায়ে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই স্থানেই যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল এবং এখান থেকেই তার পুনরুত্থান ঘটেছিল বলে কথিত আছে। জেরুজালেমের আর্মেনীয় মহল্লার একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন নিয়া চার্চ। বাইজেনটাইন স¤্রাট জাস্টিনিয়ান ৫৪৩ সালে এটি চালু করেন। সৌন্দর্য ও গুরুত্বের দিক দিয়ে এটি সা¤্রাজ্যের অন্যান্য স্থাপনাকে ছাড়িয়ে যেত। পরে অব্যবহৃত থেকে থেকে কয়েক শতাব্দী পর ওই স্থানটি নতুন নতুন নির্মাণ কাজের দ্বারা ছেয়ে যায়। বেথেসদার জলাধার। প্রতœতাত্ত্বিকদের হিসেবে সেন্ট এ্যান চার্চের নিচের ও আশপাশের এলাকার এই স্থাপনা কাঠামোগুলো রোমান, বাইজেনটাইন ও ক্রুসেডার যুগের। ভায়া ডোলোরাসা নামের রাস্তাটি লায়ন্স গেট থেকে শুরু হয়ে চলে গেছে চার্চ অব দি হোলি সেপুলখার-এ। যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্য এই পথ দিয়েই নেয়া হয়েছিল বলে বর্ণিত আছে। ওয়েস্টার্ন ওয়াল টানেলস। হেরোডের টেম্পল মাউন্টের পথ ধরে এগিয়ে গেলে দর্শনার্থীরা ওয়ারেন গেট দেখতে পাবেন, যা এখন টেম্পল মাউন্টের এলাকার পবিত্রতম অংশের নিকটতম স্থান। ডোম অব দি রক একটা পবিত্র স্থান হিসেবে পরিগণিত, যেখানে হযরত ইব্রাহিম তার পুত্রকে কোরবানি দিতে উদ্যত হয়েছিলেন। ক্রুসেডাররা এটিকে একটি গির্জায় রূপান্তরিত করেছে, যার নাম টেম্পলাম ডোমিনি। আল মারোয়ানি মসজিদ। এখন এটা মসজিদ হলেও এর সাপোর্ট আর্চগুলো হেরোডীয় যুগে উদ্ভাবিত। ক্রুসেডের সময় টেম্পলার নাইটস একে সোলোমনের আস্তাবল নাম দিয়েছিল। জেরুজালেমে দেড় শ’ বছর ধরে বিভিন্ন সময় ও স্থানে যেসব জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছে, তাতে পুরনো ধ্যান-ধারণা, বিশ্বাস ও কল্পকথা সব ওলোটপালট হয়ে যায়। প্রতœতাত্ত্বিকদের অনেকেই রাজা সোলোমনের বিশাল সা¤্রাজ্যের জাঁকজমকময় রাজধানীর যে বর্ণনা বাইবেলে আছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন। ওই যুগের প্রতœতাত্ত্বিক কোন আবিষ্কারে এই বিখ্যাত রাজণ্যের উল্লেখ পর্যন্ত নেই। একদম প্রথমদিকের জেরুজালেম ছিল ছোটখাটো সুরক্ষিত পাহাড়ী শহর- তার বেশি কিছু নয়। তথাপি এসব খনন কাজে কিছু কাদামাটির সিলমোহর পাওয়া গেছে, যাতে এমন কিছু নাম উৎকীর্ণ, যেগুলো বাইবেলে বর্ণিত আছে। প্রত্নতাত্ত্বিক কাজের মধ্য দিয়ে স¤্রাজ্ঞী হেলেনার এই দাবি সমর্থিত হয়েছে যে, যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারার পর যেখানে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল, সেটি এখন চার্চ অব দি হলি সেপুলখার-এর মধ্যে। জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক এশিয়াট মাজার তো এমনও দাবি করেছেন যে, তিনি জেরুজালেমের প্রথম ইহুদী শাসক রাজা ডেভিডের প্রাসাদের সন্ধান পেয়েছেন, যদিও সেই দাবির যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ আছে। সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
×