ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে ধানের দাম কম থাকায় হতাশ কৃষকরা

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

আমতলীতে ধানের দাম কম থাকায় হতাশ কৃষকরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলীতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় আশাবাদী হলোও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় হতাশ কৃষকরা। কৃষকরা জানান, ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ায় সম্ভবনা নেই। একর প্রতি গুনতে হবে ৩-৪ হাজার টাকা লোকসান। সরকারীভাবে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবি জানিয়েছেন তারা। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে যে পরিমান ধান ক্রয় করবে তাতে বাজারে এর কোন প্রভাব ফেলবে না বলে জানান ধান ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর আমতলীতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ১১ হাজার ৯৬০ হেক্টর আর স্থানীয় জাতের ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর। এক হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা গড়ে পৌনে চার মেট্রিক টন। এ লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে বলে জানান কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম। পৌষ মাসের শুরু থেকে কৃষকরা পুরোদমে ধান কাটা শুরু করেছে। বর্তমানে তারা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এদিকে আমতলীতে সরকারীভাবে ২৬ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৯১ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করবে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রবিন্দ্রনাথ বিশ্বাস। সরকারী হিসেবে প্রতিমণ ধান ১০৪০ টাকা হলেও বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ওইধান প্রতিমণ বিআর-১১ ধান ৪৯০, বিআর- ২৩ ধান ৫২০ ও গুটি স্বর্ণ ধান ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় হতাশ কৃষকরা। কৃষকরা জানান, এক একর জমিতে জমির দাম, শ্রমিক মজুরী, নিরানী, সার-ঔষধ ও লাঙ্গল খরচসহ উৎপাদন খরচ প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ধান উৎপাদন হবে প্রায় ৩৫-৪০ মণ। বাজারে প্রতিমণ ধান ৪৯০-৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ওই জমিতে আয় হবে ১৮-২০ হাজার টাকা। কৃষকরা আরও জানান, টাকা ও শ্রম বিনিয়োগ করে যা আয় হবে তা দিয়ে পোষায় না। এতে লোকসান গুনতে হবে। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারলে লাভবান হওয়া যেত। বাজারে সরকারী ভাবে ধান ক্রয় না করায় কৃষকরা ন্যায্য মুল্য পাচ্ছে না। ফরিয়ারা ইচ্ছা মাফিক মূল্যে ধান ক্রয় করছে। আর নিরুপায় হয়ে তাদের দামেই ধান বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা। কৃষকরা দ্রুত সরকারী ভাবে ধান ক্রয়ের দাবী জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে যে পরিমান ধান ক্রয় করবে তাতে বাজারে এর কোন প্রভাব ফেলবে না। উত্তরাঞ্চলের ফরিয়াদের ইচ্ছা মাফিক মূল্যেই কৃষকের ধান বিক্রি করতে হবে। এদিকে সরকার ও মিল মালিকরা ধান ক্রয় করছে না। এতে বাজারে ধানের দাম কম বলে জানান কৃষকরা। মঙ্গলবার আমতলী বাঁধঘাট, তালুকদার বাজার, চুনাখালী, গাজীপুর বাজার ঘুরে দেখাগেছে, বাজারে ধানের দাম কম। প্রতিমণ বিআর-২৩ ধান ৪৯০ থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ সকল বাজারে সরকারী ভাবে কেউ ধান ক্রয় করছে না। আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, এ বছর আমন ধানের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ধানের ফলনও ভালো। কিন্তু বাজারে ধানের দামটা বেশী থাকলে কৃষকরা লাভবান হতো। তিনি আরো বলেন, সরকারীভাবে ধান ক্রয় শুরু করলে বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে।
×