ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রীর শরীর ব্লেড দিয়ে কেটে লবণ মাখিয়ে দিল পাষণ্ড

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

স্ত্রীর শরীর ব্লেড দিয়ে কেটে লবণ মাখিয়ে দিল পাষণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৩ ডিসেম্বর ॥ স্ত্রীকে নগ্ন করে ব্লেড দিয়ে শরীর চিঁড়ে লবণ মাখিয়ে ঘরে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে খায়রুল ইসলাম নামের এক পাষণ্ড স্বামীর বিরুদ্ধে। বিপিএল নিয়ে জুয়া খেলায় সর্বশান্ত হয়ে ঘরে ফিরে তুচ্ছ ঘটনায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে খায়রুল। নির্যাতিত গৃহবধূ নুরন নাহার বর্তমানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায়। কৌশলে ঢাকা হতে পালিয়ে এসে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ নুরন নাহার রবিবার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে শনিবার ভোরে তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জ ব্যাংক মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে কৌশলে পালিয়ে চলে আসেন লালমনিরহাটে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাগডোহরা গ্রামের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী। সোমবার ঘটনাটি হাসপাতাল হতে চাউর হয়। এতে শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। লালমনিরহাট হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সরলখাঁ গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে নুরন নাহারের সঙ্গে দুই বছর আগে বাগডোরা গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে খায়রুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ঢাকার কেরানীগঞ্জ ব্যাংক মার্কেট এলাকায় কাজের সন্ধানে চলে যায় এই দম্পতি। সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেন তারা। কিছুদিন পরে খায়রুল জুয়া খেলার নেশায় জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি বিপিএল এ জুয়া খেলতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়। টাকার প্রয়োজনে স্ত্রীর ওপর অকারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে সে। গত শুক্রবার বিপিএল ক্রিকেট জুয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফেরে খায়রুল। পরে বাসার দরজা খোলা নিয়ে স্ত্রী নুরন নাহারকে নগ্ন করে ব্লেড দিয়ে গোপণাঙ্গ ও বক্ষদেশসহ পুরো শরীর চিঁড়ে লবণ মাখিয়ে দেয়। এ সময় চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করলে ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে রাখে খায়রুল। অসুস্থ অবস্থায় কৌশলে স্বামীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ওই বাসা থেকে বেড়িয়ে লোকাল বাসে করে রবিবার লালমনিরহাট পৌঁছায়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। হাসপাতালের বেডে কান্নাজড়িত কণ্ঠে গৃহবধূ নুরন নাহার বলেন, জুয়া খেলায় টাকা হারিয়ে নেশা করে এদিন আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এভাবে প্রতিদিন রাতে এসেই কোন কারণ ছাড়াই আমাকে মারধর করে। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে হাত পা মুখ বেঁধে নগ্ন করে পুরো শরীর ব্লেড দিয়ে চিঁড়ে লবণ মাখিয়ে দেয়। নুর নাহারের বাবা নুর ইসলাম বলেন, অভাবের কথা জেনে মেয়ের সুখের জন্য প্রায়ই জামাইকে টাকা দিতাম। কিন্তু জামাই আমার মেয়েকে এভাবে নির্যাতন করে ভাবতে পারছি না। নুরন নাহার সুস্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আমিনা বেগম বলেন, নুরন নাহার সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে। তার শরীরের নানাস্থানে ব্লেড দিয়ে কাটা চিহ্ন রয়েছে।
×