ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোদির নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের জন্য এক পরীক্ষা ছিল এ নির্বাচন

ঝাড়খন্ডের মসনদে কংগ্রেস

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯

ঝাড়খন্ডের মসনদে কংগ্রেস

ভারতের ঝাড়খন্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে জয় নিশ্চিত করেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট। বিজেপিকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসছে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও কংগ্রেস জোট। সোমবার সকাল থেকেই ভোট গণনা চলে। দুপুরের মধ্যে এটি নিশ্চিত হয়ে যায় যে, বিজেপিকে হটিয়ে ঝাড়খন্ডের মসনদে বসতে যাচ্ছে কংগ্রেস জোট। এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, কংগ্রেস জোট ইতোমধ্যেই ৪২ আসনে জয়লাভ করে। অপরদিকে, ক্ষমতাসীন বিজেপি দল ২৮ আসনে জয়ী হয়েছে। ওই রাজ্যে বিধানসভায় মোট আসন ৮১টি। সরকার গড়তে প্রয়োজন ছিল ৪১টি আসন। ইতোমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন দখল করে নিয়েছে কংগ্রেস জোট। প্রাথমিক গণনায় কখনও ক্ষমতাসীন বিজেপি সামান্য এগিয়ে থাকছে, কখনও আবার এগোচ্ছে কংগ্রেস, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) জোট। রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী রাঘুবার দাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ বিষয়ে এখনই কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। ঝাড়খন্ডের এই নির্বাচন বিজেপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের এই ফলাফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দেশটির সম্প্রতি পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ঝাড়খন্ডে তিন কোটির বেশি মানুষ বসবাস করে। ওই রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিজেপির হাতেই রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ-সমাবেশ হচ্ছে। এর মধ্যেই ওই রাজ্যে ভোট হয়েছে। গত বছর রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের কাছে হেরেছিল বিজেপি। এর আগে শিবসেনার সঙ্গে জোট ভেঙ্গে যাওয়ায় মহারাষ্ট্র হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। সেই তুলনায় ছোট রাজ্য হলেও ঝাড়খন্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকে তাকিয়ে আছে মোদি সরকার। চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। ৩০ নবেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় ঝাড়খন্ডে নির্বাচন হয়। শুক্রবার ছিল শেষ দফার ভোট। চলতি বছর ওই রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ১৪টির মধ্যে ১১টি আসনেই জয়লাভ করে বিজেপি। ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোটে ছিল আজসু (অল ঝাড়খন্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)। কিন্তু এবার তারা লড়েছে আলাদাভাবে। দলটির সভাপতি সুদেশ মাহাতো বলেছেন, ভোটের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা জোট এবং জোট সঙ্গীর কথা ভাববেন। গত নির্বাচনে ৩৭ আসন পেয়েছিল বিজেপি। আজসুর পাঁচটি আসন মিলে মোট ৪২ আসন নিয়ে সেবার সরকার গঠন করেছিল এই জোট। ২০১৫ সালের শুরুতে ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চা, জেভিএমের ছয় বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেয়ার ফলে বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যায় বিধানসভায়। ঝাড়খন্ডে ইতিহাসে সেবারই প্রথম বিধানসভায় একা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় কোন দল, আর সেই প্রথম একজন ব্যক্তি (রাঘুবার দাস) টানা পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে থেকে মেয়াদ শেষ করেন। রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বারবার রাজনৈতিক অচলাবস্থা, জোট ভাঙ্গা-গড়াসহ নানা কারণে রাঘুবারের আগে কোন মুখ্যমন্ত্রীই ঝাড়খন্ডে টানা আড়াই বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। এবারের নির্বাচনে সর্বশেষ তথ্যমতে, আজসু এ পর্যন্ত পেয়েছে ছয়টি আসন। আর জেএমএম পেয়েছে চারটি। শিবসেনার সঙ্গে জোট ভেঙ্গে যাওয়ায় মহারাষ্ট্র হাতছাড়া হয় বিজেপির। সে তুলনায় ছোট রাজ্য হলেও ঝাড়খন্ডে হারালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
×