ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রহমতগঞ্জকে রুখে স্বস্তির ড্র শেখ জামালের

প্রকাশিত: ১০:২৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 রহমতগঞ্জকে রুখে স্বস্তির ড্র শেখ জামালের

জাহিদুল আলম জয় ॥ মৌসুম শুরুর টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপ ফুটবলে শুরুটা ভাল হয়নি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের। রবিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিরুদ্ধে হারতে হারতে কোনরকমে ১-১ গোলে ড্র করেছে ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাবটি। দু’দলের হয়েই গোল করেন দুই বিদেশী ফুটবলার। প্রথমে গিনির ফুটবলার কামারা ইউনোসা গোল করে এগিয়ে নেন সৈয়দ গোলাম জিলানীর রহমতগঞ্জকে। এরপর শফিকুল ইসলাম মানিকের শেখ জামালের হয়ে গোলটি পরিশোধ করেন নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার সাজেই মনডে। ম্যাচটি ড্র হওয়ায় এই গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াই জমে উঠেছে। বর্তমানে দুই ম্যাচ শেষে দু’টিতেই ড্র করে ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে রহমতগঞ্জ। এক ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেখ জামাল। ১ পয়েন্ট নিয়ে গোলগড়ে তিনে আছে সাইফ স্পোর্টিং। ২৬ ডিসেম্বর শেখ জামাল ও সাইফ স্পোর্টিংয়ের মধ্যে গ্রুপের শেষ ম্যাচের পর ফয়সালা হবে কোন্ দু’টি দল শেষ আটের টিকেট পাবে। আর কোন্ দলের কপাল পুড়বে। ম্যাচের শুরু থেকে শেখ জামালের দুর্গে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকে রহমতগঞ্জ। কিন্তু বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করেও ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ২০ মিনিটে প্রথমবার বলার মতো আক্রমণ করে শেখ জামাল। এ সময় ওমর ফারুক বাবুকে ডি বক্সের বাইরে ফাউল করলে ফ্রিকিক পায় হলুদ জার্সিধারীরা। পরের মিনিটে ফ্রিকিক নেন গাম্বিয়ার ফুটবলার সোলেমান কিং। ডান পায়ে তার নেয়া দারুণ সেটপিচ ডানপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। তিন মিনিট পর উপর্যুপরি কয়েকটি আক্রমণ শানায় রহমতগঞ্জ। কিন্তু জামালের ডি বক্সে যেয়ে তাদের আক্রমণগুলো নস্যাৎ হয়ে যায়। ২৬ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট হয় জামালের। বামপ্রান্ত থেকে আসা ক্রসে চলতি বলে শট নেন বিদেশী বাললোফা মুসা। কিন্তু তার দুর্বল শট তালুবন্দী করেন রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন। ৩৬ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে একজনকে কাটিয়ে দূরপাল্লার শট নেন সোলেমান কিং। কিন্তু তার শটটি ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ফলে গোলবঞ্চিত হয় শেখ জামাল। ৩৮ মিনিটে নিশ্চিত গোল হাতাছাড়া হয় রহমতগঞ্জের। ডি বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পান দলটির অধিনায়ক মমোদাহ বাহ। কিন্তু তার নেয়া শট দারুণ দক্ষতায় নিজের গ্লাভসে নেন শেখ জামাল গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান। গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। বিরতির পর শুরুতেই মমোদাহ বাহ রহমতগঞ্জকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন। বামপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে দু’জনকে কাটিয়ে বাম পায়ে নেয়া তার শট বারপোস্ট উঁচিয়ে বাইরে যায়। ৫২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে শেখ জামালের ডি বক্সে ঢুকে জোরালো শট নেন রহমতগঞ্জের উজবেকিস্তানের ফুটবলার আকুবি। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ৬১ মিনিটে সংঘবদ্ধ আক্রমণে মমোদাহর ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শট প্রথম দফায় নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও পরে ক্লিয়ার করেন শেখ জামাল কিপার। এই মিনিটেই কর্নার পায় সৈয়দ গোলাম জিলানীর দল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল প্রথমে ফিরিয়ে দেন শেখ জামাল গোলরক্ষক। এরপর জটলার মধ্যে প্রতিপক্ষের তিনজন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে দেন রহমতগঞ্জের গিনির ফুটবলার কামারা। এই গোল হজমে শেখ জামালের ডিফেন্ডারদের দায় আছে অনেকটা। দেখে মনে হয়েছে, তারা দাঁড়িয়ে থেকে গোল হজম করেছেন! পিছিয়ে পড়ার পর সমতায় ফিরতে তেমন কার্যকরী আক্রমণ শানাতে দেখা যায়নি। উল্টো আরও গোল হজমের উপক্রম হয়েছিল। তবে ৭৬ মিনিটে আচমকা গোলে স্বস্তি ফিরে আসে শেখ জামাল শিবিরে। গোল করেন অধিনায়ক মনডে। এ সময় ডি বক্সের মাথায় পাস পেয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের তিনজন ফুটবলারকে বোকা বানিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো ভলিতে রহমতগঞ্জের জাল কাঁপান নাইজিরিয়ান এই ডিফেন্ডার মনডে। রক্ষণ ছেড়ে অধিনায়কের এই গোলেই শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে পেরেছে শফিকুল ইসলাম মানিকের দল। পক্ষান্তরে অনেক সুযোগ নষ্ট করা রহমতগঞ্জ প্রথম দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করার সুযোগ নষ্ট করেছে। দলটির অধিনায়ক মমোদাহ বাহ বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট না করলে এই ম্যাচেই শেষ আটে খেলা নিশ্চিত হয়ে যেত রহমতগঞ্জের। এখন তাদের চেয়ে থাকতে হবে শেষ গ্রুপ ম্যাচের ফলাফলের দিকে।
×