ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারী বিদ্যালয়ের জমিতে বাণিজ্যিক কিন্ডারগার্টেন

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

 সরকারী বিদ্যালয়ের  জমিতে বাণিজ্যিক  কিন্ডারগার্টেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ২২ ডিসেম্বর ॥ জাজিরা উপজেলা সদরে অবস্থিত সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করে একটি কিন্ডারগার্টেন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উক্ত বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ মিলে বিশাল এ বাণিজ্যিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষকও ওই কিন্ডারগার্টেনে পাঠদান থেকে শুরু করে পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। শিক্ষকরা একই সঙ্গে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, ঐতিহ্যবাহী জাজিরা মোহর আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বিদ্যালয়টি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং পরিবর্তিত না হয়েছে সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে, গত ২০০৩ সাল থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ভাড়া দেয়ার নাম করে বিদ্যালয়ের জমিতে পাকাভবন নির্মাণ করে জাজিরা কিন্ডারগার্টেন নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেখানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষক নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দিকে নজর না দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের লোভে উক্ত বাণিজ্যিক কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। এতে সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রলুব্ধ করার জন্য পরিচালকগণের বিশাল নামফলক বিভিন্ন স্থানে সাঁটিয়ে রাখাসহ কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের জন্য খাতাপত্র তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক সিএম মহিউদ্দিন, এনামুল হক, মাওলানা রেজাউল করিম খান ও মতিউল ইসলাম সেলিমের নাম রয়েছে। এ বিষয়ে সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এটিএম মতিউর রহমান বলেন, বিদ্যালয়টি যখন জাতীয়করণ ছিল না, তখন ২০০৩ সালে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাজিরা কিন্ডারগার্টেন করার জন্য জমি ভাড়া দেয়া হয়েছে এবং সেই ভাড়ার টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়েছে বিধায় তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিস দেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তিনি কোন লিখিত নোটিস দেননি বলে জানান। সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একই সঙ্গে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিভাবে জড়িত এমন প্রশ্নের উত্তরে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সরকারী জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কেউ একই সঙ্গে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×