ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজার মন্দায় ডিএসইর আয় কমছে, বেড়েছে ব্যয়

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

পুঁজিবাজার মন্দায় ডিএসইর আয় কমছে, বেড়েছে ব্যয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) একদিকে আয় কমছে, অপরদিকে বাড়ছে ব্যয়। ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এ চিত্র ফুটে ওঠেছে। স্টক এক্সচেঞ্জ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের অব্যাহত মন্দার কারণে আয় কমেছে। আগের বছরের তুলনায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, পরিচালকদের সম্মানী, খাবার ও পানীয় খরচ, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সবখাতেই ব্যয় বেড়েছে। অপরদিকে কমেছে লেনদেন থেকে আয়। কর্মকর্তাদের বেতন ৩৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। অপরদিকে পরিচালকদের সম্মানী ২৭ লাখ থেকে বেড়ে ৪৪ লাখ টাকা হয়েছে। কিন্তু বার্ষিক ট্রানজেকশন ফি ৭৭ কোটি থেকে ৭২ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিকবছরে ডিএসই’র আয় হয়েছে (নেট কমপ্রিহেনসিভ ইনকাম) ৯৭ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার ৬৭৪ টাকা। আগেরবছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরের আয় হয়েছিল ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। ফলে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিকবছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগেরবছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরের এটা ছিল ৫৮ পয়সা। সে হিসেবে ইপিএস কমেছে ৪ পয়সা। ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিকবছরে ডিএসই’র ব্যয় হয়েছে ৮৮ কোটি ৮০ লাখ ৪৯ হাজার ৪৩০ টাকা। আগেরবছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিকবছরে ব্যয় হয়েছিল ৮০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮৫৪ টাকা। ফলে সর্বশেষ সমাপ্ত আর্থিকবছরে ব্যয় বেড়েছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫৭৬ টাকা। এদিকে ডিএসই’র ৯৪০তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য পরিচালনা পর্ষদ ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বণ্টনের সুপারিশ করেছে। কোম্পানির আর্থিক কার্যক্রম, রক্ষিত লাভ ও বর্তমান তারল্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পর্ষদ ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত বছরের জন্য এ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন সাপেক্ষে এ লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে। এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান বলেন, বাজারে লেনদেন কমে গেছে। সবাই লোকসানে আছে। তাই আয় কমবে এটাই স্বাভাবিক। বাজারে লেনদেন না বাড়লে আয়ও বাড়বে না। আয় কমার পরও কেন ব্যয় বাড়ল বা ব্যয় আগের মতো রাখা গেল না তা জানতে চাইলে ডিএসই’র অপর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বেতন ও অন্যান্য সুযোগ বেড়ে গেছে। কমানোর কোন সুযোগ নেই। ব্যবস্থাপকরা সবসময় চাইবে তাদের বেতন-ভাতা যেন বাড়ে। বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালন মুনাফা নেই, ব্যাংক ডিপোজিট থেকে মুনাফা এসেছে। সে খাত থেকে আসা আয় থেকে লভ্যাংশ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। রকিবুর রহমান বলেন, ৭৫০ কোটি টাকার কম দৈনিক লেনদেন হলে পরিচালন লোকসান হয়। বর্তমানে গড়ে ৫শ’ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলে ১০ শতাংশ মুনাফা হবে। অন্তত লোকসান এড়াতে হলে দৈনিক ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হতে হবে। তবে বন্ড মার্কেট ও সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) চালু হলে লেনদেন আরও বেড়ে যাবে।
×