ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রীড়া উন্নয়নে উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

ক্রীড়া উন্নয়নে উদ্যোগ

গণভবনে নারী-কিশোর ফুটবল দলকে দেয়া সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ক্রীড়া উন্নয়ন, ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষত নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং খেলার মাঠ সঙ্কট নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অভিমত ও পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা স্মরণ করতে পারি সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক আগ্রহে। শরীর-মনের প্রফুল্লতার জন্য খেলাধুলার চেয়ে ভাল কিছু আর নেইÑ প্রতিষ্ঠিত এ সত্যটি আজ আর কেউ মনেই রাখেন না। সবাই ছুটছে সোনার হরিণের পেছনে। নতুন প্রজন্ম কি শিখছে কিভাবে জীবন যাপন করছে- এসব নিয়ে অভিভাবকদের তেমন গভীর কথা শুনতে পাওয়া যায় না। টিভি টক-শোগুলো রাজা-উজির মারায় ব্যস্ত। সত্যিকারের সামাজিক সঙ্কট-সমস্যা সব নিচে চাপা দিয়ে ওপরে ওপরে আমরা আধুনিক হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছি। তরুণ প্রজন্মের সামনে আদর্শ স্থাপনে ব্যর্থ হলে, তাদেরকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আর খেলাধুলায় যুক্ত না করা গেলে শেষ পর্যন্ত তা সমাজের জন্যই বিপদ ডেকে আনবে। সাম্প্রতিককালে দেশের খেলাধুলার মধ্যে আমরা নানা সুসংবাদ পাচ্ছি। তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ক’বছর ধরে। দেশের ৪৮৭ উপজেলার প্রত্যেকটিতেই কমপক্ষে একটি করে খেলার মাঠ তৈরি হচ্ছে। স্টেডিয়াম মানেই হলো ক্রীড়াকে উৎসবে পরিণত করার জমজমাট আনুষ্ঠানিকতা। এর ফলে খেলাধুলার চর্চা ও অনুশীলন বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করতে পারি, উপেক্ষিত ফুটবলও পুনরায় ফিরে পাবে তার যথাযথ আসন। প্রধানমন্ত্রী দেশে খেলাধুলার উন্নয়নে শহর এলাকার পাশাপাশি তৃণমূল থেকে আরও বেশি মেধা খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। ক্রীড়াক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে- এমন একটা আশাবাদী উচ্চারণ শুনতে আমাদের ভাল লাগে। বিশেষ করে ক্রিকেটে আমাদের উন্নতি হয়েছে অনেক। বাইরের দুনিয়া বাংলাদেশকে যে কয়টি ইতিবাচক অর্জনের জন্য চিনছে, তার ভেতর প্রথম সারিতে রয়েছে ক্রিকেট। আমাদের মেয়েরাও ভাল খেলছে এবং বিদেশ থেকে সুসংবাদ বয়ে আনছে। স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিআইএস (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস) প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ্যই ছিল সারাদেশ থেকে প্রতিশ্রুতিশীল ক্রীড়া প্রতিভা খুঁজে বের করা। তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ক্রীড়া বিষয়ক শিক্ষাদান ও ডিগ্রী পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষা প্রদানের সুব্যবস্থা করা। পঁচাত্তরের পর প্রতিষ্ঠানটি ‘বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপি’ নাম ধারণ করে। অবশ্য প্রতিষ্ঠানটি দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে পারেনি। লাখো নবীন খেলোয়াড় সৃষ্টির জন্য একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান কাক্সিক্ষত সুফল অর্জনে কখনোই সফল হতে পারে না। প্রয়োজন তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করে তরুণদেরকে উৎসাহিত ও সংযুক্ত করা। দেরিতে হলেও সে লক্ষ্যেই বর্তমান সরকার ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
×