ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরকে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক জয় খুলনার

প্রকাশিত: ১০:০১, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯

রংপুরকে উড়িয়ে হ্যাটট্রিক জয় খুলনার

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারছে না রংপুর রেঞ্জার্স। ঢাকা পর্বে দুই ম্যাচেই বাজেভাবে হেরেছিল তারা। চট্টগ্রাম পর্বে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে নেমেছিল দলটি। কিন্তু সেখানেই টানা দুটি বড় হার দেখেছে মোহাম্মদ নবির নেতৃত্বাধীন রংপুর। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তাদের ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে মুশফিকুর রহীমের খুলনা টাইগার্স। তিন পেসার শফিউল ইসলাম, মোহাম্মদ আমির ও শহীদুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে আগে ব্যাট করে রংপুর ৯ উইকেটে মাত্র ১৩৭ রান তুলতে পেরেছিল। জবাবে রাইলি রুশোর হার না মানা ঝড়ো অর্ধশতকে মাত্র ১২.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান তুলে জয় পায় খুলনা। তখনও ৪৫ বল বাকি ছিল। রুশো ৩১ বলে ৯ চার, ২ ছক্কায় ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তবে শফিউল ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। এটি রংপুরের টানা চতুর্থ হার, আর আসরের একমাত্র অপরাজেয় খুলনার টানা তৃতীয় জয়। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে রংপুর। প্রথমবারের মতো তাদের হয়ে খেলতে নামেন দক্ষিণ আফ্রিকার টপঅর্ডার ক্যামেরন ডেলপোর্ট। কিন্তু আফগানিস্তানের ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ মাত্র ১১ রানেই আমিরের শিকার হলে ডেলপোর্ট কিছুই করতে পারেননি। তাকে ৪ রানেই সাজঘরে ফিরিয়েছেন শফিউল। এ ডানহাতি পেসার রংপুরের মিডলঅর্ডার তছনছ করে দিয়েছেন। তবে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৩৯ রান ওঠে মোহাম্মদ নাইম শেখের দারুণ ব্যাটিংয়ে। সপ্তম ওভারেই আবার আঘাত হানেন শফিউল, ০ রানে ফিরিয়ে দেন নাদিফ চৌধুরীকে। দলীয় ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ ভালই এগোতে থাকে রংপুর। নাইম ও ফজলে রাব্বি চতুর্থ উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রান যোগ করেন। কিন্তু চলতি আসরে দ্বিতীয় অর্ধশতক থেকে ১ রান দূরে থাকতে রানআউট হয়ে যান নাইম। আগের ম্যাচেও রানআউট হওয়া নাইম এবার ৩২ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৩৯ রান করেছিলেন। তবে ফজলে রাব্বি দলকে টেনে নিয়ে গেছেন সম্মানজনক পুঁজিতে। তাকেও ১৯তহম ওভারে এসে সাজঘরে ফেরান শফিউল। ৩৩ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪২ রান করেন। খুলনার পেসারদের আঁটসাঁটো বোলিংয়ের মুখে লুইস গ্রেগরিও বড় শট খেলতে পারেননি। ২০ বলে ২ চারে ২২ রান করতে পেরেছেন তিনি। শেষ ওভারে শহীদুল দারুণ বোলিং করে ২ উইকেট শিকার করেছেন। সেই ওভারে একটি রানআউটসহ ৩ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১৩৭ রান তোলে রংপুর। আমির ওভারের রানে ২টি, শহীদুল ৩ ওভারে ৩২ রানে ২টি ও শফিউল ৪ ওভারে ১টি মেডেনসহ ২১ রানে ৩টি উইকেট নেন। মেহেদী হাসান মিরাজ কোন উইকেট তুলে নিতে না পারলেও ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দেন। বিপিএলে মাত্র ১৩৭ রানের পুঁজিতে সাগরিকার উইকেটে লড়াই করা বেশ কঠিনসাধ্য ব্যাপার যে কোন দলের জন্যই। কারণ অতীত পরিসংখ্যান বলে বিপিএলে প্রথম ইনিংসে গড় দলীয় রান এখানে ১৯। এরপরও বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন রংপুরকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তিনি নাজমুল হোসেন শান্তকে (১) সাজঘরে ফেরান। তবে এই উইকেট হারিয়ে উল্টো খুলনা আরও বিস্ফোরক হয়ে ওঠে রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও রুশোর ব্যাটে। দ্বিতীয় উইকেটে তারা ৬১ রান যোগ করেন মাত্র ২৬ বল থেকে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারেই ১ উইকেটে ৮৩ রান তুলে ফেলে খুলনা। তবে সপ্তম ওভারে মিডিয়াম পেসার মুকিদুল ইসলাম গুরবাজকে আউট করলেও স্বস্তি আসেনি তাই রংপুরের তাঁবুতে। তিনি ২২ বলে ১ চার, ৪ ছক্কায় ৩৭ রান করেন। গুরবাজের বিদায় ঘটার পরও রুশো তান্ডব অব্যাহত রাখেন। আর অধিনায়ক মুশফিক তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন সতর্ক ব্যাটিংয়ে। এতেই ৪৫ বল হাতে রেখে লক্ষ্য পেরিয়ে যায় খুলনা। রুশো ৩১ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন। মুশফিক করেন ১৭ বলে ২ চারে অপরাজিত ১৭ রান। ১২.৩ ওভারে মাত্র ২ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে ফেলে আরেকটি দাপুটে জয় পায় খুলনা। এটি তাদের হ্যাটট্রিক জয়। আগের দুই ম্যাচে তারা দুর্বার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকেও ৮ উইকেটে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএল শুরু করেছিল। সর্বশেষ ম্যাচে আরেকটি অপ্রতিরোধ্য দল রাজশাহী রয়্যালসে ৫ উইকেটে পরাস্ত করে। ৩ ম্যাচেই জয় তুলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে এখন খুলনা। আর টানা ৪ ম্যাচেই পরাজয় দেখল রংপুর। তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে।
×