ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ও ;###;শেষ টেস্ট শুরু আজ

করাচীতে সিরিজ ফয়সালার লড়াই

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯

করাচীতে সিরিজ ফয়সালার লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট দিয়ে দীর্ঘ দশ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে ফিরেছে টেস্ট ক্রিকেট। কিন্তু প্রত্যাবর্তনটা ভাল হয়নি। বৃষ্টির বাগড়ায় ড্র হয়েছে টেস্ট। প্রাপ্তি বলতে শেষদিনে আবিদ আলির রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে এবং টেস্ট দুই ফরমেটেই নিজের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৩২ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। যেহেতু কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সফর করছে লঙ্কানরা। তাই সিডিউলও বেশ টাইট। প্রথম টেস্ট শেষ হওয়ার তিনদিনের ব্যবধানে করাচীতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। আজহার আলির নেতৃত্বে পাকিস্তান দলের সকল সদস্যেরই এই সিরিজ দিয়ে ঘরের মাটিতে টেস্ট অভিষেক হয়েছে। অর্থাৎ গত এক দশক ধরে তারা কেবল বিদেশ-বিভুঁইয়ের হয়েই খেলে এসেছেন। সুতরাং আলোচিত প্রত্যাবর্তনটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে স্বাগতিকরা। অন্যদিকে দিমুথ করুনারতেœর নেতৃত্বে অতিথি লঙ্কানরাও চাইবে ম্যাচ ও সিরিজ জিতে দেশে ফিরতে। দীর্ঘ এক দশকে পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেটে সাদা পোশাকের আভিজাত ফরমেট টেস্টের প্রত্যাবর্তন ঘিরে রাওয়ালপিন্ডি ছিল উৎসবমুখর। অথচ বৃষ্টি সেই উৎসব অনেকটা ম্লান করে দেয়। পাঁচদিনে ৪৫০ ওভারের মধ্যে খেলা হয় মাত্র ১৬৭ ওভার। একদিন তো খেলা মাঠেই গড়ায়নি। আরেকদিন হয়েছিল মোটে ৬ ওভারের মতো। ম্যাচ ড্র হয়েছে অনুমিতভাবে। তবে পঞ্চম ও শেষদিনে ড্র ম্যাচ রাঙিয়ে দেন আবিদ আলি। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে এবং টেস্টÑ দুই ভার্সনেই নিজের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিরল এক রেকর্ড গড়েন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৯ রান নিয়ে, ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাবর আজমও খেলেন অপরাজিত ১০২ রানের দারুণ এক ইনিংস। জোড়া সেঞ্চুরির সৌজন্যে মাত্র ৭০ ওভারেই ২ উইকেটে ২৫২ রান তুলে নিয়েছিল পাকিস্তান। নিষ্প্রাণ ড্র ম্যাচে টেস্ট প্রত্যাবর্তনে এটাই ছিল পাকিস্তান সমর্থকদের প্রাপ্তি। তার আগে ৬ উইকেটে ৩০৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। সফরকারীদের হয়ে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২*)। সে অর্থে খেলা যতটুকু হয়েছে, তাতে দু’দলই ছিল সমান অবস্থানে। সুতরাং সামর্থ্যরে বিচারে কোন দল যে এগিয়ে নয় সেটি অনুমেয়। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরে ২-০ ব্যবধানে টি২০ হারের পর টেস্টে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হয় পাকিস্তান। বলতে গেলে ন্যূততম প্রতিরোধটুকুও গড়তে পারেনি তারা। ঠিক তার আগে ঘরের মাঠে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩-০তে ওয়ানডে জিতলেও টি২০ সিরিজে লজ্জাজনকভাবে ধরাশায়ী হয় ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিরা। ফলে নেতৃত্ব হারানো সরফরাজ আহমেদ দল থেকেই বাদ পড়েন। টেস্টে অধিনায়ক বানিয়ে ফেরানো হয় আজহারকে, আর টি২০’র ভার বাবর আজমের কাঁধে। অস্ট্রেলিয়া থেকে দু’জনই তিক্ত স্বাদ নিয়ে ফিরেছেন। একই সঙ্গে প্রধান কোচ এবং প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পাওয়া সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ উল হকও বাস্তবতা টের পাচ্ছেন। রাওয়ালপিন্ডিতে বৃষ্টিবিঘিœত প্রথম টেস্টে ৬ উইকেটে ৩০৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ইনিংস ঘোষণা করেছিল শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের অনভিজ্ঞ বোলিংয়ের দৈন্যতা ফুটে উঠেছিল। বিশ্বকাপের পর হঠাৎই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া দুই পেসার মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজের ওপর বেজায় চটেছেন কোচ ও নির্বাচক মিসবাহ। করাচীর শুষ্ক আর ফ্লাড উইকেটে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে মোহাম্মদ আব্বাস, শহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, উসমান শিনওয়ারিরা কেমন করেন সেই প্রশ্ন থাকছেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের সুবাদে দীর্ঘ দশ বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন ৩৪ বছর বয়সী টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলম। প্রথম টেস্টে সুযোগ না পাওয়া ব্যাটসম্যানকে করাচীতে একাদশে দেখা যেতে পারে। ১৯৮২-২০১৭ পর্যন্ত মুখোমুখি ৫৪ টেস্টে ১৯ জয়ে এগিয়ে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার জয় ১৬ টেস্টে। ড্র ১৯। অবশ্য আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে লঙ্কানরা ছয় নম্বরে, পাকিরা আটে।
×