ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেস বোলিং কোচ

চাকরি ছাড়লেন ল্যাঙ্গাভেল্ট, আগ্রহী সুজন

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯

চাকরি ছাড়লেন ল্যাঙ্গাভেল্ট, আগ্রহী সুজন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজ দেশের প্রস্তাব সবসময়ই লোভনীয়। সবাই চায় দেশের হয়ে কাজ করতে। ক্রিকেট দলের কোচরাও তাই। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেস বোলিং কোচ চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট যেমন নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেতেই বাংলাদেশের কোচ পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কোচই হবেন। তাই বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের পদ থেকে ইস্তফা চেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) পেশাদারিত্ব বিবেচনায় তাকে ইস্তফা দিয়েও দিচ্ছে। যেহেতু ল্যাঙ্গাভেল্ট নাই। তাই এই পদে একজনকে লাগবেই। সেই পদে কী খালেদ মাহমুদ সুজন কাজ করতে আগ্রহী? তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড তাদের দল এবং দলের কোচের পদগুলো ঢেলে সাজাচ্ছে। দেশী কোচদেরই তারা কাজে লাগাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট পরিচালক পদে গ্রায়েম স্মিথকে বসানো হয়েছে। উইকেটকিপিং কিংবদন্তি মার্ক বাউচারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন কোচের। ব্যাটিং কোচ হিসেবে জ্যাক ক্যালিসকে বেছে নেয়া হয়েছে। বোলিং কোচ হিসেবে স্মিথ চাইছেন এক সময়ের সতীর্থ ল্যাঙ্গাভেল্টকে। সেই ধারাবাহিকতায় তারা ল্যাঙ্গাভেল্টকে পেস বোলিং কোচ করতে চেয়েছে। তিনিও রাজি হয়েছেন। তাতে করে মাত্র চার মাস বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজ করেই ল্যাঙ্গাভেল্ট অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে। পেস বোলাররা ল্যাঙ্গাভেল্টের কাজে খুশি ছিলেন। ল্যাঙ্গাভেল্টও ভালভাবেই পেস বোলিং বিভাগকে সাজাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করছেন ল্যাঙ্গাভেল্ট। বিসিবি’র পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বিষয়টি নিয়ে জানান, ‘জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং কোচ চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট চাকরি ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে এরই মধ্যে বিসিবিতে ইস্তফাপত্র দিয়েছে। চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট আসলে দক্ষিণ আফ্রিকান জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং কোচের প্রস্তাব পেয়েছেন। তিনি তা সানন্দে গ্রহণ করতে চান। আর সে কারণেই বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজ দেশের জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং কোচ হতে আগ্রহী। আর সে কারণেই বোর্ডে চিঠি দিয়ে চাকরি ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাকে হ্যাঁ বা না কিছুই জানানো হয়নি। আমরা নিজেরা বসে ঠিক করব আসলে কী করা যায়?’ কিন্তু যিনি যেতে চান তাকে কী আর ধরে রাখা সম্ভব? তাই আকরাম বলেন, ‘কেউ চলে যেতে চাইলে তো রেখে দেয়া ঠিক নয়।’ বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে চাই যে, আমরা (বিসিবি) দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের (সিএসএ) কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পাই, তাকে (ল্যাঙ্গাভেল্ট) ছেড়ে দেয়ার জন্য। সিএসএ’র সঙ্গে আমাদের যে শক্তিশালী ক্রিকেটিং সম্পর্ক রয়েছে, আমরা সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই। একই সঙ্গে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন এবং নিজ দেশের বোলিং কোচ হিসেবেও কাজ করতে আগ্রহী। তার এ বিষয়টাও বিবেচনায় এনেছি। এ কারণেই বিসিবি এই মুহূর্ত থেকে তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ জুলাইয়ের ২৭ তারিখে ল্যাঙ্গাভেল্টকে পেস বোলিং কোচ করার ঘোষণা দেয় বিসিবি। বিশ্বকাপের পর কোর্টনি ওয়ালশ চলে যাওয়ার পর কোচ খোঁজা হতে থাকে। ল্যাঙ্গাভেল্টকে মিলে। আগামী বছরের অক্টোবরে টি২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ল্যাঙ্গাভেল্টের সঙ্গে চুক্তি ছিল। কিন্তু এর আগে ২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ল্যাঙ্গাভেল্ট আবারও দেশের ডাকে সারা দেন। তাই বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ল্যাঙ্গাভেল্ট চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এখনই আলোচনা হচ্ছে, তাহলে পেস বোলিং কোচ হবেন কে? সামনে বাংলাদেশ দলের অনেক খেলা রয়েছে। আবার টি২০ বিশ্বকাপও আছে। বিসিবি’র পরিচালক সুজন আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘খুব যে বড় বেশি ধাক্কা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ আমাদের ছেলেরা এখন অনেক কোচিং পেয়ে গেছে আসলে। অনেক কোচের অধীনেই ছিল। আমার মনে হয় দ্রুতই কাউকে নিয়ে নেবে বিসিবি। তাই হয়তো গ্যাপটা থাকবে না। দলের প্রধান কোচ আছেন, বাকি ম্যানেজমেন্ট আছে। একজন কোচ আসেন, চলেও যান। এটাই নিয়ম। কিন্তু আমাদের অবশ্যই একজন বোলিং কোচ লাগবে।’ সঙ্গে তার আগ্রহ নিয়ে যোগ করেন, ‘সুযোগ তো পেলে সবাই আগ্রহী হবে। আমার পেশা তো কোচিং। আগ্রহের ব্যাপার অবশ্যই আছে। এর আগেও দু’বার আমি বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। যদিও বলাই ছিল সেটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।’
×