ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চট্টগ্রাম

টানা চতুর্থ হার সিলেটের

প্রকাশিত: ১১:১১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

টানা চতুর্থ হার সিলেটের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট থান্ডারকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মেহেদি হাসান রানার বাঁহাতি পেস তোপে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৯ রান তুলে সিলেট। জবাবে ১২ বল হাতে রেখেই ১৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় চট্টগ্রাম। ঢাকায় প্রথম সাক্ষাতেও চট্টগ্রামের কাছে ৫ উইকেটে হেরে গিয়েছিল সিলেট। এ জয়ের ফলে ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে আসল চট্টগ্রাম। আর টানা ৪ ম্যাচ হেরে পয়েন্ট শূন্য সিলেট। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেই প্রথম থেকেই রান তুলতে হিমশিম খেতে থাকে সিলেট। চতুর্থ ওভারে মেহেদি হাসান রানার বাঁহাতি পেস তোপে পড়ে তারা রনি তালুকদারের (২) উইকেট হারায়। সেই ওভারে মাত্র ২ রান দেন এ বাঁহাতি। পঞ্চম ওভারে রুবেল হোসেন ৯ রান দিলেও শফিকুল্লাহকে (৬) সাজঘরে ফিরিয়েছেন। অপরদিকে নাসুম আহমেদ আঁটসাঁটো বোলিংয়ে চেপে ধরে ৩ ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র ১১ রান দেন। ফলে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে মাত্র ৩০ রান তুলে চাপে পড়ে যায় সিলেট। সেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটান ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৬২ রান জমা হয় সিলেটের স্কোরবোর্ডে। কিন্তু ১১তম ওভারে মুক্তার আলী আঘাত হানেন, ফিরিয়ে দেন ৩২ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ রান করা ফ্লেচারকে। আর ১২তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরেই জোড়া আঘাত হানেন মেহেদি রানা। প্রথম বলে মোহাম্মদ মিঠুনকে (১৭ বলে ১৫) ও ষষ্ঠ বলে ক্যারিবীয় তারকা জনসন চার্লসকে (৩) সাজঘরে পাঠিয়ে তিনি চট্টগ্রামকে নিয়ন্ত্রণ এনে দেন। মেডেনসহ জোড়া উইকেট নেন মেহেদি। মাত্র ৬৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া সিলেটকে একটি সম্মানজনক পুঁজিতে নিয়ে গেছেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২২ বলে ২ চারে ৩০ রান করে তিনি কেসরিক উইলিয়ামসের শিকার হন। ইনিংসের শেষ ওভারে ১১ রান তুলে নেয় সিলেট, মেহেদি রানা আরেকটি উইকেট নেন। প্রথম ৩ ওভারে ১টি মেডেনে ১২ রানে ৩ উইকেট নেয়া মেহেদি শেষ করেন ৪ ওভারে ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে। টি২০ ক্যারিয়ারে এটিই তার সেরা বোলিং নৈপুণ্য। রুবেল নেন ২ উইকেট। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৯ রানের সংগ্রহ পায় সিলেট। জবাব দিতে নেমে প্রথম বলেই নাজমুল ইসলাম অপুকে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন চট্টগ্রামের উইন্ডিজ ওপেনার লেন্ডল সিমন্স। সেই ওভারে অবশ্য ৮ রানের বেশি দেননি অপু। তবে দ্বিতীয় ওভারে ক্রিশমার সান্তোকি সাজঘরে ফেরান শ্রীলঙ্কান ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দোকে (৫)। তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বল হওয়ার পর ফ্লাড লাইট নিভে যাওয়ায় কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। প্রায় ১০ মিনিট পর খেলা শুরু হয়। ফ্লাড লাইট জ্বলে ওঠার পর খেলা শুরু হলে চট্টগ্রামের তাঁবুতে আঁধার নামে ইমরুল কায়েস (৬) ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বিদায় নিলে। কিন্তু সিমন্স ও আরেক ক্যারিবিয়ান তারকা চ্যাডউইক ওয়ালটন পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ডে জমা করেন ৩ উইকেটে ৪৩ রান। তবে ওয়ালটন (৯) বেশিদূর যেতে পারেননি। সিমন্সের দৃঢ়তায় ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬৬ রান তুলে লক্ষ্যের অর্ধেক পেরিয়ে যায় চট্টগ্রাম। সিমন্স একাই লড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৩তম ওভারে তিনিও ৩৭ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করে রানআউট হয়ে যান। নতুন করে বিপদে পড়লেও নুরুল হাসান সোহান দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম। একাই লড়ে সোহান ২৪ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। নাঈম হাসানকে ১৮তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ১২ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেন কেসরিক উইলিয়ামস। সান্তোকি ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। স্কোর ॥ সিলেট থান্ডার ইনিংস- ১২৯/৮; ২০ ওভার (ফ্লেচার ৩৮, মোসাদ্দেক ৩০, মিঠুন ১৫; মেহেদি রানা ৪/২৩, রুবেল ২/২৮)। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ইনিংস- ১৩০/৬; ১৮ ওভার (সিমন্স ৪৪, সোহান ৩৭*, কেসরিক ১৮* ; সান্তোকি ৩/১৩)। ফল॥ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৪ উইকেটে জয়ী।
×