ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন ম্যাচে প্রথম হার রাজশাহী রয়্যালসের

রাজশাহীকে থামিয়ে খুলনার টানা দ্বিতীয় জয়

প্রকাশিত: ১০:২১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

রাজশাহীকে থামিয়ে খুলনার টানা দ্বিতীয় জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিবিপিএল টি২০) প্রথমপর্ব শেষে একমাত্র অপরাজিত দল ছিল রাজশাহী রয়্যালস। দ্বিতীয়পর্ব শুরু হতেই হার দেখল তারা। রাজশাহীকে আটকালো খুলনা টাইগার্স। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ২ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে জিতল খুলনা। তা সম্ভব হলো মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে। তার তোলা ব্যাটিং ঝড়ে। ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার আফসোস থেকে যাবে মুশফিকের। তবে তার ৫০ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় করা ৯৬ রানের ইনিংসেই জয়টি এসেছে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার লীগের দ্বিতীয়পর্ব শুরু হয়েছে। এই পর্বের প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেছে খুলনা। রাজশাহীকে অপরাজিত থাকতে দেয়নি। এমনকি পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান থেকেও নামিয়ে দিয়েছে। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা। আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে রাজশাহীর শোয়েব মালিক (৮৭) এমনই ব্যাটিং করেছেন তাতে দলও এবার লীগের সর্বোচ্চ স্কোর করেছে। ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৮৯ রান করে রাজশাহী। চতুর্থ উইকেটে রবি বোপারাকে (৪০*) নিয়ে আবার ১০৬ রানের জুটিও গড়েন। এই জুটিতেই বড় স্কোর গড়ে ফেলে রাজশাহী। তবে এই রানও যে জয়ের জন্য কম তা খুলনা বুঝিয়ে দিয়েছে। মুশফিক আরও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। তাতে মালিকের নৈপুণ্যে ভাটা পড়ে যায়। আফসোস! ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে যান। তবে মুশফিকের ৯৬ রানের সঙ্গে রাইলি রুশোর ৪২ রানে ৫ উইকেটে ১৯.৪ ওভারে ১৯২ রান করে জিতে খুলনা। এবার লীগের সর্বোচ্চ রান করেই জিতে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে যদি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স না জিতে তাহলে খুলনা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকবে। আর চট্টগ্রাম যদি সিলেট রয়্যালসের সঙ্গে জিতে তাহলে পয়েন্ট তালিকায় চট্টগ্রাম প্রথম, খুলনা দ্বিতীয় ও রাজশাহী তৃতীয় স্থানে থাকবে। শুরুতে রাজশাহী বিপদে পড়ে। ২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ৬৬ রানে গিয়ে তিন উইকেট হারায়। এরপরই মালিক ও বোপারা মিলে বড় জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙ্গতেই শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ততক্ষণে দলের রান ১৭২ হয়ে যায়। মালিক এমন সময়ে ৫০ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৭ রান করে আউট হন। শেষ পর্যন্ত আন্দ্রে রাসেলকে (১৩*) নিয়ে বোপারা ২০ ওভার শেষ করেন। ১৮৯ রান যখন করে ফেলে রাজশাহী তখন খুলনার হারের সম্ভাবনা জাগে। কিন্তু মুশফিক যে এদিন বিপিএলে নিজের সেরা ইনিংসটি খেলবেন তা কে জানত। এত বড় টার্গেট। ২৫ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপদেও পড়ে খুলনা। কিন্তু এরপর মুশফিক যে হাল ধরে দলকেই জিতিয়ে দেন। তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশোকে ৭২ রানের জুটি গড়েন। দলের ৯৭ রানে যখন রুশো আউট হয়ে যান তখন শামসুর রহমান শুভ ব্যাট হাতে নামেন। শুভকে নিয়েও এগিয়ে যান মুশফিক। একদিকে শুভ উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন। আরেকদিকে মুশফিক মারমুখী হয়ে খেলতে থাকেন। স্কোরবোর্ডে দ্রুত রান তুলতে থাকেন। ৩০ বলেই ৫০ রান করে ফেলেন মুশফিক। এক মুশফিককে আটকাতেই ঘাম ঝরে রাজশাহী বোলারদের। এক এক করে আট বোলার বোলিং করেন। কিন্তু মুশফিককে কোনভাবেই আটকানো যায়নি। শুভকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। দলের ১৫৮ রানে শুভ (২৯) যখন আউট হন তখন একটু চাপে পড়ে খুলনা। কিন্তু মুশফিক অবিচল থাকেন। তিনি নিজের ঝলকানি দেখাতেই থাকেন। এবার রবি ফ্রাইলিঙ্ককে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে ফ্রাইলিঙ্কের সঙ্গেও ৩০ রানের জুটি গড়েন। দলের জিততে যখন ৪ বলে ২ রান দরকার, নিজের সেঞ্চুরি হতে ৪ রান দরকার, তখন বোপারার ছোড়া ফুলটস বলটিতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েই ক্যাচ আউট হয়ে যান মুশফিক। জিততে প্রয়োজন ২ রান। বাউন্ডারি মারা ছাড়া বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিটি কোনভাবে পাবেন না মুশফিক। আর তাই সেই চেষ্টাই করেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। দলের ১৮৮ রানে গিয়ে আউট হয়ে যান। তবে ফ্রাইলিঙ্ক (১৪*) আর অপেক্ষায় থাকেননি। তিনি বাউন্ডারি হাঁকিয়েই ম্যাচে জয় তুলে আনেন। অনেক বড় স্কোর ছিল। কিন্তু মুশফিক সেই স্কোরকে ছোট্ট করে তোলেন। ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখান। তার ব্যাটিং ঝড়ে রাজশাহীকেও আটকালো খুলনা। স্কোর ॥ খুলনা টাইগার্স-রাজশাহী রয়্যালস ম্যাচ- চট্টগ্রাম টস ॥ খুলনা টাইগার্স (ফিল্ডিং)। রাজশাহী রয়্যালস ইনিংস- ১৮৯/৪; ২০ ওভার; লিটন ১৯, জাজাই ১, আফিফ ১৯, মালিক ৮৭, বোপারা ৪০*, রাসেল ১৩*; আমির ২/৩৬। খুলনা টাইগার্স ইনিংস- ১৯২/৫; ১৯.৪ ওভার; শান্ত ০, গুরবাজ ৭, রুশো ৪২, মুশফিক ৯৬, শামসুর ২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১৪*, শহিদুল ০*; রাসেল ২/৪১। ফল ॥ খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মুশফিকুর রহিম (খুলনা টাইগার্স)।
×