ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তারুণ্যের হৃদয়ে বিজয়ের সুবাস

প্রকাশিত: ১২:৩৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

তারুণ্যের হৃদয়ে বিজয়ের সুবাস

আমি বলব এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দেশ উপরে থাকবে। কোন শোষণ, বঞ্চনা থাকবে না। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সর্বোচ্চ সম্মানের জায়গায় থাকবে। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করবে। শান্তি সমৃদ্ধির এক অন্যরকম বাংলাদেশ হবে। নানা কারণে ৪৯ বছরেও আমরা কাক্সিক্ষত অর্জনে পৌঁছাতে পারিনি। তবে আশার বাণী হচ্ছে আমরা এগোচ্ছি, বসে নেই। যেই রাজাকারদের গাড়িতে দেশের পতাকা উড়ত তাদের বিচার হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা স্বীকৃতি পাচ্ছেন, জ্ঞান, বিজ্ঞানে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অর্থনীতির চাকা ভাল গতিতে ঘুরছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলো উন্নত হচ্ছে। দারিদ্র্য, অশিক্ষার হার কমছে। হাজারো সমস্যায় জর্জরিত দেশে এগুলো ইতিবাচক পরিবর্তন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা এখনও স্বীকৃতি পান নি। দেশে কর্মসংস্থানের উন্নতি হচ্ছে, মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে কিন্তু এখনও মেধাপাচার কমছে না। নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হলেও মাঝে মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। তবে দেশটাতো আমারই, আমাদেরই। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাই কাজ করে গেলেই আমরা আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ পাব। মাহজিব হোসেন ইমন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটের আলোকে অবশ্যই একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম। এমন একটা দেশ হবে যেখানে থাকবে আত্মনির্ভরশীল জাতি, দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ, মানুষের সঙ্গে মানুষের সীমাহীন বৈষম্য যেখানে কমে আসবে এবং গণমানুষের জীবন জীবিকার উন্নয়ন ঘটবে। দুঃখের বিষয় বিজয়ের ৪৯ বছরেও আমরা পূর্ণভাবে পৌঁছাতে পারিনি বিজয়ের কাক্সিক্ষত চেতনায়। তবে আশার বাণী হচ্ছে আমরা সব কিছুকে পেছনে ঠেলে সামনে আগাচ্ছি। আমার দেশ আগাচ্ছে। শিক্ষার হার বাড়ছে। দারিদ্রতার হার কমছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির যথাযথ বিচার হচ্ছে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও আমার বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে একটি রোল মডেল। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা সফল। এত সব ইতিবাচক পরিবর্তনের পরেও দুর্নীতি এ বৈষম্য দেশটাকে শ্লথ করে দিচ্ছে। ‘দেশের দুর্নীতি শূন্যের স্তরে নেমে যাবে’- সেই স্বপ্নে আমরা এখনও বিভোর। এমন একটা বাংলাদেশ হবে যেখানে একজনও হতদরিদ্র মানুষ থাকবে না। সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদের পুরোপুরি সলিল সমাধি হবে এদেশ থেকে। সবশেষে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে, আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হাতে হাত রেখে আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এএসএম অনীক হাসান স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ কিছু স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে জীবনবাজি রেখে স্বাধীনতার সোপান উন্মোচিত করেছিলেন মহান মুক্তিযোদ্ধারা। তারা চেয়েছিলেন দেশ হবে শান্তিপূর্ণ। যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ নির্ভয়ে পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে। আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন সবাইকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। যে যার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবে। মুক্তিযোদ্ধারা পাবে তাদের যথাযথ স্বীকৃতি। এখনও আমরা তাদের স্বপ্ন পুরোপুরিভাবে পূরণ করতে পারিনি। নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও বাংলাদেশ গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম হচ্ছে একটা গুপ্তধন। সবচেয়ে বড় সম্পদ। তরুণরাই পারে দেশকে বদলে দিতে। এরা দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তাই তাদের বেশি বেশি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে হবে এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার প্রেরণা জোগাতে হবে। কারণ তারাই দেশকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে রাজনীতি থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, শিক্ষা, কৃষি, প্রতিরক্ষা, সাহিত্য, ব্যবসা, ব্যাংকিং, আন্তর্জাতিক, অর্থনীতি প্রতিটি শাখায় দুর্দান্তভাবে কঠোর পরিশ্র্রম করবে। আর এইভাবেই এগিয়ে যাক আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ ফারহা সুলতানা চৌধুরী ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ কথায় আছে স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। দীর্ঘ ৪৯ বছরে পাওয়ার ছিল অনেক কিছু, কিন্তু লক্ষ্যের সবটুকু অর্জন করতে পারিনি আমরা। অনেকটুকু পথ পাড়ি দেয়া বাকি এখনও। একজন তরুণ বাংলাদেশী হিসেবে আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের বাংলাদেশ সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ হয়ে উঠুক যার স্বপ্ন আমাদের জাতির কারিগর আমাদের দেখিয়েছিলেন। যেই বাংলাদেশে ইতিবাচক সব সূচক থাকবে উপরে আর নেতিবাচক সূচকে থাকে নিচে। দারিদ্র্য দূর হয়েছে; সময় এখন শুধু বাঁচার নয়, ভালভাবে বাঁচার। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থেকে এবার খাদ্য নিরাপত্তায় সুপার পাওয়ার হওয়ার। মুঘল সাম্রাজ্যের সব থেকে ধনী প্রদেশ ছিল আমাদের এই বাংলা। পূর্ব পুরুষরা একটা সমৃদ্ধ দেশ গড়তে পেরেছিলেন, আমরাও পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। সততা, শিক্ষায় আর সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক আমাদের বাংলাদেশ। পরবর্তী প্রজন্মকে বলার মতো একটা উন্নতির গল্প চাই। সেই গল্পের লেখক তো আমরাই। নুসরাত শবনম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭১ এর পেক্ষাপটে নিঃসন্দেহে একটা সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। সদ্য জন্ম দেশে তার অভিভাবক না হারালে আর রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে আজ গল্পটা অন্যরকম হতে পারত। তারপর আমরা এগিয়ে চলেছি। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমার প্রত্যাশা সুন্দর এবং সমৃদ্ধির সেই গতিটা আরও বেড়ে উঠুক। আমি দেশ থেকে কি পেয়েছির বদলে ভাবনা হয়ে উঠুক আমি দেশকে কি দিয়েছি। রাস্তা-ড্রেনে ময়লা না ফেলা, ওভারব্রিজ থাকলে সেখান দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার মতো ছোট ছোট পরিবর্তনও দেশকে বদলে দিতে পারে বা দেশকে কিছু দিতে পারে। পরিবর্তনের শুরুটা না হয় আমরা নিজেরাই করি। মোস্তফা সাজ্জাদ পিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাবা-মার কাছে শোনা, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তারা সবেমাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছিলেন। ২ নবেম্বর আমাদের গ্রামে পাকিস্তানীরা হত্যাকাণ্ড চালায়। জমিদার, অধ্যক্ষ, ডাক্তার, সাধারণ মানুষ- কেউ বাদ যায়নি। ছোটবেলা থেকে এসব নির্মম কাহিনী, জাতির পিতার রক্তে আগুন জ্বালানো ভাষণ, দেশাত্মবোধক গানগুলো মনে গাঁথা। স্কুলে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে ভাবতাম, স্বাধীন সুন্দর এই দেশটা আরও সুন্দর হবে। ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে সহাবস্থান করব। দারিদ্র্য, দুর্নীতি, আয়ের অসমতা, বেকারত্ব মোকাবেলা করে বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বাংলাদেশ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বলতে পারি, আমার স্বপ্নের চেয়েও অনেক বেশি উন্নত হয়েছে দেশ বহু দিকে। তবু যখন রোজকার খবরে দুর্নীতি, ধর্ষণ, হানাহানি প্রভৃতি নেতিবাচক ঘটনাগুলো দেখি তখন মুষঢ়ে যাই। সরকার কঠোর হস্তে এসব দমন করুক। নীতি- নৈতিকতা সম্বলিত নাগরিক গোষ্ঠী হয়ে উঠতে হবে আমাদের। নয়ত জাতির পিতা আর শহীদদের স্বপ্নের সোনার বাংলা শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। উলফাত আরা বৃষ্টি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
×