ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা-রাজশাহী ম্যাচ দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু আজ

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

খুলনা-রাজশাহী ম্যাচ দিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শুরু আজ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হচ্ছে আজ। চারদিনে ৮ ম্যাচ হয়েছে ঢাকার প্রথম ধাপে। এবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ৮ দিনের ৬দিন হবে ম্যাচ। খেলা হবে ১২ ম্যাচ। সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথমদিনই স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স মাঠে নামবে। এবার দারুণ শুরু হয়েছে তাদের এবং উজ্জীবিত হয়েই নিজেদের মাঠে নামতে পারবে। ৩ ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিয়েছে তারা। প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে কোণঠাসা সিলেট থান্ডারের। সিলেট হ্যাটট্রিক পরাজয় দেখে শুরু করবে চট্টগ্রাম পর্ব। তবে এই ম্যাচটি আজ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে মাঠে গড়াবে। এর আগে চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে ঢাকাপর্বে দুই অপরাজিত দল খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস। খুলনা একটি ম্যাচ খেললেও, রাজশাহী ২ ম্যাচ খেলে শতভাগ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। বেলা ১টা ৩০ মিনিটে হওয়া এই ম্যাচে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ নেবে যে কোন একটি দল। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শুরুতেই ব্যাট-বলের লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। ঢাকা পর্বে ছোটখাট কিছু অসঙ্গতি থাকলেও এবার প্রথম থেকেই ময়দানী লড়াইটা ছিল দারুণ। দুয়েকটি দল ব্যাটিং ব্যর্থতায় ধসে পড়লেও প্রায় সব ম্যাচেই বেশ রান উঠেছে। ব্যাটে-বলে দেশী ক্রিকেটাররাই সেরা পারফর্মার ঢাকা পর্বের ৮ ম্যাচ শেষে। এবার চট্টগ্রামে তা ধরে রাখার পালা। ঢাকায় রাজশাহী রয়্যালস ছিল একেবারেই অপ্রতিরোধ্য। প্রথম ম্যাচে তারা ঢাকা প্লাটুনকে ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেটকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল বোলিং করার সুযোগ পেলেও সে দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামারই ফুরসত পাননি। দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে দুরন্ত ছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার লিটন কুমার দাস। আফগানিস্তানের তারকা হজরতুল্লাজ জাজাইও একটি ভাল ইনিংস খেলেছেন। তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুবও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। অভিজ্ঞ ইংলিশ অলরাউন্ডার রবি বোপারা দুর্দান্ত ফিল্ডিং ও বোলিং পারফর্মেন্সে ম্যাচসেরা হয়েছেন ঢাকার বিপক্ষে। দুই ম্যাচেই রাজশাহীর বোলাররাই মূলত দুর্দান্ত বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের সাহস জুগিয়েছেন। লেগস্পিন অলরাউন্ডার অলক কাপালী, পেস অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা ও বোপারা দারুণ বোলিং করেছেন। শতভাগ জয় ধরে রাখার মিশনে তারা নামবে খুলনার বিপক্ষে। খুলনা মাত্র একটাই ম্যাচ খেলেছে। দুরন্ত চট্টগ্রামকে তারা ৮ উইকেটে হারিয়ে শক্তিমত্তার প্রমাণ দিয়েছে। দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে সেই একটি জয় তুলে নেয়ার পর চট্টগ্রাম পর্বের জন্য প্রস্তুত হতে সবচেয়ে বেশি সময় পেয়েছে তারা। দলটিতে গত আসরে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ৫ অর্ধশতক ও ১ সেঞ্চুরি আদায় করা দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো আছেন। আরেক প্রোটিয়া অলরাউন্ডার রবি ফ্রাইলিঙ্কও আছেন। বোলিং শক্তি বাড়িয়েছে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির ও দেশের উদীয়মান লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজও আছেন। তবে আজ দ্বিতীয় পরীক্ষায় নামার পর বোঝা যাবে খুলনার শক্তির গভীরতা কতখানি। ঢাকা পর্বে জয় দিয়ে শুরু করেছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু খুলনার কাছে হেরে যায়। পরে আবার জয়ের ধারায় ফিরেছে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে। দুই ম্যাচেই বড় রান তাড়া করে জিতেছে তারা। অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েস রানের মধ্যে আছেন এবং ঢাকা পর্ব শেষে ব্যাটসম্যানদের পারফর্মেন্সে সবার ওপরে। ব্যাট হাতে উইন্ডিজ তারকা চ্যাডউইক ওয়ালটনও সতীর্থ ইমরুলের সমান ১১৭ রান করেছেন ইতোমধ্যে। তাছাড়া আভিস্কা ফার্নান্দোও বেশ ভাল খেলছেন। রুবেল হোসেন, কেসরিক উইলিয়ামসরা বোলিংয়ে ছন্দ ফিরে পেলে তাদের ঠেকানো কঠিন হবে যে কোন দলের জন্য। নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দুই ম্যাচ না খেললেও শেষটিতে ফিরে নেতৃত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এবার স্বাগতিক দর্শকদের বিপুল সমর্থন নিয়ে চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে চট্টগ্রাম। আর প্রথমদিনই তারা পাচ্ছে সিলেটকে যারা টানা ৩ ম্যাচ হেরে ইতোমধ্যেই কোণঠাসা। চট্টগ্রামের কাছে এবারের আসরে উদ্বোধনী ম্যাচেই ৫ উইকেটের পরাজয় দেখেছে সিলেট। সেই পরাজয় থেকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রাজশাহীর কাছে ৮ উইকেটে এবং ঢাকা প্লাটুনের কাছে ২৪ রানে হেরে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছে তারা। তবে মোহাম্মদ মিঠুন, জনসন চার্লস, নাজমুল ইসলাম অপু ও এবাদত হোসেনরা ভালই করেছেন ব্যাট ও বল হাতে। শুধু দলগতভাবে জ্বলে ওঠা বাকি। সেটা করতে পারলে চট্টগ্রাম পর্বে হয়তো আজ প্রথমদিন থেকেই নিজেদের ফিরে পাওয়ার পথ পাবে সিলেট।
×