ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

এবারের বিজয় দিবসের আগে-আগে একটি বিশেষ ঘটনা ঘটে গেল ঢাকায়। ঘৃণিত ও ফাঁসিতে মৃত এক রাজাকারকে (কাদের মোল্লা) ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ। সংবাদটি ছাপানোর জন্যে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের (সংগ্রাম) সম্পাদককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আদালত রিমান্ডও মঞ্জুর করেছেন। দেখা যাক এই ধৃষ্টতার নেপথ্যে গূঢ় কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ দ- পাওয়া কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ বলাটা অনেকের মতেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার দাবিও উঠছে। নিশ্চয়ই এ প্রজন্মের সন্তানদের মনে আছে প্রাথমিকভাবে ফাঁসির রায় না হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগের সময় দুই আঙুল উঁচিয়ে কাদের মোল্লার ভিক্টরি চিহ্ন দেখানোর দুঃসাহসের কথাটি। এতে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাতারাতি শাহবাগে স্থাপিত হয় গণজাগরণ মঞ্চ। তারপর রচিত হয় এক অভূতপূর্ব ইতিহাস। শেষ পর্যন্ত কসাই কাদেরের ফাঁসির রায় পাওয়া যায় এবং তা কার্যকর হয়। একাত্তরে যারা পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধেও সেসব বিরোধিতাকারী বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বেসামাল হয়ে পড়েন। পরাজয়ের বেদনা ও ক্ষোভ থেকে তারা উদ্ভট সব আচরণ করেন। ওই দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীকে শহীদ আখ্যা দিয়ে একাত্তরের শহীদদের অপমান করার অপকৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা, সেটিও বিচার্য। পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করে যারা মারা গেছে তাদেরকে স্বজাতিরা, অর্থাৎ পাকিস্তানীরা হয়তো শহীদই আখ্যা দেবে। কিন্তু যুদ্ধে বিজয়ী দেশে তাদের শহীদ বলার দুঃসাহস তারা দেখায় কিভাবে? এর সুরাহা হতেই হবে। রবিবারে রাজাকারদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের পর চারদিকে তুমুল আলোচনা চলছে। চেনাজানা কুখ্যাত কোন কোন বাংলাদেশবিরোধীর নাম সে তালিকায় দেখতে না পেয়ে স্বভাবতই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন অনেকেই। এই তালিকা কেবলমাত্র থানায় যে রাজাকারদের নাম লিপিবদ্ধ ছিল তাদের। থানা ছাড়াও তৎকালীন এসডিও এবং ডিসি অফিসেও তাদের নাম লিপিবদ্ধ ছিল যা ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। রাজাকারের তালিকা করা মাত্র শুরু হলো, শুদ্ধ এবং নির্ভুল তালিকা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত এ কাজ অব্যাহত থাকবে। একটি জানোয়ারের নামও যেন ভুলক্রমে সে তালিকা থেকে ছিটকে না পড়ে সেদিকে নিশ্চয়ই দেশবাসীর সজাগ দৃষ্টি থাকবে। পিছু ছাড়বে না আগুন আগুনকে আমন্ত্রণ জানালে, তার জন্য পরিবেশ তৈরি রাখলে কেন পিছু ছাড়বে আগুন? কয়েকটি দিন আগে কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লেগে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে; অনেকেই মৃত্যুশয্যায়। এ ধরনের ঘটনাকে আর দুর্ঘটনা বলতে মন চায় না। বলা যায় অনিবার্য ঘটনা। গত বছরও প্রতি মাসেই পুরনো ঢাকার কোন না কোন প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগার রেকর্ড রয়েছে। এগুলো আর কত ঘটবে? কত মানুষ মারা গেলে এসব বন্ধ করা সম্ভব হবে? দেশে ভয়ানক আকারে বেড়ে চলেছে অগ্নিদুর্ঘটনা। সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিনিয়তই ঘটে যাওয়া নানা দুর্ঘটনা আগের বছরের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গত দুই যুগে অগ্নিদুর্ঘটনার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের তথ্যমতে, শুধু চলতি বছরের প্রথম এগারো মাসে সারাদেশে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে ২২ হাজারেরও বেশি। হিসাব অনুযায়ী যা গত ২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এসব অগ্নিদুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ২শ’ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। যা একটি সভ্য দেশে কোনক্রমেই কাম্য নয়। রাজধানীর লালবাগ ফায়ার স্টেশন গত এক বছরে যতগুলো আগুন নিভিয়েছে, তার ৭৪ শতাংশই ছিল প্লাস্টিকের কারখানা, গুদাম ও দোকানের। বিজয় দিবস পেরিয়ে বিজয় দিবসটিকে রাজধানীবাসী বেশ ক’বছর হলো বিশেষ উৎসবের দিনে পরিণত করেছে। পহেলা বৈশাখে যেমন অল্পবয়সীদের উচ্ছল ঘোরাঘুরি লক্ষ্য করা যায়, ষোলোই ডিসেম্বরেও তেমনটি ঘটছে। বিশেষ পোশাকও বেছে নিচ্ছে তারা। শীতকে উপেক্ষা করে ছেলেরা পাঞ্জাবি আর মেয়েরা শাড়ি পরছে। লাল-সবুজে ডিজাইনকৃত পোশাক যদি নাও হয় তাহলেও তরুণ-তরুণীরা পোশাকে লাল ও সবুজের ছোঁয়া রাখছে। এটি একইসঙ্গে দেশপ্রেম ও সচেতনতা প্রকাশকারী। বেশ একটা প্রাণময় উৎসবের দিনই বানিয়ে ফেলেছে তারা বিজয় দিবসকে। ছুটির দিন হওয়ায় তাদের এই সানন্দ স্বচ্ছন্দ চলাচল অন্যদের মনেও আনন্দের আভা ছড়িয়ে দেয়। তবে কথা হচ্ছে আনন্দটাই সব নয়, আনন্দের পাশে কিছু কষ্ট সহ্য করার মানসিকতাও থাকা চাই। কষ্ট করে দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। যারা তাদের এই আনন্দের উপলক্ষ নিয়ে এসেছেন সেই দেশপ্রেমিকদের জন্য কিছু ত্যাগ স্বীকারের প্রতিজ্ঞা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে এই দেশটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যারা কাজ করে চলেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, সমাজের অসহায় অপারগ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সামান্য হলেও উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই না আনন্দ পুরোপুরি সুখ বয়ে আনবে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিত্তহীন কোন মানুষের জন্য একখানা শীতবস্ত্র কিনে তাকে উপহার দেয়ার ব্যবস্থা নিন, সেই সঙ্গে কাছের বন্ধুটিকেও একই কাজ করার জন্য উৎসাহিত করুন- তাহলে বিজয় দিবসের আনন্দে নিশ্চয়ই ভিন্ন মাত্রা যোগ হবে। সেক্ষেত্রে ‘স্বার্থপর’ আনন্দ হয়তোবা ভিন্নতর সুখের সন্ধান পাবে। বিজয় দিবসের দুদিন আগেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যার দিন। শোকের দিন, রাজাকার আলবদরদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের দিন। সেদিন ঢাকায় বাহারি আলোকসজ্জা কি স্বাভাবিক? ১৫ তারিখে উৎসবের রঙে সাজানো যায় শহরটাকে। তার আগে হলে একটু বিসদৃশই লাগে। বুদ্ধিজীবী দিবসে নানা সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালইে জ্ঞান বিলিয়েছেন মুনীর চৌধুরী, গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, রাশিদুল হাসানসহ আরও কত গুণীজন। যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন জন্মভূমিকে স্বাধীন করতে। তাঁদের স্মরণের এই বেদনাবিধূর দিনে আর যেন কখনও এই উচ্চবিদ্যাপীঠে উৎসবের লালনীল আলো না থাকে। গতবারের বিজয় দিবসের সকালে অফিসের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগে যে এলাকায় বসবাস করি (উত্তরা) সেখানকার ‘উৎসব সকালের পরিবেশ’ দেখার জন্য বেশ কিছুক্ষণ এ সড়ক সে গলিতে ঘোরাঘুরি করেছিলাম। প্রতিটি বিজয় দিবসেই এমন ঘুরে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের বৈশিষ্ট্য অনুধাবনের চেষ্টা করি। তার আগে বলে রাখা দরকার গত বছর বিজয় দিবসের আগে সরকারী ছুটি দুদিন পড়ায় বহু ঢাকাবাসী মোট তিন দিনের ছুটিকে ঢাকার বাইরে বেড়ানোর কাজেই ব্যয় করেছেন। অনেকেই চলে গিয়েছিলেন দেশের বাড়ি। অনেকে চা বাগান, সমুদ্র সৈকত বা পাহাড়ী অঞ্চলে অবকাশ যাপনে যান। এমনিতেই ডিসেম্বরে স্কুল-শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় তারা কিছু দিনের ছুটি পায়। অভিভাবকরা এই ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে নিজেদের ছুটির পরিকল্পনা করেন। তারপর ঢাকা ছাড়েন। ফলে সঙ্গত কারণেই বিজয় দিবসের সময়টাতে ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা থাকে। গতবছর বিজয় দিবসে একটু বেশি ফাঁকাই মনে হয়েছিল। এবার কি ততটা ফাঁকা ছিল ঢাকা? একথা অস্বীকার করব না যে দুটি সেক্টরের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই দেখলাম। সেগুলোর সামনেও জাতীয় পতাকা প্রদর্শিত হচ্ছে না। তবে বিজয় দিবসের আগের দিন বিজয় উৎসব হয়েছে এ দুটি স্কুলে। একুশে ফেব্রুয়ারি ও ষোলোই ডিসেম্বর- এ দুটি দিন দু’ঘণ্টার জন্য হলেও প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন খোলা রাখা চাই। সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠান রাখা চাই। তা না হলে দিবসের মর্যাদা এবং জাতির ইতিহাস-সংস্কৃতির সঙ্গে শিশু-কিশোরদের সংযুক্তি ঘটবে কিভাবে? বিজয় দিবসে যারা পরাজিত পক্ষ ছিল তারা নিজেদের লুকিয়ে রাখবে এই দিনে। যারা বিজয়ী তারা সগৌরবে নিজেদের উপস্থিতির জানান দেবে, আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করবে- এটাই তো স্বাভাবিক। গান, কবিতা ও নাটক উৎসবের উপাদান হলেও নানা কথামালায় মুখরিত হয়ে থাকে বিজয় উৎসব। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শত্রুপক্ষ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে মাতৃভূমিকে দখলমুক্ত করার গভীর তৃপ্তি ও আনন্দ থেকে উৎসারিত হয় এ উৎসব। যদিও উৎসবের নেপথ্যে থাকে স্বজন হারানোর বেদনা ও ব্যাপক ক্ষতির ক্ষত। দুঃখ-শোক-ক্ষোভ ও যন্ত্রণা উজিয়ে কখনও কখনও উপচে পড়ে বিজয়গৌরবের সুখ। ঢাকার প্রতিটি অঞ্চলে, পাড়া-মহল্লায় বিজয় দিবসকে ঘিরে আয়োজিত হয় আলোচনা সভা ও আনন্দোৎসব। এসব আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, আজকের নবীন প্রজন্ম এ থেকে পূর্বপুরুষদের গৌরবগাথা ও অর্জন সম্বন্ধে প্রত্যক্ষভাবে জানতে পারে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য স্বদেশের বিপুল ত্যাগ স্বীকার সম্পর্কেও ধারণা লাভ করে। বিশেষ করে একাত্তরের কোন যোদ্ধা স্বয়ং যখন স্মৃতিচারণ করেন তখন সেই কথকতা থেকে তরুণরা পেয়ে যায় সত্যের শাঁস এবং কান্নার ভেতরে লুকানো পান্না। প্রতিবছরই বিজয় উৎসব নতুন নতুন উদ্দীপনা ও অঙ্গীকার নিয়ে উপস্থিত হয়। কবিতার জগতে আমরা অনেকেই বিচরণ করি। বাংলাদেশ কবি ও কবিতারই দেশ- এমন কথা বলতেও আমাদের ভাল লাগে। সমকালীন কবি এবং কবিতা নিয়ে নানা সময়ে নানা অভিযোগ উত্থাপিত হলেও বাঙালীর মন আজও কবিতাকাতর। সম্ভবত চিরকালই বাঙালী কবিতা ভালবাসবে। বিজয় দিবসের মতো একটি আনন্দঘন তাৎপর্যময় দিবসে সর্বত্রই আমরা কবিতারই জয়জয়কার প্রত্যক্ষ করি। বেতার টেলিভিশনে দিনভর নানা অনুষ্ঠানে কবিতার সংযোজন থাকে অর্থপূর্ণভাবে। ঢাকার বিভিন্ন মঞ্চে, বিদ্যাপীঠে যত আয়োজন হয়ে থাকে, সাভারের স্মৃতিসৌধ থেকে শুরু করে টিএসসিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে শহীদদের স্মরণে ও বিজয়োৎসব উদযাপনে যত আনুষ্ঠানিকতা থাকে, তার প্রতিটিতেই কবিতার চরণ উদ্ধৃত হয়। বিজয় দিবসে সব সংবাদপত্রের বিশেষ সাময়িকীতে বা ক্রোড়পত্রে পুরো পাতাভর্তি অথবা একগুচ্ছ কবিতার প্রকাশ আমাদের ঐতিহ্যেরই অংশ। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে যে ক্রোড়পত্রটি স্পন্সর করা হয় বিভিন্ন দৈনিকে, তাতে আমরা কবিতার উজ্জ্বল উপস্থিতি লক্ষ্য করি। এভাবেই আমাদের পাঠকরা অভ্যস্ত। অথচ ক্ষোভ ও পরিতাপের বিষয় বিগত কয়েক বছর ধরে এ নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে চলেছে বেশ কিছু প্রথম সারির সংবাদপত্র। এই কলামে একথা লিখেছিলাম গত বছর। এবার পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি ঘটছে। বিজয় দিবসের বিশেষ সাময়িকীতে এক পৃষ্ঠা বা আধা পাতা কবিতা মুদ্রিত হচ্ছে রঙিন সচিত্রকরণসহ পাঠকপ্রিয় কয়েকটি কাগজে। তাঁরাও গাইলেন বাংলা গান আশা ভোঁসলের মতো উপমহাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী আগেও বাংলা গান গেয়েছেন, এমনকি রবীন্দ্রসঙ্গীতও। কিন্তু হরিহরণ, আদনান সামি বা রাহাত ফতেহ আলী খানের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীরা বাংলা গানে কণ্ঠ দেননি। বিজয় দিবসের আগে-আগে এদের সবার কণ্ঠেই নতুন বাংলা গান অবমুক্ত হলো এই ঢাকাতেই। খুলেই বলি। আয়োজনটি ছিল র‌্যাডিসনে, সিটি ব্যাংক ও আমেরিকান এক্সপ্রেসের যৌথ উদ্যোগের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর। এ উপলক্ষেই ব্যাংকটির অর্থায়নে দেশবরেণ্য শিল্পী রুনা লায়লার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে তারই সুরে লেজেন্ডস ফরএভার ভিডিও এ্যালবাম নির্মিত হয়েছে। এর পাঁচটি গানের শিল্পীরা হলেন আশা ভোঁসলে, রুনা লায়লা, হরিহরণ, আদনান সামী ও রাহাত ফতেহ আলী খান। মঞ্চে যখন হরিহরণ গাইতে আসেন তখন কিছুটা রাত হয়ে গেছে। তবে কেউই হলো ছেড়ে যাচ্ছেন না। নব্বুইয়ের দ্বিতীয়ার্ধে এই শিল্পীর গানের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকি। আমরা তখন একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অবশ্য তখনও কোন নাটক বা সিনেমা নির্মাণ শুরু করেননি ফারুকি। কলোনিয়াল কাজিনস ব্যান্ডের দুই শিল্পীই দারুণ গুণী। এদের একজন হরিহরণ বলিউডের রোজা সিনেমার জন্য এ আর রহমানের সুর করা গান গাইবার পরই গোটা উপমহাদেশেই তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। রোজা সিনেমার গানও তিনি শোনালেন ঢাকার দর্শকদের। বলা দরকার, বিশিষ্ট অনুবাদক ও কথাসাহিত্যিক মাসরুর আরেফিন সিটি ব্যাংকের এমডি-র দায়িত্ব নেন বছরের শুরুতে। গত এক বছরে তার নেতৃত্বে একাধিক আন্তর্জাতিক গৌরব অর্জন করেছে ব্যাংকটি, সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতিও চলমান। কার্ড সেবায় (অ্যামেক্স) চলে এসেছে সবার ওপরে। গানসহ শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায়ও এসেছে নতুন মাত্রা। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ [email protected]
×